রাজ্যের কারা ও ক্ষুদ্র কুটির শিল্পমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। —ফাইল চিত্র।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এ বার আরও বড় সমস্যায় পড়লেন রাজ্যের কারা ও ক্ষুদ্র কুটির শিল্পমন্ত্রী তথা বোলপুরের তৃণমূল বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিংহ। আর তার পরেই জামিন নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন তিনি। আগেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছিল। তবে রাজভবনের অনুমোদন না থাকায় আদালত তা গ্রহণ করতে পারেনি। বুধবার সেই জট অবশেষে কেটে গেল। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কারামন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর অনুমতি দিয়েছেন। আর সেই অনুমোদন মিলতেই নড়েচড়ে বসেছে তৃণমূল। কারণ, এর ফলে কারামন্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতের দরজা খুলে গেল।
বুধবার ইডি-র বিশেষ আদালত চন্দ্রনাথ সিংহের নামে সমন জারির নির্দেশ দিয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাঁকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ, আগামী ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে হবে মন্ত্রীকে। ফলে কার্যত সময়সীমার মধ্যে জামিন না নিলে বড় বিপদে পড়তে পারেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতে আনন্দবাজার ডট কমকে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে মন্ত্রী বলেছেন, “আজকের পর আমাকে জামিন নিতে হবে। সব কিছু শুনেছি, কিন্তু কোনও কাগজ এখনও হাতে পাইনি। তাই কাগজপত্র হাতে এলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ করব।” অর্থাৎ আদালতের নির্দেশ মেনে আত্মসমর্পণ ও জামিনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অনেক দিন ধরেই ইডির নজরে ছিলেন চন্দ্রনাথ। তাঁর বাড়িতে একাধিক বার অভিযান চালানো হয়েছিল। সেই সময় মন্ত্রীর বাড়ি থেকে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়, যার সঠিক হিসাব দিতে পারেননি তিনি। পাশাপাশি ইডির দাবি, তাঁর অ্যাকাউন্টে প্রায় দেড় কোটি টাকার অস্বচ্ছ লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে। তদন্তকারীরা অনুমান করছেন, ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ওই টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছিল।
বুধবার রাজভবনের সিদ্ধান্তে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের অস্বস্তি যে আরও বাড়ল তা স্পষ্ট। ইতিমধ্যেই বর্তমান ও প্রাক্তন মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে একের পর এক পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি। এ বার মন্ত্রীর পদে থেকেও চার্জশিটের জালে জড়ালেন চন্দ্রনাথ। আদালতের নির্দেশ মেনে আত্মসমর্পণ ও জামিন নেওয়াই এখন তাঁর প্রধান লক্ষ্য।