তৃণমূলের সন্ত্রাসের অভিযোগে শহরে মিছিল বিজেপির

সদর শহরে মিছিল করে দলের শক্তি বৃদ্ধিরই ইঙ্গিত দিল বিজেপি। দলের শহর কমিটির ডাকে বুধবার মেদিনীপুরে এক মিছিলের আয়োজন করা হয়। মিছিলে কর্মী- সমর্থকদের উপস্থিতি ছিল ভালই। বস্তুত, বিজেপির শহর কমিটির ডাকে এই প্রথম মেদিনীপুরে বড় মিছিল হল। এর আগে দলের জেলা কমিটির ডাকে শহরে মহামিছিল হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৪ ০০:০১
Share:

মেদিনীপুরে মিছিল বিজেপির। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

সদর শহরে মিছিল করে দলের শক্তি বৃদ্ধিরই ইঙ্গিত দিল বিজেপি। দলের শহর কমিটির ডাকে বুধবার মেদিনীপুরে এক মিছিলের আয়োজন করা হয়। মিছিলে কর্মী- সমর্থকদের উপস্থিতি ছিল ভালই। বস্তুত, বিজেপির শহর কমিটির ডাকে এই প্রথম মেদিনীপুরে বড় মিছিল হল। এর আগে দলের জেলা কমিটির ডাকে শহরে মহামিছিল হয়েছে। এ দিন সুভাষনগরে বিজেপির জেলা কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়। পরে তা এলআইসি মোড়, জেলা পরিষদ রোড, কলেজ মোড়, গোলকুয়াচক, বটতলাচক, কেরানিতলা, কালেক্টরেট মোড় প্রভৃতি এলাকা ঘুরে জেলা কার্যালয়ের সামনে পৌঁছেই শেষ হয়। নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপির শহর সভাপতি অরূপ দাস, যুব মোর্চার জেলা সভাপতি শুভজিৎ রায়, মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রী শম্পা পাল প্রমুখ।

Advertisement

পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় শক্তি বৃদ্ধি করতে শুরু করেছে বিজেপি। গেরুয়া- শিবিরের এই শক্তি বৃদ্ধি যে আগামী দিনে দলের কাছে বিপদ হতে পারে, তা মানছেন শাসক তৃণমূলের নেতারাও। দিন কয়েক আগে শহরেই এক কর্মিসভায় সতর্কবার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সুব্রত বক্সী। তিনি বলেছেন, “লোকসভা ভোটের আগে আত্মসন্তুষ্টি এমন জায়গায় পৌঁছেছিল যে আমাদের কেউ কেউ বোধহয় ভেবেছিল মানুষ গোলাম হয়ে গিয়েছে! এখনও অনেকে আত্মসন্তুষ্টি থেকে বেরোতে পারছে না। বিজেপির প্রভাব বাড়ছে, এটা উপলব্ধি করারই চেষ্টা করছে না। মনে রাখবেন, মানুষ দল থেকে বিমুখ হয়ে গেলে তখন চাওয়াও থাকবে না। পাওয়াও থাকবে না! শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেখিয়ে হবে না। নিজেকেই পরিবর্তন করতে হবে।” মূলত, তৃণমূলী সন্ত্রাসের প্রতিবাদেই বুধবার শহরে মিছিলের ডাক দেয় বিজেপির শহর কমিটি। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের লোকজন দলের কর্মী- সমর্থকদের উপর অত্যাচার করছে। পুলিশের কাছে সুবিচার মিলছে না। পাশাপাশি বর্ধমান বিস্ফোরণ কাণ্ড, মাখড়া কাণ্ড নিয়েও মিছিল থেকে সরব হন বিজেপি নেতৃত্ব।

দলের এক সূত্রে অবশ্য খবর, আগামী বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে এখন থেকেই সংগঠনের দিকে বিশেষ নজর দিতে চাইছে বিজেপি। কর্মীদের আন্দোলনের ময়দানে রাখতে চাইছে দল। আগামী ৩০ নভেম্বর কলকাতায় বিজেপির এক সভাও রয়েছে। সভায় উপস্থিত থাকবেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। এ জেলা থেকেও দলের কর্মী- সমর্থকেরা কলকাতার সভায় যাবেন। পাশাপাশি, অমিত শাহের সভার সমর্থনে জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রচার কর্মসূচি সংগঠিত করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নেতৃত্ব। সভার সমর্থনে দেওয়াল লিখন, পথসভা- মিছিল প্রভৃতি হবে।

Advertisement

এদিন থেকে শহরে সেই কর্মসূচিই শুরু হল। সম্প্রতি পাড়ুইয়ের মাখড়া যাওয়ার পথে বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলকে ১৪৪ ধারার যুক্তি দেখিয়ে আটকে দেওয়া হয়। বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, নন্দীগ্রামের ঘটনার সময়ও সিপিএম এ ভাবে অত্যাচার করেছিল। তখন বিরোধী হিসেবে বিজেপিও নন্দীগ্রামের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ওই অত্যাচারের প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন। আর আজ তিনিই মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসে সিপিএমের পথই অনুসরণ করছেন। বিজেপির শহর সভাপতি অরূপ দাস বলেন, “উন্নয়নের নামে তামাশা চলছে। রাজ্যের সরকার মানুষের উপর বোঝা। মানুষ পরিত্রাণ চাইছেন। মানুষ ধরেই নিয়েছেন এই মুহুর্তে প্রকৃত বিরোধী রাজনৈতিক দল বিজেপিই। কোনও ভাবেই আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না। যতই আক্রমণ হোক। আগামী দিনে মানুষই শেষ কথা বলবেন।” মিছিলে সদর ব্লকের কয়েকটি এলাকার কর্মী- সমর্থকেরাও সামিল হন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন