চন্দ্রকোনার কুঁয়াপুর হাইস্কুলে চলছে ভোট গ্রহণ। নিজস্ব চিত্র।
বিক্ষিপ্ত কিছু অশান্তি ছাড়া মোটামুটি নির্বিঘ্নে শেষ হল হুগলির আরামবাগ লোকসভার অর্ন্তগত পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা বিধানসভা এলাকার লোকসভা ভোট। দিনের শেষে এলাকায় ৮৫ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন ঘাটালের মহকুমাশাসক অদীপ রায়।
মোটের উপর শান্তিপূর্ণ ভোট হলেও বুথ দখল, দলীয় কর্মীদের মারধরের একাধিক অভিযোগ এনেছে বামনেতৃত্ব। আরামবাগের বামপ্রার্থী শক্তিমোহন মালিকের দাবি, “চন্দ্রকোনায় বেশ কিছু বুথ দখল করেছে তৃণমূল। কোনও কোনও জায়গায় পোলিং এজেন্ট বসতে দেওয়া হয়নি। প্রতিবাদ করে প্রহৃত হয়েছেন স্থানীয় নেতৃত্ব।” তবে, এখনই পুনর্নিবার্চনের দাবি তোলেননি তিনি। বামপ্রার্থী বলেন, “ভোটশেষে দলীয় ভাবে আলোচনা করে পুনর্নিবার্চনের সিদ্ধান্ত হবে।” তৃণমল বুথদখল-সহ সব অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছে।
বুধবার তৃতীয় দফায় লোকসভা ভোটে চন্দ্রকোনা বিধানসভা এলাকার ৩১৯টি বুথে ভোটগ্রহণ হয়। মূলত সন্ত্রাস-প্রশ্নে চন্দ্রকোনা এলাকায় প্রচার চালিয়েছিল বামেরা। ঘাটাল এবং চন্দ্রকোনায় পরপর দুই সিপিএম কর্মী খুনের পর সেই প্রচার আরও জোরদার হয়েছিল। সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, ভোটের আগে তাঁরা যতগুলি আসনে পোলিং এজেন্ট দিতে পারবেন বলে ভেবেছিলেন, তার বেশি অনেক বেশি আসনে পোলিং এজেন্ট দিতে পেরেছেন। সাধারণ মানুষও তাঁদের পাশে রয়েছেন।
বুধবার ছিল আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের অধীন চন্দ্রকোনায় ভোট গ্রহণ।
ভোট দিয়ে ফিরছে চন্দ্রকোনার নিহত সিপিএম কর্মী প্রহ্লাদ রায়ের পরিবারের লোকেরা
বাঁ দিকে)। ভোটকেন্দ্রে এক প্রৌঢ়াকে সাহায্যের হাত (ডান দিকে)। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
বিরোধীদের ভাল ফল হবে, এই আশঙ্কায় শাসকদল তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা বিভিন্ন এলাকার বুথে পরিকল্পিত আক্রমণ চালিয়েছে বলে অভিযোগ সিপিএম-সহ বিরোধী শিবিরের। চন্দ্রকোনা ১ জোনাল কমিটির সম্পাদক বিদ্যুত রায় এবং চন্দ্রকোনা ২ জোনাল কমিটির সম্পাদক গুরুপদ দত্তের অভিযোগ, “ভোট হওয়া ৩১৯টি বুথের মধ্যে ভগবন্তপুর ১, ২, মনোহরপুর ১-সহ অন্তত ৪০টি বুথ দখল করেছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা।” প্রাক্তন বিধায়ক সুনীল অধিকারীর অভিযোগ, “চন্দ্রকোনা লোকসভার অর্ন্তগত দাসপুরের নাড়াজোলের সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্পাদক দীনবন্ধু বেরাকে মারধর করেছে তৃণমূল। বুথ দখলের প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রহৃত হয়েছেন এক পোলিং এজেন্টও।”
এ দিনের ভোটে চন্দ্রকোনা এলাকায় মোটের উপর সর্বত্রই কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি নজরে এসেছে। এ দিন সকাল সকালই ভোট দেন সাম্প্রতিক রাজনৈতিক হিংসায় নিহত প্রহ্লাদ রায় এবং মইসন খানের পরিবারের সদস্যরা। ভোট দিয়েছেন অজিত ভুঁইয়ার পরিবারও।
চন্দ্রকোনার সিপিএম বিধায়ক ছায়া দোলইয়ের অভিযোগ, এ দিন ইঁদা বুথের আশেপাশেই ঘোরাফেরা করেছেন পুলিশের খাতায় পলাতক মইসন খানের খুনীরা। পরিবারের তরফে মইসনের মৃত্যুর জন্য ১৮ জন তৃণমূল কর্মীর নামে খুনের অভিযোগ জানানো হলেও আজ অবধি একজনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।