রাত পোহালেই বড়দিন, উৎসবের প্রস্তুতি মীরপুরে

রাত পোহালেই বড়দিন। উৎসবের প্রস্তুতিও তুঙ্গে। গির্জার দেওয়ালে রঙের পোঁচ পড়েছে। প্যান্ডেল বাঁধাও সারা। আজ রাত ১২টার পরই সূচনা হবে বড়দিনের উৎসবের। নতুন বছর প্রথমদিন পর্যন্ত চলবে নানা রঙিন অনুষ্ঠান। প্রতিবারের মতো আনন্দে মাতবেন মহিষাদলের পর্তুগিজদের গ্রাম মীরপুরের মানুষ। হুগলি নদীর তীরে গেঁওখালি লাগোয়া ছোট গ্রাম মীরপুর।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

মহিষাদল শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৫৯
Share:

সেজে উঠছে মীরপুর। ছবি: আরিফ ইকবাল খান।

রাত পোহালেই বড়দিন।

Advertisement

উৎসবের প্রস্তুতিও তুঙ্গে। গির্জার দেওয়ালে রঙের পোঁচ পড়েছে। প্যান্ডেল বাঁধাও সারা। আজ রাত ১২টার পরই সূচনা হবে বড়দিনের উৎসবের। নতুন বছর প্রথমদিন পর্যন্ত চলবে নানা রঙিন অনুষ্ঠান। প্রতিবারের মতো আনন্দে মাতবেন মহিষাদলের পর্তুগিজদের গ্রাম মীরপুরের মানুষ।

হুগলি নদীর তীরে গেঁওখালি লাগোয়া ছোট গ্রাম মীরপুর। শ’দুয়েক পর্তুগিজ সম্প্রদায়ের মানুষের বাস এই গ্রামে। জানা যায়, সপ্তদশ শতাব্দীর কোনও এক সময়ে রাজারা বর্গি আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে একদল পুর্তগিজ বাসিন্দাকে মহিষাদলে নিয়ে এসেছিলেন। সেই সময় হুগলি নদীর তীরে মীরপুরে ওই পর্তুগিজদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়। সেই মীরপুরে বংশপরম্পরায় বসবাস শুরু করে তাঁরা। দীর্ঘদিন থাকতে থাকতে তাঁরা ঝরঝরে বাংলাও রপ্ত করে ফেলেছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই পর্তুগিজ ভাষাও জানেন না। গ্রামে একটি রোমান ক্যাথলিকদের ও একটি প্রোটেস্টান্টদের (সিএনআই) গির্জা রয়েছে। দু’টি গির্জাতেই জোরকদমে চলছে প্রস্তুতি।

Advertisement

গত বছর ওই দুই গির্জা মিলে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে এ বার দুটি গির্জাতে আলাদা অনুষ্ঠান করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, পুর্তগিজরা কোথা থেকে এখানে এসেছিলেন তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। প্রোটেস্টান্টদের দাবি, তাঁদের পূর্বপুরুষদের ব্যাণ্ডেল থেকে আনা হয়েছিল। আর রোমান ক্যাথলিকদের দাবি, গোয়া থেকে এখানে এসেছিল তাঁদের পূর্বপুরুষেরা।

রোমান ক্যাথলিক মিশন উৎসব কমিটির সম্পাদক পল তেসরা বলেন, “সপ্তদশ শতকে বর্গী হামলার হাত থেকে রক্ষা পেতে মহিষাদলের রাজারা গোয়া থেকে আমাদের পূর্বপুরুষদের এখানে এনেছিলেন। সেই থেকে আমাদের পূর্বপুরুষরা এখানে থেকে যান। প্রতিবারের মতো এ বছরও আমরা জাঁকজমক-সহ সঙ্গে বড়দিনের উৎসব পালন করব।” তিনি জানান, ২৪ ডিসেম্বর রাত ১২টার পর বিশেষ প্রার্থনার মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা হবে। ১ জানুয়ারি পর্যন্ত নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি খেলাধুলো, সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গাজনযাত্রা, বাউল গান-সহ অন্যান্য অনুষ্ঠানও করা হবে।

গ্রামের প্রোটেস্টান্টদের (সিএনআই) গির্জার কোষাধ্যক্ষ রতন তেসরার কথায়, “২৪ ডিসেম্বর রাত ১২টা থেকে ১ জানুয়ারী পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে গাজন যাত্রা, বাউল গান, দৃষ্টিহীনদের নিয়ে অর্কেস্ট্রার আয়োজন করা হয়েছে। তাছাড়াও উৎসবের কয়েকদিন কীর্তন দল গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে যিশুর গান গেয়ে শোনাবেন।” বড়দিনের উৎসবের মুখে নতুন ঢালাই রাস্তা পেয়ে খুশি গ্রামের বাসিন্দারা। হলদিয়া উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে সম্প্রতি ওই রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়েছে। গ্রামের বাসিন্দা মিন্টু তেসরা বলেন, “আগে গ্রামে লাল মাটির রাস্তা ছিল। তাতে খুব সমস্যা হত। এ বার নতুন ঢালাই রাস্তা হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের উপকার হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন