হলদিয়ার মাখনবাবুর বাজারে চলছে সাফাই। ছবি: আরিফ ইকবাল খান।
শিল্প শহরে রাস্তার দু’ধার থেকে জবরদখলকারীদের সরিয়ে দিল হলদিয়া পুরসভা। রবিবার সকালে হলদিয়া টাউনশিপে মাখনবাবুর বাজারের কাছে পুলিশের উপস্থিতিতে রাস্তার দু’ধার পরিষ্কার রাখতে অভিযান হয়। উপস্থিত ছিলেন হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ মণ্ডল। ওই মার্কেটের কাছে প্রায় সাতটি ছাঁট মাংসের দোকান সরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দোকানদাররা নিজেরাই রাস্তার ধার থেকে তাঁদের দোকান সরিয়ে নেওয়ায় এ দিন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে ওই দোকানের মালিকেরা পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন। এ দিন বিকেলে দেবপ্রসাদবাবু বলেন, “রাস্তার ধারে সরকারি জমি দখল করে ঝুপড়ি রাখা যাবে না বলে অনেক দিন আগে থেকেই পুরসভার পক্ষ থেকে মাইকের মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছিল। রাস্তার ধার থেকে ঝুপড়িগুলি সরিয়ে নেওয়ার আবেদনও জানানো হয়। আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে দোকানদাররা আপনি মার্কেটের পাশে পেট্রল পাম্পের কাছে থাকা ছাঁট মাংসের দোকান সরিয়ে নিয়েছেন।” তিনি আরও বলেন, “ছাঁট মাংসের দোকান থেকে ওই এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াত। এ দিন ওই জায়গাটি পরিষ্কার করে মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। ওই জায়গায় গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে।”
হলদিয়ার মাখনবাবুর বাজার বাসিন্দা সুষমা লাতুয়া, টুকি মণ্ডল বলেন, “অনেক দিন আগে থেকে আমরা এখানে বাশের খুঁটি দিয়ে চালা ঘর করে ছাঁট মাংসের দোকান করে রয়েছি। পুরসভা থেকে আমাদের সরে যাওয়ার কথা বলার পর আমাদের সরিয়ে দিলে আমরা কোথায় বসে ব্যবসা করব, সে কথা জানতে চেয়ে আমরা পুরসভার চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছিলাম। পুরপ্রধান আমাদের বিকল্প জায়গায় বসার বাবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তাই আমরা নিজেরাই ছাঁট মাংসের দোকান সরিয়ে নিয়েছি।” স্থানীয় বাসিন্দা অনিতা প্রামাণিক বলেন, “এখানে আমাদের পানের গুমটি ছিল। পুরসভা দোকান সরিয়ে নিতে বলায় আমরা তা মেনে নিই। তবে গুমটির জন্য বিকল্প জায়গার বাবস্থা না করলে আমরা সমস্যায় পড়ব। আমাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করার আবেদন জানাচ্ছি।”
দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, “আমরা ‘গ্রিন হলদিয়া, ক্লিন হলদিয়া’র ডাক দিয়েছি। সবুজায়ন করতে শহরে যেমন গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তেমনই শহরের রাস্তার ধার পরিষ্কার করার জন্যও পুরসভা উদ্যোগী হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে শহরে গাছ লাগানোর কাজ শুরু করেছি। তাছাড়াও রাস্তার ধার পরিষ্কার করার কাজ শুরু করলাম।” তাঁর কথায়, “শহরের সব এলাকায় রাস্তার ধার পরিষ্কার করা হবে। রাস্তা দখল করে ঝুপড়ি, গুমটি রাখা যাবে না। শহরে আইওসি’র পাইপ লাইনের পাশেও ঝুপড়ি রাখা যাবে না। রাস্তার ধার থেকে ঝুপড়ি, গুমটি সরিয়ে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছি। বাসিন্দারা নিজেরা সরকারি জায়গা থেকে তাঁদের ঝুপড়ি, গুমটি সরিয়ে না নিলে আমরা প্রশাসনিক ভাবে বাবস্থা নেওয়া হবে।”
২৩ নভেম্বর দুর্গাচক এলাকায় রাস্তার দু’ধার পরিষ্কার করতে অভিযান চালানো হবে বলেও জানান দেবপ্রসাদবাবু। পুরপ্রধানের বক্তব্য, “পুজোর সময় থেকে শহরের দৃশ্য দূষণের বিরুদ্ধে আভিযান শুরু করেছি। শহরের যত্রতত্র বিজ্ঞাপন দেওয়া যাবে না। পুরসভার অনুমতি নিয়ে বিজ্ঞাপন দিতে হবে। অনুমতি ছাড়া কেউ বিজ্ঞাপন দিলে তা খুলে নেওয়া হবে।”