West Bengal Legislative Assembly

বিজেপির আপত্তিই মেনে নিলেন স্পিকার, বিধানসভায় আধ ডজন মন্ত্রীকে ভোট দিতে দিলেন না বিমান

বুধবার ভোটাভুটি পর্বে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অধিবেশন কক্ষের দরজা বন্ধ করার নির্দেশ দেন। বিধায়কদের স্লিপ বিতরণের পর ভোটাভুটির সময় অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেন মন্ত্রীরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৬:১২
Share:

নির্দিষ্ট সময়ে অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ না করায় রাজ্যের কয়েক জন মন্ত্রীকে ভোটাভুটিতে অংশ নিতে দেননি স্পিকার। —ফাইল চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ‘ক্রিমিনাল জাস্টিস ডেলিভারি সিস্টেম’ নিয়ে দু’দিনের আলোচনা শেষে ভোটাভুটি চেয়েছিল বিজেপি পরিষদীয় দল। শেষ পর্যন্ত সেই ভোটাভুটিতে অংশ নিতে পারলেন না রাজ্যের হাফ ডজন মন্ত্রী। ভোট দিতে পারলেন না শাসকদলের আরও দু’জন বিধায়ক। বুধবার অধিবেশনের ভোটাভুটি পর্বে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অধিবেশন কক্ষের দরজা বন্ধ করে দিতে নির্দেশ দেন। তার পরেই শুরু হয় শাসক ও বিরোধী দলের বিধায়কদের মধ্যে ভোটাভুটির জন্য স্লিপ বিতরণ। স্লিপ বিতরণের পর ভোটাভুটির সময় অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, পর্যটন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন ও দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু। তাঁদের সঙ্গে অধিবেশন কক্ষে ঢোকেন উলুবেড়িয়া উত্তরের বিধায়ক নির্মল মাঝি। তাঁদের অধিবেশন কক্ষে ঢুকতে দেখেই প্রতিবাদ জানান বিজেপি বিধায়করা। তাঁরা স্পিকারকে সব জানিয়ে দেন, স্লিপ বণ্টনের সময় বাইরে থাকা মন্ত্রী বিধায়করা ভোটাভুটিতে অংশ নিলে তাঁরাও ওয়াক আউট করবেন। এই সময় বিধানসভা কক্ষে প্রবেশ করতে যান রাজ্যের আরও দুই মন্ত্রী। তাঁরা হলেন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন। অন্য একটি দরজা দিয়ে ঢুকতে গিয়ে স্পিকারের নির্দেশ শুনতে পান জোড়াসাঁকোর বিধায়ক বিবেক গুপ্ত। তার পরেই পার্থ-তাজমুল-বিবেক অধিবেশন কক্ষের বাইরেই দাঁড়িয়ে যান।

Advertisement

এর পরেই বিজেপি পরিষদীয় দল জানতে চায়, বাইরে থাকা মন্ত্রীরা অধিবেশন কক্ষে রয়েছেন কী ভাবে? অভিযোগ তুলে বিজেপি পরিষদীয় দল ওয়াকআউটের সিদ্ধান্ত নেয়। বিজেপির বেশির ভাগ বিধায়ক স্লোগান দিতে দিতে অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান। শেষে স্পিকার বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতন মনোজ টিগ্গাকে অনুরোধ করেন, তাঁরা যেন ওয়াকআউট না করেন। স্পিকার জানান, বাইরে থাকা কোনও মন্ত্রী বা বিধায়ককে ভোটদানে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি। আবারও অধিবেশন কক্ষে ফেরেন বিজেপি বিধায়করা। তার পরেই স্পিকার ফলাফল ঘোষণা করেন। ১০১-৪২ ভোটে পাশ হয় ওই প্রস্তাব। কিন্তু, মন্ত্রীদের এ হেন দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন শাসকদলের বিধায়করাও। শাসকদলের এক বিধায়কের কথায়, ‘‘এলাকার মানুষ যখন ভোট দিয়ে আমাদের বিধানসভায় পাঠিয়েছে তখন আমাদের উচিত বিধানসভার প্রতিটি নিয়মকানুন মেনে চলা। এ ক্ষেত্রে আমাদের মন্ত্রী-বিধায়করা যে আচরণ করেছেন তা কখনওই সমর্থনযোগ্য নয়।’’

তার আগে ভোটাভুটি চাওয়ার পরেও এক দফা নাটক হয় বিধানসভা কক্ষের অন্দরে। ভোটাভুটির স্লিপ বিলির সময় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করা বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসকে নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিজেপির শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ ও আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্রিমিত্রা পাল। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, অধিবেশন কক্ষে বিজেপির বিধায়ক বলে পরিচিত বিশ্বজিৎকে কেন বিরোধী দলের স্লিপ দেওয়া হচ্ছে না? কিন্তু ভোটাভুটির সময় মন্ত্রীদের অনুপস্থিতি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হলে বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন