সাজাও আলোয় ধরিত্রীরে... দীপাবলির সাজ মেদিনীপুর শহরের কেরানিটোলার এক আবাসনে। ছবি: কিংশুক আইচ।
কালীপুজোতেও থিমের লড়াইয়ে জমজমাট জেলার সদর শহর মেদিনীপুর। এক সময় শহরে হাতে গোনা কয়েকটিই বড় বাজেটের কালীপুজো হত। সময় পাল্টেছে। এখন শহরে বড় বাজেটের কালীপুজোর সংখ্যাও বেড়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ছোট বাজেটের কালীপুজোর সংখ্যাও। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় হতে শুরু করে। রাত যত গড়িয়েছে, ভিড়ও তত বেড়েছে। ভিড় টানার নিরিখে একে অপরকে টেক্কা দিতে যেন চেষ্টার কসুর বাকি রাখতে চাননি কোনও পুজোর উদ্যোক্তারাই! বুধবার বেশ কয়েকটি পুজোর উদ্বোধন হয়। বাকি পুজোগুলোর উদ্বোধন হয় এদিন। থিমের পাশাপাশি শহরের পুজোয় রয়েছে সাবেকিয়ানাও।
শহরের জেলপুকুর পূর্ব পাড়া অধিবাসীবৃন্দের পুজোর এ বার ৬২ তম বর্ষ। কাল্পনিক মন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। পুজো উপলক্ষে ‘উদয়ন’ নামে একটি পত্রিকাও প্রকাশিত হয়েছে। এলআইসি মোড়ের সুচেতনার পুজোর অন্যতম আকর্ষণ ধুনুচি নাচ প্রতিযোগিতা। আজ, শুক্রবার সন্ধ্যায় এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। রাজাবাজার ত্রিশক্তি ক্লাবের পুজো ঘিরেও এলাকায় উৎসবের আবহ তৈরি হয়েছে। পঞ্চুরচকের উচ্ছ্বন্ন ক্লাবের মণ্ডপ তৈরি হয়েছে কাল্পনিক মন্দিরের আদলে। রাজারপুকুর মিলন সঙ্ঘের পুজোর উদ্বোধন হয়েছে বুধবারই।
বার্জটাউন আলটিয়াস ক্লাবের পুজোর এ বার অষ্টম বর্ষ। পুজোর দিনগুলোয় থাকছে আতসবাজি প্রদর্শনী, বাউল- ঝুমুর গান, ম্যাজিক-শো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ দিন সন্ধ্যায় পুজোর উদ্বোধন হয়। ভাতৃসঙ্ঘ ক্লাবের পুজোর প্রধান আকর্ষণ ২২ ফুটের প্রতিমা। এখানে প্রতিমা থাকে গরুর গাড়ির উপর। দশমীর পরের দিন থেকেই প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু হয়। শহরের বটতলাচক, নিমতলা, কেরানিতলা, রাঙামাটি, নতুনবাজার, বল্লভপুর, সিপাইবাজার, ছোটবাজার, বড়বাজার, স্কুলবাজার, রাজাবাজার, কোতবাজার প্রভৃতি এলাকাতেই থিম পুজো হয়েছে। শহরের আধিকাংশ পুজো মণ্ডপের চারপাশে রঙবেরঙের আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে। কোথাও টুনি কোথাও বা এলইডি আলোর ঝলকানি চোখে পড়ছে। শহরের বিভিন্ন কালী মন্দিরেও ছিল সাজ সাজ রব।
পুজো মানেই মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে বেড়ানো। নানা সাজের প্রতিমা, আলো দেখা। সারা বছরের দিন যাপনে অন্য মাত্রা যোগ করে এই আলোর উৎসব। শহরে পুজোর নানা থিমে আলোর উৎসব এ বার যেন আরও রঙিন।