জওয়ানের দেহ ফিরছে মেচেদায়

ভোটের নিরাপত্তাকর্মী হিসাবে টহল দিতে গিয়ে চোখের সামনে বোমা বিস্ফোরণ দেখে আরও অনেক সতীর্থ জওয়ানের মতোই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বছর তেইশের সৌমেন দাস। গত ২৫ নভেম্বর ঝাড়খণ্ডে প্রথম দফার নির্বাচনের আগের দিনের ওই দুর্ঘটনা এবং তার জেরে অসুস্থতায় যে সকলের আদরের ভোলা-র (সৌমেনের ডাক নাম) মৃত্যু হবে, তা কল্পনাও করেননি বন্ধু-পরিজনেরা।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:০১
Share:

নিহত সৌমেন দাস। —নিজস্ব চিত্র।

ভোটের নিরাপত্তাকর্মী হিসাবে টহল দিতে গিয়ে চোখের সামনে বোমা বিস্ফোরণ দেখে আরও অনেক সতীর্থ জওয়ানের মতোই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বছর তেইশের সৌমেন দাস। গত ২৫ নভেম্বর ঝাড়খণ্ডে প্রথম দফার নির্বাচনের আগের দিনের ওই দুর্ঘটনা এবং তার জেরে অসুস্থতায় যে সকলের আদরের ভোলা-র (সৌমেনের ডাক নাম) মৃত্যু হবে, তা কল্পনাও করেননি বন্ধু-পরিজনেরা।

Advertisement

রবিবার রাতে ছেলের মৃত্যুর মর্মান্তিক খবর সোমবার সকালে মেচেদার শান্তিপুর গ্রামের বাড়িতে ফোনে জানান উত্তমবাবু। তিনি পেশায় বিদ্যুৎ দফতরের কর্মী। অসুস্থতার খবর পেয়ে আত্মীয়-প্রতিবেশীদের সঙ্গে পটনা মেডিক্যাল কলেজে গিয়েছিলেন উত্তমবাবু। পরিবার সূত্রে খবর, অসুস্থ হওয়ার পর দিন সাতেক স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা হয়েছিল সৌমেনের। তারপর গত ১ ডিসেম্বর থেকে বিহারের পটনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন সৌমেন। রবিবার সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

মাত্র দেড় বছর আগে ইন্দো-তিব্বত বর্ডার পুলিশে যোগ দেওয়া সৌমেনের মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ এলাকাবাসী। হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক ধরে শান্তিপুর গ্রামের মধ্যপল্লিতে সৌমেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল স্থানীয়েরা বাড়িতে ভিড় করেছেন। ছেলের মৃত্যুতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন মা নীলিমাদেবী। ভেঙে পড়েছেন বোন বর্ণালীও। গত বছরে বিয়ে হয়েছে তাঁর। বর্ণালীর কথায়, “দাদা অসুস্থ জানতাম। কিন্তু দাদা যে মারা যাবে ভাবতে পারছি না।”

Advertisement

সৌমেনের সহপাঠী প্রসেনজিৎ ডোগরা বলেন, “ছোটবেলা থেকেই সৌমেন পড়াশোনার সঙ্গে খেলাধুলো করত। পাঁশকুড়া কলেজ থেকে পাশ করেই চাকরি পায়। এ বছর দুর্গাপুজোয় বাড়ি এসেছিল। ফোনে নিয়মিত বাবা-মার সঙ্গে কথাও বলত।” ছেলেবেলার এই বন্ধু জানান, ঝাড়খণ্ডে ভোটের টহল দেওয়ার সময় চোখের সামনে বিস্ফোরণ দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছিল সৌমেন। পরে পটনা মেডিক্যালে ভতির্র খবর পাই।

পটনায় গিয়েছিলেন প্রসেনজিৎও। ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, “গিয়ে দেখি সৌমেন সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি। কথা বলার অবস্থায় ছিল না ও।” আহত সৌমেনের ভাল মতো চিকিৎসা হয়নি, অভিযোগ প্রসেনজিতের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন