সুযোগ স্বনির্ভর দলকে

পেশাদারি রান্না শেখাতে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ

সরকারি অফিসের এক চিলতে গুমটি ঘরে স্টোভ বা গ্যাসের উনুনে পাউরুটির টোস্ট, ডিমের অমলেট, আটার রুটি-ঘুগনি কিংবা চা-কফির ক্যান্টিন হামেশাই চোখে পড়ে। দিনের পর দিন এই সব ক্যান্টিন যাঁরা চালান, তাঁদের অধিকাংশই অপেশাদার রাঁধুনি। এ বার এই সব ক্যান্টিন-সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আরও স্বাস্থ্যসম্মত এবং উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করতে স্বনির্ভর দলের সদস্যাদের ‘হোটেল ম্যানেজমেন্ট কলেজে’ পাঠ-দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা প্রশাসন।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:২৭
Share:

জেলা পরিষদ ক্যান্টিনে কাজ করছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।

সরকারি অফিসের এক চিলতে গুমটি ঘরে স্টোভ বা গ্যাসের উনুনে পাউরুটির টোস্ট, ডিমের অমলেট, আটার রুটি-ঘুগনি কিংবা চা-কফির ক্যান্টিন হামেশাই চোখে পড়ে। দিনের পর দিন এই সব ক্যান্টিন যাঁরা চালান, তাঁদের অধিকাংশই অপেশাদার রাঁধুনি। এ বার এই সব ক্যান্টিন-সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আরও স্বাস্থ্যসম্মত এবং উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করতে স্বনির্ভর দলের সদস্যাদের ‘হোটেল ম্যানেজমেন্ট কলেজে’ পাঠ-দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা প্রশাসন।

Advertisement

প্রথম দফায় জেলার ৩০টি স্বনির্ভর দল থেকে বাছাই ৩০ জনকে কলকাতার তারাতলায় সরকারি হোটেল ম্যানেজমেন্ট কলেজে ‘কুকিং’ ও ‘হাউস কিপিং’-এর প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হচ্ছে। পুজোর পরেই তাঁরা প্রশিক্ষণ নিতে যাবেন। জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, “স্বনির্ভর দলের সদস্যাদের উন্নতমানের এবং আধুনিক বিভিন্ন খাবার তৈরি শিখিয়ে পেশাদার করতে প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা। বিনা খরচে কলকাতায় দু’মাস প্রশিক্ষণ পাবেন।”

জেলা পরিষদের ক্যান্টিনের দায়িত্বে রয়েছেন স্বনির্ভর দলের সদস্যা অপর্ণা শাসমল। তিনি বলেন, “আমরা নিজেদের মতো রান্না শিখে ক্যান্টিন চালাই। এখন অনেকেই এসে বিরিয়ানি, কাটলেট, চাউমিন কিংবা ইডলি-ধোসা চান। কিন্তু, আমরা তা ভাল বানাতে পারি না।” তাঁর বিশ্বাস, প্রশিক্ষণ পেলে এই সব খাবার তাঁরাও তৈরি করতে পারবেন।

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগীদের খাবার তৈরির দায়িত্বে রয়েছে স্বনির্ভর দলের সদস্যারা। এঁদের বেশির ভাগেরই আধুনিক পদ্ধতিতে রান্নার অভিজ্ঞতা নেই। এতে অফিস কর্মী কিংবা নানা প্রয়োজনে অফিসে আসা লোকজনের পছন্দের খাবার সরবরাহে যেমন অসুবিধা হয়, তেমনি কমে আয়ের সুযোগও।

তা দেখেই, স্বনির্ভর দলের সদস্যাদের আধুনিক পদ্ধতিতে বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরির প্রশিক্ষণের ভাবনা বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। জেলাশাসকের মতে, এর ফলে স্বনির্ভর দলের সদস্যারা আধুনিক রুচি এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার তৈরি করতে পারবেন। তাতে বাড়বে ক্যান্টিনের গুণগত মান, বাড়বে আয়ও। পাশাপাশি তাঁরা উদ্যোগী হয়ে ক্যাটারিং ব্যবসায় নামতে পারবেন।

স্বনির্ভর দলের দায়িত্বে থাকা জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রকল্প আধিকারিক শঙ্কর পাল জানান, এখন জেলার বিভিন্ন ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে ২৬টি স্বনির্ভর দল রোগীদের খাবার সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছেন। আবার জেলা পরিষদ অফিস ক্যান্টিন-সহ বেশ কিছু সরকারি অফিস ও জেলা প্রতিটি প্রাথমিক-মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মিড-ডে মিল রান্নার দায়িত্বে রয়েছেন বহু স্বনির্ভর দলের সদস্যেরা। এঁদের মধ্যে কুকিং এবং হাউস কিপিং বিভাগে ১৫ জন করে ৩০ জনকে বাছাই করেছে জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতর। ধাপে ধাপে অন্যদেরও প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা রয়েছে বলে দফতর সূত্রে খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement