বর্ধমানে বিস্ফোরণের জের

দুই শহরে কড়া নিরাপত্তা, চলল তল্লাশি

বর্ধমানে বিস্ফোরণ-কাণ্ডের পর প্রতিটি জেলাকে সতর্ক করা হয়েছে। রাজ্য থেকে সতর্কবার্তা এসেছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও। সেই মতো বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি-অভিযান শুরু হয়েছে। সোমবার সকালে মেদিনীপুর শহরের কিছু এলাকায় পুলিশ কুকুর নিয়ে তল্লাশি-অভিযান চালানো হয়। মেদিনীপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকাতেও তল্লাশি চলে। অবশ্য সন্দেহজনক কিছু মেলেনি। জেলা পুলিশের অবশ্য দাবি, এটা রুটিন তল্লাশি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর ও খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৪ ০০:১৪
Share:

মেদিনীপুরের কেরানিতলায় পুলিশের নজরদারি। —নিজস্ব চিত্র।

বর্ধমানে বিস্ফোরণ-কাণ্ডের পর প্রতিটি জেলাকে সতর্ক করা হয়েছে। রাজ্য থেকে সতর্কবার্তা এসেছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও। সেই মতো বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি-অভিযান শুরু হয়েছে। সোমবার সকালে মেদিনীপুর শহরের কিছু এলাকায় পুলিশ কুকুর নিয়ে তল্লাশি-অভিযান চালানো হয়। মেদিনীপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকাতেও তল্লাশি চলে। অবশ্য সন্দেহজনক কিছু মেলেনি। জেলা পুলিশের অবশ্য দাবি, এটা রুটিন তল্লাশি। নানা সূত্রের খবরের ভিত্তিতে মাঝেমধ্যেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় এ ভাবে তল্লাশি- অভিযান চালানো হয়। জেলার পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “কিছু এলাকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এটা রুটিন তল্লাশি।” অবশ্য পুলিশেরই এক সূত্রে খবর, বর্ধমানে বিস্ফোরণের পর রাজ্য থেকে আসা সতর্কবার্তার প্রেক্ষিতে এই তল্লাশি।

Advertisement

সোমবার ছিল ঈদুজ্জোহা। রাত ৮টার পরে দুর্গাপুজোর প্রতিমা নিরঞ্জনও হয়েছে। এ সবের প্রেক্ষিতে নানা ভাষাভাষির শহর খড়্গপুরকে এ দিন নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেওয়া হয়েছিল। অনুষ্ঠান নির্বিঘ্ন করতে রাজ্য পুলিশের সঙ্গে পথে নেমেছিল আধা সামরিক বাহিনী ও বম্ব স্কোয়াডের সদস্যরা। রেলশহরের উত্তর ও দক্ষিণ অংশে চিরুনি তল্লাশি চালায় সিআরপিএফের ‘অ্যান্টি সাবতাজ টিম’। গত বৃহস্পতিবার বর্ধমানের খাগড়াগড়ের একটি বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়। দু’জনের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। বিস্ফোরক তৈরির সার্কিট, নানা রকমের রাসায়নিক, হ্যান্ড গ্রেনেড, মোবাইল, রসায়নের বই, বেশ কিছু জেহাদি বই বাজেয়াপ্ত করা হয়। বিস্ফোরণের ঘটনার সঙ্গে জেহাদ-যোগের বিষয়টি সামনে আসায় শোরগোল পড়েছে বিভিন্ন মহলে। পুলিশের এক সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতেই রাজ্য থেকে জেলায় জেলায় সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঈদুজ্জোহা ও দুর্গা প্রতিমার বিসর্জন একই দিনে থাকায় নিরাপত্তার আয়োজন আগেই করা হয়েছিল। ইতিমধ্যে বর্ধমানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে যাওয়ায় নিরাপত্তা আরও আঁটোসাঁটো করা হয়। শহরের পথে নেমেছে সিআরপিএফ, বম্ব স্কোয়াড, স্নিফার ডগ স্কোয়াড। রবিবার বিকেল থেকেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়েছে সিআরপিএফের ‘অ্যান্টি সাবতাজ টিমে’র জওয়ানরা। সোমবার সকাল থেকে বম্ব স্কোয়াড ঘুরে দেখেছে রেলশহরে আবর্জনার ভ্যাট থেকে শুরু করে পরিত্যক্ত ব্যাগ। সব মিলিয়ে এ দিন চারশো সিআরপিএফ জওয়ান ও সাতশো রাজ্য পুলিশকে খড়্গপুরের পথে নামানো হয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

ঈদ উপলক্ষে এ দিন খড়্গপুর শহরে বহু আখড়া শোভাযাত্রা বের করে। নিরাপত্তার স্বার্থে সন্ধে সাতটার মধ্যে আখড়া শেষ করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। আর রাত আটটার পরে দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। অভিযাত্রী, বাবুলাইন, সুভাষপল্লি, প্রেমবাজার, সাউথ-ইস্ট ডেভেলপমেন্ট সঙ্ঘশ্রীর মতো বড় পুজোর প্রতিমা এ দিন শোভাযাত্রা করেই বিসর্জন হয়েছে। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর বলেন, “বর্ধমানের ঘটনার পরে রাজ্যের সবর্ত্র নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। শহরে একই সঙ্গে দু’টি উত্‌সবের মেজাজ থাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছিল। সিআরপি, বম্ব স্কোয়াড ও রাজ্য পুলিশ একসঙ্গে কাজ করছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন