সিপিএমের মিছিলের পরই সংঘর্ষ চরকায়, জখম ১৪

সিপিএমের মিছিলের পরই গোলমাল বাধল কেশপুরের চরকা গ্রামে। সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে জখম হলেন দু’পক্ষের অন্তত ১৪ জন। রবিবার এলাকায় সিপিএমের মিছিলের পরে রাতে এবং সোমবার সকালে তৃণমূলের লোকজন গ্রামে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের জখম ৮ জনকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে। দু’দলই পরস্পরের বিরুদ্ধে পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ এক তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতারও করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৪ ০২:২৩
Share:

কেশপুরের সংঘর্ষে জখমরা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। —নিজস্ব চিত্র।

সিপিএমের মিছিলের পরই গোলমাল বাধল কেশপুরের চরকা গ্রামে। সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে জখম হলেন দু’পক্ষের অন্তত ১৪ জন।

Advertisement

রবিবার এলাকায় সিপিএমের মিছিলের পরে রাতে এবং সোমবার সকালে তৃণমূলের লোকজন গ্রামে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের জখম ৮ জনকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে। দু’দলই পরস্পরের বিরুদ্ধে পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ এক তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতারও করেছে। ঘাটালের বামপ্রার্থী সন্তোষ রাণার অভিযোগ, “পরিকল্পনামাফিক হামলা চালানো হয়েছে। আগের দিন চরকায় আমাদের মিছিল হয়েছে। সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতেই এই হামলা।” অভিযোগ উড়িয়ে জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি বলেন, “শুরুতে সিপিএমই আমাদের দলের এক কার্যালয়ে হামলা চালায়। তারপর গোলমাল বাধে। সিপিএম যদি কেশপুরকে ফের অশান্ত করার চেষ্টা করে তাহলে মানুষই জবাব দেবে।”

গোলমালে জড়িয়েছে কেশপুরের সিপিএম নেতা এন্তাজ আলির নাম। তৃণমূলের তরফে পুলিশে যে লিভিযোগ দায়ের হয়েছে, তাতে ওই সিপিএম নেতা আছে। এন্তাজের দেশের বাড়ি চরকায়। বামপ্রার্থী সন্তোষ রাণার সমর্থনে রবিবারের মিছিলেও এন্তাজ ছিলেন। আর ছিলেন স্থানীয় সিপিএম বিধায়ক রামেশ্বর দোলুই। রাজ্যে পালাবদলের পরই মামলায় নাম জড়ানোয় এলাকা ছাড়েন এন্তাজ। এখন অবশ্য তিনি জামিনে মুক্ত। এন্তাজের অভিযোগ, “তৃণমূল অতর্কিতে গ্রামে হামলা চালায়। আমাদের লোকেদের ব্যাপক মারধর করা হয়। পরে গ্রামবাসীদের প্রতিরোধে ওরা পিছু হটে।”

Advertisement

তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, শুরুতে আক্রমণ করে সিপিএমই। দলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পান বলেন, “খসলায় আমাদের দলের একটি কার্যালয় রয়েছে। এন্তাজ আলির নেতৃত্বে সিপিএমের লোকজন আচমকাই ওই কার্যালয়ে আক্রমণ করে। হামলা চালায়।” ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে তাঁর নাম থাকা প্রসঙ্গে এন্তাজের বক্তব্য, “আমি হামলা চালিয়েছি? সত্যি-মিথ্যে গ্রামের মানুষ জানে।”

সোমবার পুলিশি পাহারায় শান্তিপূর্ণ ভাবেই সিপিএমের মিছিল হয় চরকায়। গোলমাল বাধে গভীর রাতে। সিপিএমের অভিযোগ, গ্রাম ঘিরে ফেলে তৃণমূলের লোকজন। যাদের বেশিরভাগই বহিরাগত। এ দিন ভোরে কয়েকজন সিপিএম কর্মী-সমর্থক চা দোকানে এসেছিলেন। তৃণমূলের লোকজন অতর্কিতে তাঁদের উপর হামলা চালায়। মহব্বত হোসেন, ইয়ার খান-সহ সিপিএমের ৪ জন কর্মী-সমর্থক জখম হয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তৃণমূলের জখমদের মধ্যে আছেন মিরাজ হোসেন-সহ ৪ জন।

লোকসভার ভোট যত এগোচ্ছে, ততই উত্তেজনা ছড়াচ্ছে কেশপুরে। গেল মাসেও চরকায় তৃণমূল-সিপিএম সংঘর্ষ বেধেছিল। ঘাটালের বামপ্রার্থী সন্তোষবাবু বলেন, “সোমবার ভোরেই জানতে পারি, চরকায় গোলমাল হচ্ছে। তৃণমূলের লোকজন হামলা করেছে। ১০-১২টা ঘরে লুঠপাট চালানো হয়েছে।” অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতির বক্তব্য, “কেশপুরে সন্ত্রাসের পরিবেশ নেই। সর্বত্র উন্নয়নমূলক কাজকর্ম চলছে তা সিপিএমের পছন্দ হচ্ছে না। তাই তারা নতুন করে অশান্তে ছড়াতে চাইছে।”

ভোটের মুখে রাজনৈতিক সংঘর্ষ এড়াতে ইতিমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় রুটমার্চ শুরু হয়েছে। রাতে তল্লাশিও চলছে। তবে, এ সবেও যে অশান্তিতে ছেদ পড়ছে না, চরকার ঘটনাই তার প্রমাণ। পুলিশ জানিয়েছে, গোলমালের পর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। দু’তরফের অভিযোগই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন