তৃণমূলকে বিঁধলেন বিজেপির শমীক

জেলার এক প্রান্ত দিঘায় যখন মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা চলছে, তখন আরেক প্রান্ত পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটে তখন মুখ্যমন্ত্রীরই সমালোচনায় সরব হলেন বিজেপি-র বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য। সারদা থেকে খাগড়াগড়, একের পর এক প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য নেতা বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক ও মহিষাদল শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৪ ০২:০২
Share:

মহিষাদলে বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য। —নিজস্ব চিত্র।

জেলার এক প্রান্ত দিঘায় যখন মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা চলছে, তখন আরেক প্রান্ত পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটে তখন মুখ্যমন্ত্রীরই সমালোচনায় সরব হলেন বিজেপি-র বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য। সারদা থেকে খাগড়াগড়, একের পর এক প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য নেতা বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

Advertisement

খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পিছনে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর হাত রয়েছে বলে শনিবার তৃণমূল নেত্রী যে মন্তব্য করেছিলেন, তাতে তাঁর দেশপ্রেম নিয়েই প্রশ্ন তুলে মঙ্গলবার বিকেলে কোলাঘাট শহরের খড়িচক সেতুর কছে বিজেপি-র সভায় সরব হন শমীক। শমীকের কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্ঠস্বরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের স্বর প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। কোন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে বাংলার রাজনীতি! যে ভাষায় পাকিস্তানের ভারত বিরোধী শক্তি কথা বলে, সেই ভাষায় কথা বলছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।” তাঁর কটাক্ষ, “এরপর হয়ত উনি বলবেন মহাজাগতিক কোনও শক্তি চক্রান্ত করছে!”

আগামী ৩০ নভেম্বর কলকাতায় জনসভা রয়েছে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের। তারই প্রস্তুতিতে কোলাঘাটে এসেছিলেন শমীক। এ দিন সারদা কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তুলে দিল্লিতে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তার সমালোচনা করেন শমীক। তাঁর কথায়, “আপনি আন্দোলন করুন। অচল করুন দিল্লিকে। কিন্তু, বাংলার দরিদ্র পরিবারগুলোকে যে ভাবে সারদা-সহ অন্য কোম্পানিগুলো প্রতারণা করে সংসার অচল করেছে, সেই পরিবারগুলোকে আগে সচল করুন।” শমীকের কটাক্ষ, “সারদা কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পর মুখ্যমন্ত্রী যাঁদের সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন, তাঁদের অর্ধেক এখন জেলে। হারাধনের দশটা ছেলের মত অবস্থা!” কোলঘাটের সভায় তৃণমূল-সিপিএম থেকে বেশ কিছু কর্মী বিজেপিতে যোগ দেন।

Advertisement

মহিষাদলের সিনেমা মোড়ে মহিষাদল ব্লক কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত সভাতেও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন বসিরহাটের এই বিধায়ক। শমীক বলেন, “মানুষ সিপিএমের দলতন্ত্র, বর্বরতার বিরুদ্ধে মানুষ তৃণমূলকে পরিবর্তনের ভোট দিয়েছিল। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতি আরও কঠিন। কেউ পুলিশের সামনে বলছে পায়ের তল দিয়ে পিষে মেরে দেব, কেউ বলছে প্রশাসনকে বোমা মারব। আর ডিজি তাঁকে আদালতে ক্লিনচিট দিলেন।” রাজ্যে সার্বিক অব্যবস্থা চলছে বলেও শমীকের দাবি। কেমন?

শমীকবাবুর কথায়, বাংলার মানুষ জানতেন দিঘা কখনই গোয়া হবে না, কলকাতাও লন্ডন হবে না। ৫৫ হাজার বন্ধ কারখানা খুলবে না। তবুও একটি দলের একাধিপত্য থেকে মুক্তি পেতে তৃণমূলের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু, এখন দেখা যাচ্ছে মহিলাদের উপর অত্যাচার হচ্ছে, মানুষের সম্পত্তি লুট হচ্ছে। যারা এক সময় পরিবর্তন চেয়েছিলেন, তারা এখন পরিত্রাণ চাইছেন। এ দিনের সভায় শমীকবাবু ছাড়াও বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি মৃতু্ঞ্জয় পাণিগ্রাহি, বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাস, জেলা যুব সভাপতি নীলাঞ্জন অধিকারী, ব্লক সভাপতি বৃহস্পতি মাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ দিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মহিষাদলের রবীন্দ্র পাঠাগারে বিজেপির মহিষাদল ব্লক কমিটির কর্মী সম্মেলনও হয়। দুপুরে কর্মী সম্মেলনে ঢোকাকে কেন্দ্র করে বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দলও সামনে আসে। এক দল বিজেপি সমর্থক ওই সম্মেলনে ঢুকতে গেলে অন্য পক্ষ তাদের বাধা দেয় বলে অভিযোগ। যদিও দলের ব্লক সভাপতি বৃহস্পতি মাজী বলেন, “দল বিরোধী কাজে যুক্ত কিছু লোক সম্মেলনে জোর করে ঢুকতে গিয়েছিল। দলের ছেলেরা তাদের সরিয়ে দেয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন