তরুণ দম্পতির অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন বাড়ির পরিচারিকাও। মৃত বধূর পরিজনদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে খুনের মামলাই রুজু করা হয়েছে। সোমবার রাতে চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার ধৃতদের মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করা হয়। আইনজীবীদের কর্মবিরতি চলায় এ দিন অবশ্য মামলার শুনানি হয়নি। চারজনেরই জেল হেফাজত হয়েছে। আজ, বুধবার ধৃতদের ফের মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করা হবে। পুলিশ সূত্রে খবর, চারজনের মধ্যে দু’জনকে হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানাবে পুলিশ। পুলিশের অনুমান, এই দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার কিনারা হতে পারে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সোমবার সকালে বাড়িতেই পাশাপাশি শোয়ানো অবস্থায় ওই তরুণ দম্পতির দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। গত নভেম্বরে বিয়ে হয়েছিল দেবরাজ দাঁ এবং দোলন দাঁ- র। দেবরাজের পরিজনদের দাবি, স্বামী- স্ত্রী দু’জনেই আত্মহত্যা করেছেন। দোলনের বাপের লোকজন অবশ্য এই দাবি মানতে নারাজ। তাঁদের অভিযোগ, এটি খুনের ঘটনা। মৃত বধূর বাপের বাড়ির লোকেদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে শ্বশুর গৌতম দাঁ, শাশুড়ি সুমিতা দাঁ, দেওর রাহুল দাঁ এবং বাড়ির পরিচারিকা শিখা দাসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের মধ্যে শ্বাশুড়ি এবং দেওরকে হেফাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানানো হবে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, শ্বাশুড়ির সঙ্গে দোলনের সম্পর্ক ভাল ছিল না। মাঝেমধ্যে দু’জনের বচসা হত। রবিবারও অশান্তি হয়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছয় যে, দোলনের মামা অরূপ চন্দ্রকে রাতেই দেবরাজদের বাড়িতে আসতে হয়।
ছোট থেকে মামাবাড়িতেই বড় হন দোলন। শহরের শরৎপল্লি এলাকায় রয়েছে মামাবাড়ি। নিজের বাবা-মা থাকেন ডেবরার লোয়াদায়। গত নভেম্বরে সাইকেল দোকানের মালিক দেবরাজের সঙ্গে সম্বন্ধ করেই বিয়ে হয় দোলনের। মেয়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে ওই দিনই মেদিনীপুরে আসেন দোলনের বাবা সুকুমার দে। এটি খুন না আত্মহত্যা, তা নিয়ে এখনও ধন্দে পুলিশ।
এক পুলিশ অফিসারের মতে, এখনই এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যাবে না। হতে পারে কোনও একজনকে খুন করে অন্যজন আত্মহত্যা করেছেন। হতে পারে দু’জনই আত্মহত্যা করেছেন। আবার এও হতে পারে, দু’জনকেই খুন করা হয়েছে। তদন্তে পুলিশের হাতে বেশ কিছু সূত্র এসেছে। এই সব সূত্র ধরেই তদন্ত এগোচ্ছে। পুলিশের বক্তব্য, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না-পেলে মৃত্যুর কারণ বলা সম্ভব নয়।