CPM

হলদিয়ার সিপিএম বিধায়ক দল ছাড়লেন, জল্পনা বিজেপি-যোগের

বামশিবির জেনেছে, অমিত শাহের মেদিনীপুরের জনসভা থেকে আরও এক বিধায়ক গেরুয়া শিবিরে যোগ দিতে পারেন। সূত্রের খবর, বাম-কংগ্রেস পরিষদীয় দলের অন্তত সাতজন বিধায়ক বিজেপি-র দিকে পা বাড়িয়ে রয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২০ ২০:৪৫
Share:

—ফাইল চিত্র।

প্রায় প্রতিদিনই তৃণমূলে ভাঙন ধরিয়ে শক্তিপ্রদর্শন করছে বিজেপি। শাসকদলের ভাঙনে এতদিন উল্লসিত হচ্ছিল বাম-কংগ্রেস। কারণ, গত কয়েক বছরে মুখ‌্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের জোয়ারে তপসিয়ার তৃণমূল ভবনে বাম-কংগ্রেসের একাধিক বিধায়ক যোগ দিয়েছেন জোড়াফুলে। তাই শুভেন্দু অধিকারী, জিতেন্দ্র তিওয়ারি, শীলভদ্র দত্ত-সহ একঝাঁক তৃণমূল বিধায়কের দল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগদানের খবরে তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছিলেন জোটের নেতারা।

Advertisement

কিন্তু এবার বাম-কংগ্রেস পরিষদীয় দলের পালেই বাঘ পড়েছে। শুক্রবার হলদিয়ার বাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন করে সিপিএম ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। সম্ভবত তিনি বিজেপি-তেই যোগ দেবেন। কারণ, তাঁর স্বামী ইতিমধ্যেই বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন এবং তাপসী বলেছেন, ‘‘আমি আমার স্বামীর পথেই চলব।’’ মনে করা হচ্ছে, শনিবার মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় তাপসী বিজেপি-তে যোগ দিতে পারেন।

বামশিবির জেনেছে, অমিত শাহের মেদিনীপুরের জনসভা থেকে আরও এক বিধায়ক গেরুয়া শিবিরে যোগ দিতে পারেন। সূত্রের খবর, বাম-কংগ্রেস পরিষদীয় দলের অন্তত সাতজন বিধায়ক বিজেপি-র দিকে পা বাড়িয়ে রয়েছেন। ২০১৯ সালের ২৯ মে হেমতাবাদের সিপিএম বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায় বিজেপি-তে যোগদান করেছিলেন। কিন্তু গত ১৩ জুলাই রাতে হেমতাবাদের রাস্তায় দেবেন্দ্রনাথের ঝুলন্ত ‌মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তার আগে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে সিপিএম ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন বিধায়ক খগেন মুর্মূ। ঘটনাপ্রবাহে তিনি লোকসভা ভোটে দজিতে সাংসদও হয়েছেন। তবে খগেন এবং দেবেন্দ্রনাথ ছাড়া এখনও অবধি ‘গেরুয়া আগ্রাসন’ থেকে অক্ষতই ছিল বাম শিবির। কিন্তু শোনা যাচ্ছে, শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের সঙ্গে বাম বিধায়কদেরও বিজেপি-তে নিয়ে যেতে পারেন। সেই সম্ভাবনার কথা ভেবে কি চিন্তিত আলিমুদ্দিন ষ্ট্রিট? বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, “বাম আমলে দলবদলের রাজনীতি কখনওই প্রশ্রয় পায়নি। কিন্তু বর্তমানে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারি দল এই ধরনের রাজনীতিতে ইন্ধন দিয়ে চলেছে। তবে কেউ বয়স হয়েছে বলে দলবদল করে বিজেপি-তে যেতেই পারেন। তাতে বাম আন্দোলনের কোনও ক্ষতি হবে না।”

Advertisement

আরও পড়ুন: শনিবার কলকাতা ছাড়ার আগে অমিতের বৈঠক এনআইএ-র সঙ্গে

আরও পড়ুন: সোমবার সশরীরে স্পিকার সকাশে শুভেন্দু, শনিবার যোগদান পাকা

প্রসঙ্গত, মেদিনীপুরের সভায় বিজেপি-তে যোগদানের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া পশ্চিমের সিপিএম বিধায়ক ইব্রাহিম আলি। তাঁর কথায়, “বাম রাজনীতি করতে এসেছি নীতি-আদর্শের জন্য। যেই রাজনীতি শিখিয়েছে বিভাজনের নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে। তাই বিজেপি-তে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।” তৃণমূল এবং বিজেপি— দু’দল থেকেই যোগদানের প্রস্তাব পেয়েছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের চাকুলিয়ার বিধায়ক আলি ইমরান রামজ (ভিক্টর)। বাম নেতাদের বিজেপি বা অন্য রাজনৈতিক দলে যোগদান প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় গত কয়েক বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে ঘোড়া কেনাবেচার রাজনীতি শুরু করেছে তৃণমূল। সেভাবেই আমাকেও তৃণমূলে যোগদান করানোর চেষ্টা হয়েছে। সম্প্রতি তো প্রশান্ত কিশোর আমাকে যোগদান করার জন্য লোভনীয় প্রস্তাব নিয়ে হাজিরও হয়েছিলেন। কিন্তু সফল হননি। তৃণমূলের অস্ত্রেই এখন বিজেপি তৃণমূলকে ঘায়েল করছে। বিজেপি-ও আমাকে কেনার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আসল বামপন্থীরা বিক্রি হয় না। বিজেপি এবং তৃণমূলকে তা বুঝতে হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement