নজরে সংগঠন, প্রশিক্ষণ বিজেপি কর্মীদের

শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় কে? তাঁর জীবনের নানা গুরুত্বপূর্ণ দিক কী? বিজেপির অতীত ইতিহাসই বা কী? এমনই নানা প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বিজেপির প্রশিক্ষণ শিবিরে। উঠে এল কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের নানা কাজকর্ম ও কর্মসূচির কথা। সমালোচিত হল নানা বিষয়ে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের ভূমিকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৪ ০০:০১
Share:

শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় কে? তাঁর জীবনের নানা গুরুত্বপূর্ণ দিক কী? বিজেপির অতীত ইতিহাসই বা কী? এমনই নানা প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বিজেপির প্রশিক্ষণ শিবিরে। উঠে এল কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের নানা কাজকর্ম ও কর্মসূচির কথা। সমালোচিত হল নানা বিষয়ে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের ভূমিকা। সব মিলিয়ে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে জেলা জুড়ে সংগঠন সাজানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দিল বিজেপি।

Advertisement

রবিবার বেলদায় বিজেপির এই প্রশিক্ষণ শিবিরে দলের ৮২ জন নেতা-কর্মী যোগ দেন। উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সহ-সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়, যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সম্পাদক সায়ন্তন বসু, দলের রাজ্য সহ-সভাপতি তথা জেলার পর্যবেক্ষক কৃষ্ণা ভট্টাচাযজ্ঞ প্রমুখ। জেলা পর্যায়ের এই প্রশিক্ষণ শিবিরের পরে আগামী দিনে ব্লক পর্যায়েও শিবিরের আয়োজন করা হবে বলে বিজেপি সূত্রে জানানো হয়েছে।

জেলার নেতা-কর্মীদের নিয়ে হঠায এই শিবির কেন? বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “এটা আমাদের দলীয় কর্মসূচি। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে জেলায় দলীয় সংগঠনকে আরও মজবুত করতে হবে।” জেলা বিজেপির এক নেতা জানিয়েছেন, রাজ্যের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দলে কর্মী সংখ্যা বাড়ছে। অন্য দল ছেড়ে অনেকেই বিজেপিতে নাম লেখাচ্ছেন। নতুন কর্মীদের কাছে দলের নীতি, চিন্তাভাবনা আরও স্পষ্ট করে দিতেই প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন। বিজেপি সূত্রের খবর, জেলা স্তরের প্রশিক্ষণ শিবিরে যাঁরা যোগ দিয়েছিলেন, আগামী দিনে তাঁরাই ব্লক স্তরের শিবিরে বক্তব্য রাখবেন। কর্মীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন।

Advertisement

বামপন্থী দলে পার্টি ক্লাসের রেওয়াজ রয়েছে। তবে লোকসভা নির্বাচনের পরে জেলা স্তরে বিজেপির প্রশিক্ষণ শিবির এই প্রথম হল। এই শিবিরে উপস্থিত এক কর্মীর কথায়, “রাজনীতি করার জন্য বিস্তর পড়াশোনা দরকার শিবিরে গিয়ে এটা আরও ভাল করে বুঝলাম। এমন শিবির যত বেশি হবে, কর্মীদের রাজনৈতিক চেতনা তত বাড়বে।” ইতিমধ্যে জেলায় বাড়তে শুরু করেছে বিজেপি। গত লোকসভা নির্বাচনের ফল বিধানসভা ওয়াড়ি হিসেবে বিশ্লেষণ করলে খড়্গপুর সদর কেন্দ্রে এগিয়ে রয়েছে গেরুয়া শিবির। মোদী ম্যাজিকে বিজেপির এই সাফল্যকে ধরে রেখে সংগঠন বৃদ্ধিই এখন দলের লক্ষ্য। এবং এই কাজটা যে যথেষ্ট কঠিন, তা স্বীকার করেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁরা জানেন, সংগঠন না গড়ে তুললে তৃণমূলের মতো দলের সঙ্গে টক্কর দেওয়া সম্ভব হবে না। সে জন্যই জোর দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ শিবিরে।

রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্রের খাসতালুক নারায়ণগড় বিধানসভা এলাকার বেলদাতেই প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করেছিল বিজেপি। দুই পর্বে হয় শিবির। প্রথম পর্বে বিষয় ভিত্তিক আলোচনা হয়। দ্বিতীয় পর্বে ছিল প্রশ্নোত্তর। জেলা বিজেপির এক নেতার কথায়, “দলের জন্য স্থানীয় ও জেলা স্তরে নতুন মুখ খুঁজে আনা জরুরি। এঁরা আগামী দিনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন।”

আগামী বছর জেলার ৬টি পুরসভায় নির্বাচন রয়েছে। একক ভাবে লড়াই করে এই পর-নির্বাচনে সাফল্য পেতেও মরিয়া বিজেপি। সেই মতো সংগঠন ঢেলে সাজার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। আগামী ১ নভেম্বর থেকে পুরনো কর্মীদের সদস্যপদ পুনর্নবীকরণ এবং নতুন সদস্য গ্রহণের কাজ শুরু হবে। জেলায় যত বেশি সংখ্যক সম্ভব, তত সদস্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দলের জেলা সভাপতি তুষারবাবু বলেন, “আমরা মানুষকে সংগঠিত করেই এগোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন