আইএনটিটিইউসির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে কারখানার মধ্যেই হাতাহাতিতে জড়াল শ্রমিক সংগঠনের দু’পক্ষ। একটি ব্যাটারি প্রস্তুতকারক সংস্থায় এই ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার সকাল এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত কারখানার কয়েক’টি ইউনিটে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
বাম-সহ বিরোধীদের অভিযোগ, এত দিন প্রতিটি সভায় তমলুকের সাংসদ পদপ্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী দাবি করতেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরে দলীয় শ্রমিক সংগঠনের তরফে হওয়া কোনও রকম গণ্ডগোলে কখনও কোনও কারখানার উৎপাদন ব্যহত হয়নি। হয়নি বিক্ষোভ, অবরোধও। যা আগে কারণে অকারণে প্রায়ই করত সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটু। কিন্ত, নির্বাচনের আগে এই ঘটনা অস্বস্তি বাড়াল শুভেন্দুর। আইএনটিটিইউসি সূত্রে খবর, শেষ পর্যন্ত শুভেন্দুর নির্দেশেই দু’পক্ষই নিজেদের বিরত করে। হলদিয়ার শ্রমিক নেতা মিলন মণ্ডল অবশ্য বলেন, “সংগঠনে কোনও গোষ্ঠী বিরোধ নেই।”
তৃণমূল সূত্রে খবর, ওই কারখানায় শ্রমিকদের সংগঠন আইএনটিটিইউসির মধ্যেই দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল রয়েছে। একদিকে রয়েছে সুরেশ করণ অনুগামীরা, অন্য দিকে রয়েছে সুকুমার সামন্তের গোষ্ঠী। তবে সুরেশ করণ সরাসরি আইএনটিটিইউসির সঙ্গে যুক্ত নন। তিনি ওই দ্বন্দ্বের কথা মেনেও নিয়েছেন। তিনি বলেন, “কারখানার বেশ কিছু শ্রমিক ৪৫ বছর কাজ করেও স্থায়ী হননি। সুকুমার সামন্তরা কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আঁতাত করে বঞ্চিত করছেন কিছু শ্রমিককে।”
তাঁর অভিযোগ, পুরানো শ্রমিকদের বসিয়ে রেখে নতুন শ্রমিক আনিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিকাশ মণ্ডল নামে এক শ্রমিককে এ দিন কারখানা থেকে বের করে দেওয়া হলে প্রতিবাদ করেন অন্য শ্রমিকরা। কারাখানার মধ্যেই তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। সুকুমার সামন্তের পাল্টা অভিযোগ, “বিকাশ মণ্ডল কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে লিফলেট বিলি করেছিলেন। তাই কর্তৃপক্ষ তাঁকে বের করে দেন।” তাঁর বিরুদ্ধে আনা সুরেশবাবুর অভিযোগ মানেননি সুকুমারবাবু। সুকুমারবাবুর দাবি, “কারখানা কর্তৃপক্ষের ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে আমিও করেছি। কিন্তু, শ্রমিক নেতা গোলোক দাস আমাকেই মারধর করে।” মারধরের অভিযোগ অবশ্য মানেননি গোলোক দাস। আর শুভেন্দু অধিকারীকে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি।