তমলুক জেলা হাসপাতালে নবকুমার প্রামাণিক। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।
খড়্গপুর থেকে হাওড়াগামী চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে গুরুতর জখম হলেন এক যুবক। বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়গপুর শাখার মেচেদা ও ভোগপুর স্টেশনের মাঝে নন্দাইগাজন স্টেশনের ঘটনা। জখম নবকুমার প্রামাণিক নামে বছর একুশের ওই যুবককে রেল পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে স্থানীয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করেন।পরে তাঁকে তমলুক জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
কীভাবে ঘটল এমন দুর্ঘটনা? ওই যুবকের দাবি, বন্ধুরাই চলন্ত ট্রেন থেকে তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছেন। কিন্তু কেন? তার কোনও উত্তর দিতে পারেননি তিনি। এমনকী ওই যুবকের পরিবারের তরফেও কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। ফলে আহত ওই যুবকের এমন দাবি নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। পাঁশকুড়া জিআরপি থানার পুলিশ জানিয়েছে, প্লাটফর্মে পড়ে এক যুবক জখম হয়েছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
রেল পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নবকুমারের বাড়ি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার পাথরপ্রতিমা থানার রাক্ষসখালি গ্রামে। নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার পর ওই যুবক কাঠের আসবাব তৈরির কাজ শেখার জন্য বছর দু’য়েক আগে থাকতেন হাওড়ার শিবপুরে মাসির বাড়িতে। সেখানেই পূর্ব পরিচিত তিন যুবকের সঙ্গে তিনি ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরে কাঠের কাজ করতে গিয়েছিলেন। ঠিক কী ঘটেছিল বৃহস্পতিবার? হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে নবকুমার বলেন, “তিন সহকর্মীর সঙ্গে ট্রেনে চেপে হাওড়া আসছিলাম। হঠাৎই ওরা আমাকে ট্রেন থেকে ঠেলে ফেলে দেয়। আমার রোজগারের টাকাও আর আমার কাছে নেই।” অনেক মনে করে তিনি রাজু আর গোবিন্দ-এই দুই বন্ধুর নাম বলতে পেরেছেন। কিন্তু কেন তাঁর সঙ্গীরা তাঁকে ট্রেন থেকে ঠেলে ফেলে দিল? কিছুটা থমকে নবকুমারের উত্তর, “ওরা আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিল।” জখম নবকুমারের মাথায় বেশ কয়েকটা সেলাই পড়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নবকুমারের মাথায় ও কোমরে আঘাত লেগেছে। তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
দুর্ঘটনায় খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে এসেছিলেন নবকুমারের বাবা দুলাল প্রামাণিক। তিনি বলেন, “আমার ছেলে যদি ট্রেন থেকে পড়েও যায়, তাহলে ওই সঙ্গীরা কেন ওর খোঁজ করল না? আমার সন্দেহ আমার ছেলের রোজগারের টাকা নিয়ে ঝামেলার জেরে ওর বন্ধুরা এই কাণ্ড করেছে।” পুলিশে অভিযোগ জানাননি কেন? তাঁর উত্তর, “আগে ছেলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরুক। তারপর এ বিষয়ে চিন্তা করব।”