জঙ্গলমহল

সরকারের সাফল্য প্রচারে লোকশিল্পীরা

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় আট হাজার লোকশিল্পীকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের জঙ্গলমহলকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সরকারি ভাতার বিনিময়ে এ বার জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত গ্রামে-গঞ্জে সরকারের গুণগান করবেন লোকশিল্পীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:০৫
Share:

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় আট হাজার লোকশিল্পীকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের জঙ্গলমহলকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সরকারি ভাতার বিনিময়ে এ বার জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত গ্রামে-গঞ্জে সরকারের গুণগান করবেন লোকশিল্পীরা। কখনও ঝুমুর গানে তো কখনও ছৌ নাচের মাধ্যমে শিল্পীরা বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কথা বলবেন। শান্তি রক্ষার আবেদনও জানাবেন।

Advertisement

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাজ্যের লোকশিল্পীদের সম্মান ও আর্থিক সাহায্য করার জন্য রাজ্য ব্যাপী লোকপ্রসার প্রকল্প চালু করেছে। সরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিল্পীরা রাজ্য সরকারের উন্নয়নের প্রচারও করছেন। কিন্তু ঘটনা হল, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় যে সমস্ত শিল্পীদের সরকারি সুযোগ সুবিধা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তাঁদের বেশির ভাগই জঙ্গলমহলের বাসিন্দা। প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গলমহলের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে ফের মাওবাদীরা উঁকিঝঁুকি মারছে বলে খবর। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মাওবাদীদের নামাঙ্কিত পোস্টার-ব্যানারও পাওয়া যাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে জঙ্গলমহলের লোক শিল্পীদের গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টি বিশেষ তাত্‌পর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে প্রশাসনিক মহলেরই একাংশ। এ প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ বলেন, “লোকশিল্পীরা শিল্পকলার মাধ্যমে এলাকাবাসীকে আনন্দ দেওয়ার পাশাপাশি, সচেতন করবেন। শিল্প-বিনোদন-সংহতির সমন্বয়ে সকলেই উপকৃত হবেন।”

গত ২২ নভেম্বর ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে লোকশিল্পীদের নাম নথিভুক্ত করার জন্য জেলাস্তরের শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। ওই শিবিরে ৩,৬০০ জন শিল্পীর নাম নথিভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে ২,৩৭০ জন ঝাড়গ্রাম মহকুমার মাওবাদী প্রভাবিত এলাকার বাসিন্দা। প্রশাসন সূত্রে খবর, নথিভুক্ত ওই ৩,৬০০ জনের আবেদনপত্র খতিয়ে দেখার পরে যাঁরা যোগ্য বিবেচিত হবেন, তাঁদের লোকপ্রসার প্রকল্পের আওতায় সরকারি স্বীকৃতি দেওয়া হবে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে লোকশিল্পী খোঁজার জন্য আরও নাম নথিভুক্তকরণ শিবির করা হবে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।

Advertisement

জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকাারিক কৌশিক নন্দীর অবশ্য বক্তব্য, “ঝাড়গ্রাম মহকুমায় লোকশিল্প ও সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রটি অনেক বড়। সেই কারণে লোকশিল্পীর তালিকায় ঝাড়গ্রামের প্রাধান্য থাকাটা অস্বাভাবিক নয়।” প্রশাসনিক মহলের দাবি, এই জন্যই ঝাড়গ্রামে জেলাস্তরের নাম নথিভুক্তকরণ শিবিরটির আয়োজন করা হয়েছিল।

ইতিমধ্যে লোকপ্রসার প্রকল্পে জেলার ১,১৩৫ জন লোকশিল্পী প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে সরকারি ভাতা পাচ্ছেন। সেখানেও এগিয়ে রয়েছেন মাওবাদী প্রভাবিত এলাকার শিল্পীরা। ঝাড়গ্রাম মহকুমায় ভাতা প্রাপক শিল্পীর সংখ্যা ৪৩১ জন। সদর মহকুমায় ৩০২ জন, খড়্গপুর মহকুমায় ৩৫৭ জন ও ঘাটাল মহকুমায় ৪৫ জন লোকশিল্পী সরকারি ভাতা পাচ্ছেন। ভাতা প্রাপকদের নিয়মিত সরকারি অনুষ্ঠান দেওয়া হচ্ছে। সরকারি অনুষ্ঠান করলে পৃথকভাবে টাকা পাচ্ছেন তাঁরা।

সম্প্রতি ঝাড়গ্রামে লোকশিল্পীদের নাম নথিভুক্তকরণ শিবিরে এসে রাজ্যের ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প বিষয়ক মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ স্পষ্টতই জানিয়েছিলেন, “পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মোট আট হাজার লোকশিল্পীকে সরকারি ভাবে স্বীকৃতিদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্বীকৃতি প্রাপ্ত শিল্পীরা মাসিক আর্থিক ভাতা পাবেন। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন-কাজের প্রচার করবেন লোকশিল্পীরা।”

উদ্যোগী পুলিশ। পুলিশের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ হল শালবনিতে। রবিবার শালবনির পিড়াকাটায় এক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এখানেই গরিব মানুষদের শীতবস্ত্র দেওয়া হয়। শালবনি থানার উদ্যোগে এবং গ্রামরক্ষী বাহিনীর সহযোগিতায় এই কর্মসূচির আয়োজন। উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা, জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ, জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ, মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি, শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো প্রমুখ। ছিলেন শালবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নেপাল সিংহও। শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি শেষে সকলকে বসিয়ে খিচুড়িও খাওয়ানো হয়। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই এই কর্মসূচি বলে পুলিশ জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন