বৃদ্ধা খুনে কাটেনি ধন্দ

এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও খড়্গপুরে বৃদ্ধা খুনের অপরাধী চিহ্নিত করতে পারল না পুলিশ। ঘটনায় নানা অসঙ্গতি রয়েছে বলেই তাদের দাবি। গত ৩ জানুয়ারি খড়্গপুর শহরের বিদ্যাসাগরপুরের বাড়িতে স্মৃতি মুখোপাধ্যায় নামে বছর চৌষট্টির ওই বৃদ্ধাকে মাথার আঘাত করে খুন করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:১৩
Share:

এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও খড়্গপুরে বৃদ্ধা খুনের অপরাধী চিহ্নিত করতে পারল না পুলিশ। ঘটনায় নানা অসঙ্গতি রয়েছে বলেই তাদের দাবি।

Advertisement

গত ৩ জানুয়ারি খড়্গপুর শহরের বিদ্যাসাগরপুরের বাড়িতে স্মৃতি মুখোপাধ্যায় নামে বছর চৌষট্টির ওই বৃদ্ধাকে মাথার আঘাত করে খুন করা হয়। স্মৃতিদেবী ঘটনার সময় বাড়িতে একাই ছিলেন। পরে তাঁর স্বামী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক পূর্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বাড়িতে ফিরে বৃদ্ধাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন। কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনার তদন্তে এসেছিলেন সিআইডি-র ফিঙ্গার প্রিন্ট বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু খড়্গপুর টাউন থানার পুলিশ এখনও প্রাথমিক তদন্তেই আটকে রয়েছে। তাদের দাবি, ঘটনাটিতে বেশ কিছু ধোঁয়াশা রয়েছে। নির্দিষ্ট প্রমাণও পাওয়া যাচ্ছে না।

পুলিশ সূত্রের খবর, পূর্ণেন্দু জানিয়েছিলেন তিনি সে দিন টম্যাটো আনতে বাজারে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন, রান্নাঘরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন স্মৃতিদেবী। তিনিই স্ত্রীকে টেনে ডাইনিং হলে নিয়ে আসেন। পরে অ্যাম্বুল্যান্স এলে জড়ো হন পড়শিরা। পুলিশ অবশ্য তদন্তে নেমে দেখে, বাড়ির কোনও সামগ্রী খোওয়া যায়নি। বাড়ির রেফ্রিজারেটরে টম্যাটোও রয়েছে। তাছাড়া, রক্তাক্ত স্ত্রীকে টেনে নিয়ে গেলেও পূর্ণেন্দুবাবুর পরনের পোশাকে রক্তের কোনও দাগ ছিল না। গত মঙ্গলবার ওই বাড়িতে যান ফিঙ্গার প্রিন্ট বিশেষজ্ঞরা। সে দিনই বাড়ির রেফ্রিজারেটরের পিছন থেকে উদ্ধার হয় একটি লোহার শাবল। পরে পুণে ও আমেরিকা থেকে আসা বৃদ্ধ-বৃদ্ধার মেয়ে প্রিয়াঙ্কা ও ছেলে ধ্রুবধীকে জেরাও করে পুলিশ। তবে ঘটনার কিনারা হয়নি। দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে শুক্রবার খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন স্থানীয়রা। কিন্তু তারপরেও কেউ ধরা পড়েনি।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দা অপর্ণা হালদার, তাপস সরকাররা বলেন, “আমাদের মনে হচ্ছে বিষয়টি পারিবারিক। পুলিশের দায়িত্ব নিয়ে তা খুঁজে বের করা উচিত। কিন্তু এক সপ্তাহ পরেও তদন্তের অগ্রগতি দেখছি না।” অপরাধী গ্রেফতার না হলে মোববাতি মিছিল হবে বলে জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দা শহর কংগ্রেস সভাপতি অমল দাস। স্মৃতিদেবীর মেয়ে প্রিয়াঙ্কাও বলেন, “আমরাও চাই মায়ের খুনে জড়িত ব্যক্তি দ্রুত ধরা পড়ুক।”

তদন্তের এই হাল কেন?

পুলিশ জানিয়েছে, ফিঙ্গার প্রিন্টের রিপোর্টও এখনও আসেনি। নির্দিষ্ট প্রমাণও কিছু মেলেনি। তবে গুরুত্ব দিয়েই তদন্ত চলছে। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্ত বলেন, “খুনের তদন্ত চলছে। কিছু টুকরো টুকরো প্রমাণ পেয়েছি। কিন্তু তার ভিত্তিতে তো কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। তাই নির্দিষ্ট প্রমাণের জন্য অপেক্ষা করছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন