আগেও এসেছেন। তবে অবিভক্ত মেদিনীপুরে। আজ, শনিবার প্রথমবার পূর্ব মেদিনীপুরে আসছেন সিপিএমের পলিটব্যুরোর অন্যতম সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি। এই সফরের আপাত উদ্দেশ্য রক্তদান কর্মসূচির বার্ষিক ক্যালেন্ডার প্রকাশের মতো সামাজিক কর্মসূচি হলেও, প্রকৃত লক্ষ্য আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে জেলার তমলুক ও কাঁথি আসনে দলীয় তরুণ প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচার সংগঠিত করা বলে রাজনৈতিক মহলের অভিমত।
ইতিমধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুরের দুই লোকসভা আসনে সিপিএমের প্রার্থী বদল হয়েছে। তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন দলের ছাত্র সংগঠনের জেলা সভাপতি শেখ ইব্রাহিম আলি। কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে দলের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই-এর প্রাক্তন সর্বভারতীয় সম্পাদক তাপস সিংহকে প্রার্থী করা হয়েছে। নতুন প্রজন্মের এই প্রার্থীরাই এখন সিপিএমের ‘মুখ’। তাই তরুণ প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারে আসার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় কমিটির এই গুরুত্বপূর্ণ নেতা এমনিতেই আগ্রহী ছিলেন বলে দলীয় সূত্রে খবর।
তবে, এই সফরের পিছনে ‘রাজনৈতিক কৌশল’ও রয়েছে বলে ওয়াকিবহল মহলের যুক্তি। তাঁদের মত, সাম্প্রতিক লক্ষ্মণ-কাণ্ডের জেরে মুখ পুড়েছিল দলের। সেই ‘ক্ষতে’ প্রলেপ দিতে তৎপর ছিলেন আলিমুদ্দিন থেকে জেলা সিপিএম নেতারা। ইতিমধ্যেই একাধিক জনসভা করে গিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র, রবীন দেবরা। কিন্তু, এ বার দলের অন্যতম শীর্ষনেতা সীতারাম ইয়েচুরি প্রচারে আসায় দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মনোবল বাড়বে বলে মনে করছেন জেলা সিপিএম নেতৃত্ব।
কিন্তু, এখনই দলের কেন্দ্রীয় নেতা সীতারামকে প্রচারে আনা কেন?
কাঁথির সিপিএম প্রার্থী তাপস সিংহ শুক্রবার বলেন, “মূলত ছাত্র-যুবদের দাবিকে গুরুত্ব দিতেই দলের এই কেন্দ্রীয় নেতাকে দিয়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।” দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সীতারাম ইয়েচুরিকে প্রচারে আনার জন্য জেলার ছাত্র-যুবদের তরফে ব্যাপক আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছিল। জনসভা করার ভাবনাও ছিল। কিন্তু, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলায় আপাতত তা করা হচ্ছে না বলে দলের অন্দরের খবর। আগামী দিনে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বদের নিয়ে বড় সভা করবে বাম নেতৃত্ব।
অবশ্য তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে থাকা নন্দীগ্রাম ও কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে থাকা খেজুরি এলাকায় সিপিএম প্রার্থীরা এখনই প্রচারে যাবেন না বলে দলীয় ভাবে কৌশল নেওয়া হয়েছে। কেন? সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিরঞ্জন সিহি বলেন, “নন্দীগ্রাম ও খেজুরি-সহ জেলার কিছু এলাকায় এখনও সন্ত্রাসের পরিবেশ রয়েছে। ওই সব এলাকায় অনেক স্থানীয় নেতা-কর্মীরা ঘরছাড়া রয়েছেন। নির্বাচনের আগে তাঁদের বাড়ি ফেরাতে আমরা বেশি আগ্রহী।” পরিস্থিতি দেখে পরে নন্দীগ্রাম-খেজুরিতে প্রচারে যাওয়া হবে তিনি জানিয়েছেন।
ইয়েচুরি আজ দুপুর ২ টোয় তমলুকের সুবর্ণজয়ন্তী ভবনে ডিওয়াইএফআই’য়ের বার্ষিক রক্তদান কর্মসূচির ক্যালেন্ডার প্রকাশ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। বিকেল সাড়ে ৩ টায় কাঁথির টাউন হলে কর্মিসভা করবেন।