স্কুলে চাকরির নামে প্রতারণা, গ্রেফতার যুবক

মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে (বালক) চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার ছক কষেছিল এক যুবক। স্কুলের প্রধান শিক্ষককে নিজের মামা হিসেবে পরিচয় দিয়ে সে ওই ব্যাক্তির থেকে টাকা নেয় বলেও অভিযোগ। প্রতারিত ব্যাক্তি শুক্রবার মেদিনীপুর কোতয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ অনির্বান বসু নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৪ ০১:১৮
Share:

মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে (বালক) চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার ছক কষেছিল এক যুবক। স্কুলের প্রধান শিক্ষককে নিজের মামা হিসেবে পরিচয় দিয়ে সে ওই ব্যাক্তির থেকে টাকা নেয় বলেও অভিযোগ। প্রতারিত ব্যাক্তি শুক্রবার মেদিনীপুর কোতয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ অনির্বান বসু নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতের বাড়ি মেদিনীপুরের নবীনাবাগে। শনিবার ধৃতকে মেদিনীপুর আদালতে তোলা হলে তাঁর চারদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়।

Advertisement

ধৃত যুবক ওই ব্যক্তিকে জানায়, মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল (বালক)-এর প্রধান শিক্ষক তাঁর মামা। ফলে, ওই স্কুলে চাকরি পেতে অসুবিধে হবে না। এমনকী, অনির্বান ওই ব্যাক্তিকে জাল নিয়োগপত্র দেয় বলেও অভিযোগ। যে নিয়োগপত্রে জেলাশাসক, স্কুলের প্রধান শিক্ষকের জাল সাক্ষর রয়েছে। মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের (বালক) প্রধান শিক্ষক দিলীপ দাস সোমবার বলেন, “আমার কোনও ভাগ্নে নেই। যখনই শুনি, একজন আমাকে নিজের মামা বলে পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করছে, চাকরি দেওয়ার নাম করে এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকাও নিয়েছে, তখনই বিষয়টি পুলিশকে জানাই। ওই ব্যক্তিও পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।” তাঁর কথায়, “এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। পুলিশের উচিত, সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা।”

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় শেফালি দাস নামে এক গৃহবধূ কলেজিয়েট স্কুলের (বালক) প্রধান শিক্ষক দিলীপবাবুকে ফোন করেন। ওই দিন উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা ছিল। দিলীপবাবু উচ্চ মাধ্যমিকের সেন্টার সেক্রেটারির দায়িত্ব রয়েছেন। ওই দিন বাড়ি ফেরার পরপরই শেফালিদেবীর ফোন আসে। ওই গৃহবধূ জানতে চান, ‘আপনি কী কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক? আমি আপনার সঙ্গে দেখা করতে চাই।’ দিলীপবাবু তখন তাঁর সঙ্গে দেখা করার কারণ জানতে চান? জবাবে শেফালিদেবী জিজ্ঞেস করেন, ‘আমার স্বামী কী আপনার স্কুলে চাকরি করছেন।’ প্রধান শিক্ষক এসব শুনে হতবাক। সব কিছু জেনে শেফালিদেবী এবং তাঁর স্বামী জয়দেব দাসকে নিজের বাড়িতে ডেকে পাঠান দিলীপবাবু। এ দিন প্রধান শিক্ষক বলেন, “দু’জনে এসে জাল নিয়োগপত্র-সহ কিছু কাগজপত্র আমার হাতে তুলে দেন। পরে সমস্ত বিষয় জানতে পারি।”

Advertisement

জয়দেববাবুর বাড়িও মেদিনীপুরের নবীনাবাগে। তিনি বলেন, “সব মিলিয়ে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা নিয়েছে। আমি রং মিস্ত্রির কাজ করি। ও বলেছিল, স্কুলে চাকরি করে দেবে। এদিক-সেদিক থেকে ওই টাকা জোগাড় করে দিই।” প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাল নিয়োগপত্র দিয়ে ধৃত যুবক জয়দেবকে বলেছিল, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হিসেবে তাঁর চাকরি হয়ে গিয়েছে। তবে এখনই তাঁকে স্কুলে গিয়ে কারও সঙ্গে দেখা করতে হবে না। সে যা বলবে, জয়দেব যেন তাই করেন। এই সময়ের মধ্যে জয়দেবকে দিয়ে কিছু কাজও করিয়েছে অনির্বান। জয়দেববাবুর কথায়, “ও কখনও বলেছে, বাজার করে নিয়ে আসতে। সেই মতো বাজারও করেছি। কখনও বলেছে, ভোরে স্কুলে গিয়ে ক’টা ঘরের তালা খোলা হয়েছে দেখে আসতে। সেই মতো দেখেও এসেছি।” ধৃত যুবক জানিয়ে ছিল, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হিসেবে জয়দেব মাসে প্রায় ১৯ হাজার টাকা বেতন পাবেন।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, স্বামীর কথাবার্তায় সন্দেহ হওয়ায় শেফালিদেবী প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। শেফালিদেবীর মনে হয়, চাকরি দেওয়ার নাম করে কেউ তাঁর স্বামীর সঙ্গে প্রতারণা করছে। ধৃত অন্য কোনও প্রতারণার ঘটনার সঙ্গে জড়িত কি না, তদন্তে তাও দেখছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement