মাশরুম চিলি। —নিজস্ব চিত্র
পুজোয় স্কুল-অফিসের পাশাপাশি ছুটির মেজাজ হেঁসেলেও। বাজার করে রান্না করার ঝক্কি নয়, পুজোর ক’দিন নামী রেস্তোরাঁয় কব্জি ডুবিয়ে খাওয়াতেই এখন স্বচ্ছন্দ বাঙালি। তাই বড় শহরের সীমানা পেরিয়ে এখন মফস্সললেও আধুনিক রেস্তোরাঁর রমরমা।
বাঙালির পাতে হরেক রকম নতুন মেনু তুলে দিতে প্রস্তুত রেস্তোরাঁগুলি। শুধু মোগলাই বা বিরিয়ানি নয়। নিত্য নতুন রান্নার রেসিপি দিয়ে পুজোয় বাজিমাত করতে আসরে নেমেছে সব রেস্তোরাঁই। ব্যতিক্রম নয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সদর শহর তমলুকও। বড়-ছোট মিলিয়ে তমলুক শহরে প্রায় ৪০টি দুর্গা পুজো হয়। এরমধ্যে কয়েকটি বিগ বাজেটের পুজো রয়েছে। শহরে থিমের মণ্ডপ, প্রতিমা, আলোকসজ্জা দেখতে পুজোর দিনগুলিতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু লোক আসে। পুজোর ক’দিন বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মণ্ডপে ও শহরের রাস্তায় ভালই ভিড় হয়। রাত জেগে ঠাকুর দেখার মাঝে পেট পুজোও চলে জোরকদমে।
মণ্ডপগুলির সামনেই পুজোর দিনগুলিতে মিষ্টি-তেলেভাজার অস্থায়ী দোকান বসে। অনেক পুজো ঘিরে মেলাও বসে। পুজোর ক’দিন রসনা তৃপ্তির জন্য বিশেষ ধরনের খাবার তৈরি করে প্রস্তুত থাকে তমলুক শহরের রেস্তোরাঁগুলিও। চিরাচরিত ফ্রায়েড রাইস, চিলি চিকেনের পাশাপাশি অধিকাংশ রেস্তোরাঁর খাদ্য তালিকায় যোগ হচ্ছে দেশি-বিদেশি বিশেষ কিছু পদ। বড়-ছোট মিলিয়ে তমলুক শহরের বিভিন্ন স্থানে এখন রেস্তোরাঁর সংখ্যা গোটা দশেক। এদের মধ্যে কয়েকটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রেস্তোরাঁও রয়েছে। শনিবার-রবিবার ও ছুটির দিন ছাড়াও এখন প্রায় প্রতিদিনই এইসব রেস্তোরাঁয় ভিড় লেগেই থাকে। পুজোর সময় এই ভিড় আরও বহুগুণ বেড়ে যায়। ভিড় সামাল দিতে বেশিরভাগ রেস্তোরাঁই রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
তমলুকের অধিকাংশ রেস্তোরাঁয় এ বার পুজোর অন্যতম আকর্ষণ চাইনিজ মাশরুমের একাধিক পদ। হট ফেভারিট চাইনিজ ফ্রায়েড রাইস, কাশ্মীরী বিরিয়ানিও। তমলুক শহরের ‘পার্ক স্ট্রিট’ হিসেবে পরিচিত বর্গভীমা মন্দির সংলগ্ন ভীমার বাজারেই আছে তিনটি রেস্তোরাঁ একাধিক ফাস্টফুডের দোকান। ভীমার বাজারে প্রায় পনেরো বছরের পুরনো একটি রেস্তোরাঁর মালিক তারাপ্রসন্ন সেনাপতি জানান, চিলি চিকেন, চিকেন বাটার মাশালা, মটন চাপ, মোগলাই-এর মতো সারাবছর ধরে চলা আইটেম তো থাকছেই। এ বার পূজা উপলক্ষে থাকছে চিকেন ললিপপ, চিকেন দোপিয়াজি, চিকেন মাঞ্চুরিয়ানের পদ। এছাড়াও বিশেষ আইটেম হিসেবে থাকছে চাইনিজ মাশরুম দিয়ে তৈরি মাশরুম চিলি, মাশরুম মশালা, মাশরুম মাঞ্চুরিয়ান। সব মিলিয়ে এ বার মোট ৪০ রকমের পদ থাকছে। পুজোর সময় আবহাওয়া ভাল থাকলে রেস্তোরাঁয় ভালই ভিড় জমবে বলে আশা তারাপ্রসন্নবাবুর।
ভীমার বাজারের আরেক রেস্তোরাঁর ভাস্করকৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, “বিরিয়ানি, মোগলাই, ফ্রায়েড রাইস, পনির বাটার, ছাড়াও এ বার আমরা পুজোর বিশেষ মেনু হিসেবে রাখছি কাবাব, ড্রাই চিলি চিকেনের মতো আইটেমও।” তমলুক শহরের হ্যামিল্টন হাইস্কুলের কাছে চলন্তিকা মোড়ে রয়েছে দু’টি রেস্তোরা।ঁ ওই এলাকার এর রেস্তোরাঁর সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, পুজোর সময় চাহিদার কথা মাথায় রেখে আমরা বিভিন্ন ধরনের পদ তৈরির প্রস্তুতি নিয়েছি। এখানে বিরিয়ানি, তন্দুরি ছাড়াও চাইনিজ মাশরুমের তৈরি মাশরুম চিলি, মাশরুম মশালা, চিকেন মাঞ্চুরিয়ানের পদ পাওয়া যাবে।
তমলুক শহরের জেলখানা মোড়ে কয়েকমাস আগে চালু হওয়া এক রেস্তোরাঁর বিশ্বজিৎ দত্ত জানান, এ বার পুজো উপলক্ষে বিরিয়ানি, মোগলাই, চিকেন চাপের সাথে থাকছে লাচ্ছা, মোমো, চাইনিজ ফ্রায়েড রাইস, রেশমি চিকেন মশালা প্রভৃতি-সহ মোট ১৬ ধরনের পদ থাকছে। আশা করছি, পুজোর সময় ভাল ভিড় হবে।