পশ্চিমে ভোট ৬টি পুরসভায়

নজরে নির্বাচন, পুরসভা ভিত্তিক পর্যবেক্ষক নিয়োগ করবে বিজেপি

পুরসভা নির্বাচনে সাফল্য পেতে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করবে বিজেপি। দলীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে দলের এক বৈঠকে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনাও হয়। জেলা নেতাদেরই পর্যবেক্ষক করে পাঠানো হবে পুর-এলাকাগুলোয়। এক-একজন নেতাকে কয়েক’টি করে ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর ও খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৪ ০০:৩২
Share:

পুরসভা নির্বাচনে সাফল্য পেতে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করবে বিজেপি। দলীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে দলের এক বৈঠকে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনাও হয়। জেলা নেতাদেরই পর্যবেক্ষক করে পাঠানো হবে পুর-এলাকাগুলোয়। এক-একজন নেতাকে কয়েক’টি করে ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হবে। নেতারা তাঁদের দায়িত্বপ্রাপ্ত ওয়ার্ডে দলের সাংগঠনিক কাজকর্ম দেখভাল করবেন।

Advertisement

এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সহ-সভানেত্রী কৃষ্ণা ভট্টাচার্য। কৃষ্ণাদেবী দলের তরফে এ জেলার পর্যবেক্ষক হিসেবে নিযুক্ত। ব্লকস্তরেও পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। পরে কৃষ্ণাদেবী বলেন, “আমরা জেলার সর্বত্রই সংগঠনকে মজবুত করার চেষ্টা করছি। পুরভোটের প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। পুর-এলাকায় জেলা নেতাদেরই পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হবে।” দলের জেলা পদাধিকারীদের নিয়েই এ দিন মেদিনীপুরে এই বৈঠক হয়। বিজেপির জেলা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়ও।

এ দিন খড়্গপুরেও যান কৃষ্ণাদেবী। রামমন্দিরে শহরের বিভিন্ন এলাকার কর্মীদের নিয়ে পুরভোটের প্রস্তুতি বৈঠক সারেন। ছিলেন দলের জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়, শহর সভাপতি প্রেমচাঁদ ঝাঁ। কর্মিসভায় কৃষ্ণাদেবী বলেন, “এই শহরে পুরবোর্ড গড়তে হবেই এই শপথ নিয়ে আজ থেকে প্রতিটি কর্মীকে ময়দানে নামতে হবে। মানুষের কাছে কেন্দ্রের মোদী সরকারের জনমুখী নীতির কথা তুলে ধরতে হবে।

Advertisement

পুরভোটকে সামনে রেখে এখন থেকেই সংগঠন নাড়াচাড়া শুরু করে দিয়েছেন বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। আগামী বছর পশ্চিম মেদিনীপুরে ছ’টি পুরসভায় ভোট রয়েছে। এর মধ্যে ঘাটাল মহকুমার অন্তর্গত পাঁচটি পুরসভা এবং খড়্গপুর। গত লোকসভার ফলকে বিধানসভা কেন্দ্রওয়াড়ি ধরলে খড়্গপুর সদরে এগিয়ে বিজেপিই। এখানে দলের প্রাপ্ত ভোট ৫১ হাজার। যেখানে তৃণমূল পেয়েছে ৪০ হাজার, কংগ্রেস ২১ হাজার। গেরুয়া-শিবির আশাবাদী, এ বার খড়্গপুর পুরসভা তাঁদের দখলেই আসবে। পাশাপাশি, ঘাটাল মহকুমার অন্তর্গত পাঁচটি পুর-এলাকাতেও দলের ফল ভাল হবে।

পরিসংখ্যানও বলছে, গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরেই বিজেপির ভোট বেশি বেড়েছে। পরিস্থিতি দেখে সংগঠনকে শৃঙ্খলায় বাঁধারও চেষ্টা করছেন নেতৃত্ব। তৃণমূলের মতো দলের সঙ্গে টক্কর দিতে হলে যে বুথ-ভিত্তিক সংগঠন গড়ে তুলতে হবে, তাও বুঝছেন বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি তুষারবাবু বলেন, “আমরা সর্বত্রই বুথ- ভিত্তিক সংগঠন গড়ে তোলার উপর জোর দিচ্ছি। পুর-এলাকাও বুথ-ভিত্তিক সংগঠন গড়ে তোলা হচ্ছে।” তাঁর কথায়, “এ দিন আমাদের সাংগঠনিক সভা ছিল। জেলা পদাধিকারীদের নিয়েই এই সভা হয়। পুরভোট সহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কৃষ্ণাদি প্রয়োজনীয় কিছু নির্দেশও দিয়েছেন।” জানা গিয়েছে, পুরভোটে এক-একজন জেলা নেতাকে ২ থেকে ৫টি ওয়ার্ডের দায়িত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষক হিসেবে পাঠানো হবে। যেমন খড়্গপুর শহরে ওয়ার্ড সংখ্যা ৩৫। এখানে ৭ থেকে ১২ জন পর্যবেক্ষক পাঠানো হতে পারে।

আলোচনায় উঠে আসে নতুন সদস্য সংগ্রহের বিষয়টিও। পশ্চিম মেদিনীপুরে এ বার ১ লক্ষ সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্য নিয়েছেন জেলা নেতৃত্ব। এখন জেলায় দলের সদস্য সংখ্যা ৪০ হাজার। এই নভেম্বর থেকেই সদস্য সংগ্রহ শুরু হবে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে খড়্গপুর শহরের প্রতিটি বুথ থেকে ২০ জন করে যুব সদস্য দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে একজন করে মহিলা, তফসিলি ও সাধারণ নিয়ে মোট তিনজন পুর-প্রার্থী দিতে বলা হয়েছে। শহর বিজেপির সভাপতি প্রেমচাঁদ, “আমরা দ্রুত প্রার্থী তালিকা বানিয়ে জেলা নেতৃত্বের কাছে পাঠাব। জেলা থেকেই চূড়ান্ত প্রার্থী ঠিক করা হবে।”

আগামী ৩০ নভেম্বর কলকাতায় বিজেপির এক সভাও রয়েছে। সভায় উপস্থিত থাকবেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। এ জেলা থেকেও দলের কর্মী- সমর্থকেরা কলকাতার সভায় যাবেন। অমিত শাহের সভার সমর্থনে জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রচার কর্মসূচি সংগঠিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেলা নেতৃত্ব। এ দিন কৃষ্ণাদেবী বলেন, “৩০ নভেম্বরের সভার সমর্থনে জেলা জুড়েই প্রচার চলবে। এ জেলা থেকেও প্রচুর কর্মী-সমর্থক ওই দিন কলকাতায় যাবেন।” জেলার সর্বত্র বিজেপির সমান সাংগঠনিক পরিকাঠামো নেই। বৈঠকে নেতৃত্ব আশ্বাস দেন, পুরভোটে যেখানে যেমন পরিকাঠামো প্রয়োজন, সেখানে তেমন পরিকাঠামো তৈরি করা হবে। প্রয়োজনে জেলা থেকে সব রকম সাহায্য করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোও জোগানো হবে। বৈঠক শেষে তুষারবাবু বলেন, “আমরা আশাবাদী, পুরভোটে মানুষ বিজেপিকেই সমর্থন করবেন। নানা চক্রান্ত চলছে। পুলিশ তৃণমূলের কথায় কাজ করছে। তবে আক্রমণ করে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন