ঝাড়গ্রাম মহকুমা আদালত

স্থায়ী কর্মী ছাড়াই চালু হল এজলাস

জঙ্গলমহলের বিচার ব্যবস্থায় গতি আনতে ঝাড়গ্রাম মহকুমা আদালতের এজলাস সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকারের বিচার বিভাগীয় দফতর। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শুক্রবার ঝাড়গ্রামে দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের এজলাসটি (এডিজে-২ কোর্ট) চালু হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৪ ০০:৫১
Share:

জঙ্গলমহলের বিচার ব্যবস্থায় গতি আনতে ঝাড়গ্রাম মহকুমা আদালতের এজলাস সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকারের বিচার বিভাগীয় দফতর। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শুক্রবার ঝাড়গ্রামে দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের এজলাসটি (এডিজে-২ কোর্ট) চালু হল। এ দিনই দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক হিসেবে কার্যভার নিলেন বিচারক বিভাসরঞ্জন দে। এ দিন ঝাড়গ্রাম প্লিডার্স বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুমন সেন আনুষ্ঠানিক ভাবে নতুন বিচারককে স্বাগত জানান।

Advertisement

আদালত সূত্রে খবর, সোমবার ঝাড়গ্রামে দ্বিতীয় উপ মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের (এসিজেএম-২ কোর্ট) এজলাসটিও চালু হবে। দ্বিতীয় এসিজেএম পদে আগামী সোমবার একজন বিচারক কার্যভার নেবেন বলে সূত্রের খবর। কিন্তু বিচারক নিয়োগ হলেও নতুন দু’টি এজলাসের জন্য এখনও স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হয়নি। ফলে কী ভাবে নতুন দু’টি এজলাসে বিচারের কাজ চলবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় আইনজীবী মহল। এ দিন চালু হওয়া এডিজে-২ আদালতের এজলাসে এখনও আইনজীবীদের বসার ব্যবস্থা করা হয়নি। একজন স্টেনোগ্রাফার ছাড়া স্থায়ী কোনও কর্মী নেই। নতুন এসিজেএম-২ আদালতটির এজলাসেরও একই অবস্থা।

ঝাড়গ্রাম মহকুমা আদালতে অতিরিক্ত বিচারক ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক আদালত-কর্মী নিয়োগের দাবিতে গত ৬ জানুূয়ারি থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত আইনজীবীদের দু’টি বার অ্যাসোসিয়েশন এবং মুহুরিদের একটি ল-ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশনের সমন্বয়ে গঠিত ‘জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি’ টানা ৬৪ দিন কর্মবিরতি করেছিল। জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির সভাপতি সতীন্দ্রনাথ পতি চৌধুরী বলেন, “হাইকোর্ট আমাদের দাবি বিবেচনা করে আরও দু’টি এজলাস মঞ্জুর করেছে। কিন্তু সেটা কী ভাবে সম্ভব সেই প্রশ্ন রয়েছে।”

Advertisement

জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি সূত্রে জানানো হয়েছে, এমনিতেই আদালতের বিভিন্ন এজলাসে কর্মী সংখ্যা অপ্রতুল। অস্থায়ী কর্মী দিয়ে কাজ চালানো হয়। নতুন দু’টি এজলাসের জন্যও (এডিজে-২ কোর্ট এবং এসিজেএম-২ কোর্ট) কোনও স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হয় নি। সতীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “অবিলম্বে নতুন দু’টি এজলাসে স্থায়ী কর্মী নিয়োগের জন্য ও বিচারকাজ চালানোর মতো পরিকাঠামো তৈরি করার জন্য আমরা জেলা জজকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।”

জঙ্গলমহলের কেন্দ্রভূমি ঝাড়গ্রাম মহকুমা আদালতের অধীনে ৯টি থানার দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলাগুলির বিচার হয়। এতদিন ঝাড়গ্রাম মহকুমা আদালত প্রাঙ্গণে একটি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের আদালত-সহ মোট ৫টি এজলাস ছিল। ওই পাঁচটি এজলাসে বিচারকের সংখ্যা পাঁচ। এবার এজলাস সংখ্যা বেড়ে হচ্ছে সাত। দু’টি নতুন এজলাস বাড়ায় বিচারকের সংখ্যাও বেড়ে সাতজন হচ্ছে।

ঝাড়গ্রাম মহকুমা আদালতের পুরনো ৫টি এজলাসে বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে প্রায় ছয় হাজার মামলা। আদালতের বিভিন্ন এজলাসের উপযুক্ত ভবন রয়েছে। কিন্তু দ্রুত বিচার সম্পন্ন করার মতো পরিকাঠামোই নেই ঝাড়গ্রাম আদালতে। এর ফলে, বিচার পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় বিচারপ্রার্থীদের। আবার জঙ্গলমহলের ঝাড়গ্রাম মহকুমা আদালতটিকে কেন্দ্র করে ঝাড়গ্রামকে পৃথক বিচারবিভাগীয় জেলা (জুডিশিয়্যাল ডিস্ট্রিক) করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। এ জন্য প্রয়োজনীয় ইন্সপেকশনের কাজও হয়ে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন