স্কুলের মিড-ডে মিলে গরমিলের অভিযোগ তুলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক-সহ সব শিক্ষককে ঘেরাও করে রাখল গ্রামবাসীরা। সোমবার দুপুরে খড়্গপুর গ্রামীণের বেনাপুর হাইস্কুলের ঘটনা। শিক্ষকদের ঘরে তালা ঝুলিয়ে ঘন্টাখানেক ঘেরাও চলে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ৫৯২ জন পড়ুয়ার জন্য মিড-ডে মিল বরাদ্দ থাকলেও প্রতিদিন গড়ে ১৭৫ জন খাওয়াদাওয়া করে। ফলে, বরাদ্দ ৬০ কেজি চালের মধ্যে খরচ হয় মাত্র ২০ কেজি। স্কুল কর্তৃপক্ষ সেই হিসেব বিডিও অফিসে না দিয়ে টাকা তছরুপ করেন বলে অভিযোগ।
কারচুপি বন্ধের দাবিতে গত ১৯ এপ্রিল পরিচালন সমিতির সম্পাদককে চিঠি দেন অভিভাবক ও গ্রামবাসীরা। ফের ২৬ এপ্রিল পরিচালন সমিতির সভাপতিকে বিষয়টি জানানো হয়। তাতেও সুফল মেলেনি। এরপর ২ জুন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে অভিযোগ জানালে তিনি কথা বলার আশ্বাস দেন। অভিভাবক চণ্ডীচরণ দে, গ্রামবাসী দীপক দিগাররা বলেন, “এ দিন স্কুলে গেলেও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সদুত্তর দিতে পারেননি। তাই ঘেরাও করতে বাধ্য হয়েছি।” ঘেরাও কর্মসূচির নেতৃত্বে থাকা তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য শিবপ্রসাদ মল্লিকের কথায়, “আমরা স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদকের মদতে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী লক্ষ্মীনারায়ণ সংগ্রামের চুরি ধরে ফেলেছি। কিন্তু তা নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ। আমরা দু’দিন সময় দিয়েছি।” পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামলায়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজেশ মাহাতো বলেন, “আমি পরিচালন সমিতিকে জানিয়েছিলাম। ওরাই ব্যবস্থা নেবে।” পরিচালন সমিতির সম্পাদক শঙ্কুকুমার ভুঁইয়ার বক্তব্য, “ওরা যে অভিযোগ তুলছে তা সত্য নয়। তবে ওদের দাবিমতো আমরা কাল, বুধবার সমিতির জরুরি বৈঠক ডেকে বিষয়টি আলোচনা করবো।”
শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ’র জেলা সম্পাদক অশোক ঘোষ বলেন, “ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। এ ভাবে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা স্কুলে ঢুকে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে। পঠনপাঠন শিকেয় তুলছে। অবিলম্বে পুলিশ-প্রশাসন এই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করুক। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিক।”