মাটি শুকোচ্ছে না, বৃষ্টিতে চিন্তার মেঘ পটুয়াপাড়ায়

আর এক মাসও দেরি নেই দুর্গাপুজোর। এই সময় পটুয়াপাড়ায় জোর কদমে কাজ চলার কথা। কিন্তু মেদিনীপুরে সেই ব্যস্ততা দেখা যাচ্ছে না। কারণ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। বৃষ্টি আর স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় মাটি শুকোচ্ছে না। ফলে, রঙের কাজও শুরু করা যাচ্ছে না। শহরের মৃৎশিল্পীরা তাই উদ্বিগ্ন। সোমবার সকাল থেকে মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি হয়েছে মেদিনীপুরে। তাতে মূর্তি গড়ার কাজ ব্যাহত হয়েছে। শহরের মৃৎশিল্পী বিমান নায়েকের কথায়, “মাটির পুরো কাজ শেষ হয়নি। মাটি না শুকোলে রঙের কাজ শুরু হবে কী করে? আগামী ক’দিন যদি এ ভাবেই বৃষ্টি হয় তাহলে সমস্যা আরও বাড়বে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:০২
Share:

ঘেরাটোপে। মেদিনীপুরের চিড়িমারশাইতে তোলা নিজস্ব চিত্র।

আর এক মাসও দেরি নেই দুর্গাপুজোর। এই সময় পটুয়াপাড়ায় জোর কদমে কাজ চলার কথা। কিন্তু মেদিনীপুরে সেই ব্যস্ততা দেখা যাচ্ছে না। কারণ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। বৃষ্টি আর স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় মাটি শুকোচ্ছে না। ফলে, রঙের কাজও শুরু করা যাচ্ছে না। শহরের মৃৎশিল্পীরা তাই উদ্বিগ্ন।

Advertisement

সোমবার সকাল থেকে মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি হয়েছে মেদিনীপুরে। তাতে মূর্তি গড়ার কাজ ব্যাহত হয়েছে। শহরের মৃৎশিল্পী বিমান নায়েকের কথায়, “মাটির পুরো কাজ শেষ হয়নি। মাটি না শুকোলে রঙের কাজ শুরু হবে কী করে? আগামী ক’দিন যদি এ ভাবেই বৃষ্টি হয় তাহলে সমস্যা আরও বাড়বে।” বিমানবাবু এ বার ১২টি প্রতিমা গড়ার কাজ করছেন। সবগুলোই সাবেক ধাঁচের। তিনি বলছেন, “ভালয় ভালয় সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হলেই হল। বৃষ্টিই না এ বার অসুর হয়!”

গত কয়েক বছর ধরেই শারদোৎসবের মুখে বৃষ্টি হচ্ছে। অনেকে শাস্ত্র মেনে রথযাত্রার দিন কাঠামো পুজো করেই প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু করেন। অনেকে আবার অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগে থেকেই প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু করে দেন। রথের দিন অবশ্য প্রথা মাফিক কাঠামো পুজো করেন। শহরের এক মৃৎশিল্পীর কথায়, “শাস্ত্র মতে রথের দিন কাঠামো পুজো করে প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু করতে হয় ঠিকই কিন্তু ওই বিধি মানতে গেলে তো মাত্র দু’-আড়াই মাসের মধ্যে সপরিবার দুর্গামূর্তি গড়ার কাজ শেষ করা কোনও মতেই সম্ভব নয়। তাই এখন অনেকে আগে থেকে প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু করে দেন। রথের দিনে অবশ্য প্রথা মাফিক কাঠামো পুজো করেন।” ইতিমধ্যে মেদিনীপুর-খড়্গপুরের মতো শহর প্রাক্- দুর্গোৎসবে মেতে উঠেছে। এলাকায় এলাকায় খুঁটি পুজো করে মণ্ডপ তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। আগে মেদিনীপুরের মতো শহরে খুঁটি পুজোর এত চল ছিল না। কলকাতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে দিনে দিনে এই চল বাড়ছে। এখন শহরের অনেক পুজো কমিটিই খুঁটি পুজোর আয়োজন করে। এ বারও করেছিল।

Advertisement

রথযাত্রার দিন সাবেক বাড়ির দুর্গামূর্তির কাঠামোয় পুজো পড়ত। সেই দিন থেকেই শুরু হত দুর্গোৎসবের দিন গোনা। সাবেক পুজো ভেঙে ভেঙে গড়ে উঠেছে বারোয়ারি- সর্বজনীন পুজো। আর সেই কাঠামো পুজোর আঙ্গিকেই গড়ে উঠেছে খুঁটি পুজোর চল। চলতি মাসের ২৩ তারিখ মহালয়া। আর ৩০ তারিখ ষষ্ঠী। অর্থাৎ, হাতে আর বেশি সময় নেই। আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে গিয়েই বিপাকে পড়ছেন মৃৎশিল্পীরা। এখন পটুয়াপাড়াগুলোয় মাটির কাজ কমবেশি শেষ হয়ে গিয়েছে। কোথাও কোথাও কিছু বাকি রয়েছে। মাটির কাজ পুরোপুরি শেষ হলে রঙের কাজ শুরু হবে। তারপর সাজপোষাক, চক্ষুদানের মতো কিছু কাজ তো রয়েছেই। সোমবারের বৃষ্টি তাই চিন্তা বাড়িয়েছে। শহরের মৃৎশিল্পী অমিত মাহিন্দার বলেন, “প্রতিমা না শুকোলে রঙের কাজ শুরু করা যাবে না। যা পরিস্থিতি এখন প্রতিমা শুকোনোই খুব সমস্যার হয়ে দাঁড়িয়েছে।” অমিতবাবু এ বার ৬টি প্রতিমা গড়ার কাজ করছেন। এর মধ্যে আবার একটি পুরোপুরি থিমের। তাঁর কথায়, “রঙের কাজ শুরু করার সময় চলে এসেছে। এরপর কাজ শুরু করতে দেরি হলে পরে আরও সমস্যা হবে। কিন্তু সমস্যা অন্য। এই বৃষ্টিতে মূর্তি শোকাতেই তো কালঘাম ছুটছে!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন