নির্বাচন কমিশনের বিশেষ শিবিরে ভোটারদের ভিড় পূর্বে

ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে কি না যাচাই করার জন্য নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে বিশেষ শিবিরে ভিড় জমল পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায়। রবিবার জেলার প্রতিটি বুথে এই বিশেষ শিবিরে আসেন এলাকার বাসিন্দা ভোটাররা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৪ ০৩:২৭
Share:

তমলুকের সান্ত্বনাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ে শিবির। —নিজস্ব চিত্র।

ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে কি না যাচাই করার জন্য নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে বিশেষ শিবিরে ভিড় জমল পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায়। রবিবার জেলার প্রতিটি বুথে এই বিশেষ শিবিরে আসেন এলাকার বাসিন্দা ভোটাররা। শুধু ভোটার তালিকায় নিজেদের নাম যাচাই নয়, চলতি বছরের পয়লা জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে এমন অনেকেই নতুন ভোটার হিসেবে তালিকায় নাম তোলার জন্য ফর্ম পূরণ করে জমা দিয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, “রবিবার জেলা জুড়ে প্রতিটি ভোটগ্রহণ বুথে বিশেষ শিবির আয়োজন করা হয়েছিল। এই শিবিরে জেলার প্রতিটি ব্লকে ভোটারদের কাছ থেকে ভাল সাড়া মিলেছে। কত আবেদনপত্র জমা পড়েছে এখন তার হিসেব চলছে।”

Advertisement

জেলা নির্বাচন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ১৬ টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে তমলুক ও কাঁথি লোকসভা কেন্দ্র এলাকার মধ্যে ১৪ টি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে। বাকি দুটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে এগরা বিধানসভা, মেদিনীপুর লোকসভা ও পাঁশকুড়া পূর্ব বিধানসভা, ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে। সব মিলিয়ে সারা জেলায় ভোটগ্রহণ বুথের সংখ্যা ৪২৯৮টি, ভোটার সংখ্যা ৩৪ লক্ষ ৮৫ হাজার ৩১১। জেলা প্রশাসনের হিসেব অনুযায়ী ভোটার তালিকায় থাকা জেলার সমস্ত ভোটারের সচিত্র পরিচয়পত্র তৈরির কাজ হয়েছে।

ইতিমধ্যে লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। লোকসভা ভোটের আগে ভোটারদের সচিত্র পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকায় থাকা নাম যাচাই করার জন্য রবিবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত প্রতিটি ভোট গ্রহণকেন্দ্রে বিশেষ শিবিরের আয়োজন করা হয়। ওই শিবিরে ভোটার তালিকায় ভোটারদের নাম ও সচিত্র পরিচয় মিলিয়ে দেখে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। সচিত্র পরিচয় থাকা সত্ত্বেও ভোটার তালিকায় নাম না থাকলে ফর্ম জমা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। আবার নতুন ভোটারদের নাম তোলার জন্য ফর্ম জমা নেওয়ার ব্যবস্থাও ছিল।

Advertisement

রবিবার সকাল সাড়ে ১১ টা নাগাদ তমলুক শহরের সান্ত্বনাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ের বুথে এই বিশেষ শিবিরে গিয়ে দেখা যায় সেখানে এলাকার বাসিন্দাদের ভিড় জমেছে। এই বিশেষ শিবিরে এসেছিলেন ৬৭ বছরের প্রবীণ সুররঞ্জন মান্না। নিজের ভোটার পরিচয়পত্র নিয়ে এসে ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে কি না তা যাচাই করে দেখে নেন সুররঞ্জনবাবু। নিশ্চিত হওয়ার পর সুররঞ্জনবাবু বলেন, “আমার কাছে ভোটার হিসেবে সচিত্র পরিচয়পত্র রয়েছে। কিন্তু এরপরও ভোটের দিন বুথে গিয়ে যদি দেখি ভোটার তালিকায় আমার নাম নেই তবে ভোট দিতে পারব না। তাই এই এই আগাম সতর্কতা।”

আবার এ দিন ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য এসেছিলেন তমলুক শহরের টাউন শঙ্করআড়ার বাসিন্দা বছর চল্লিশের সুজয় চৌরাশিয়া। সুজয়বাবু বলেন, “পারিবারিক ব্যবসার কাজে আমি কুড়ি বছরের বেশি নেপালে থাকতাম। মাঝে মাঝে বাড়িতে আসতাম। এখানে ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য একাধিকবার আবেদন জমা দিয়েছিলাম। শুনানির দিন হাজির থাকতে না পারায় ভোটার তালিকায় নাম ওঠেনি। এ দিন প্রমাণপত্র-সহ আবেদন করে ভোটার তালিকায় নাম তোলায় সুবিধা হল।” এ দিন নতুন ভোটার হিসেবে ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য আবেদন পত্র জমা দেন তমলুক শহরের শঙ্করআড়ার বাসিন্দা এবারের উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ভাইবোন অরিন্দম রাণা ও অনিন্দিতা রাণা। অনিন্দিতা বলেন, “ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য বয়স পূরণ হওয়ায় ও দ্রুত নাম তোলার সুযোগ থাকায় এই শিবিরে এলাম।” জেলা প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকরা জেলার বিভিন্ন ব্লকে ভোটগ্রহণ বুথে আয়োজিত বিশেষ শিবির পরিদর্শনে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন