দাড়িভিট তাকিয়ে দেবশ্রীর দিকে

দেবশ্রীর সমর্থনে রায়গঞ্জে প্রচারে এসেছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। তখনই তিনি বলে যান, জিতলে দেবশ্রীকে মন্ত্রী করা হবে। সে কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন রায়গঞ্জের লোকজনই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৯ ০৩:৩৯
Share:

দেবশ্রী চৌধুরী

গত বছর ২০ সেপ্টেম্বরের আগে তিনি ছিলেন শুধুই বালুরঘাটের মেয়ে। কিন্তু ওই দিন দাড়িভিট স্কুলের সামনে গুলিতে দুই যুবকের মৃত্যুর ঘটনা যেন গোটা অঞ্চলের রাজনৈতিক ছবিটা বদলে দেয়। কিছু দিনের মধ্যে ওই দুই যুবক রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মণের বাড়িতে যায় বিজেপির প্রতিনিধি দল। সেই দলেই ছিলেন বালুরঘাটের মেয়ে দেবশ্রী চৌধুরী। তার পর থেকে কখনও দাড়িভিটের সঙ্গ ছাড়েননি তিনি। লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার পরে প্রচারও শুরু করেন সেখান থেকে। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি ভবনে সেই দেবশ্রী যখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিচ্ছেন, তখন দর্শকাসনে বসে রাজেশ-তাপসের পরিবার।

Advertisement

দেবশ্রীর সমর্থনে রায়গঞ্জে প্রচারে এসেছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। তখনই তিনি বলে যান, জিতলে দেবশ্রীকে মন্ত্রী করা হবে। সে কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন রায়গঞ্জের লোকজনই। দেবশ্রী মন্ত্রী হচ্ছেন, এই খবর চাউর হতেই শহরের পথে নেমে পড়েন বিজেপি কর্মীরা। লাড্ডু খাওয়ানোর পাশাপাশি গেরুয়া তিলক পরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল পথচারীদের। এই উৎসব ছড়িয়ে পড়ে ডালখোলা, কালিয়াগঞ্জের বিভিন্ন জায়গাতেও। একই রকম উচ্ছ্বাস দেখা যায় পড়শি জেলা সদর বালুরঘাটেও। তাদের অবশ্য আনন্দ অন্য কারণে। অনেকেই বলাবলি করছেন, দেবশ্রী রায়গঞ্জের সাংসদ তো কী, তিনি তো বালুরঘাটের মেয়ে।

বালুরঘাটের খাদিমপুর গার্লস স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, তার পরে বালুরঘাট কলেজ থেকে স্নাতক হন দেবশ্রী। কলেজে পড়ার সময়েই অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) হয়ে রাজনীতিতে হাতেখড়ি তাঁর। এই কলেজেরই আর এক ছাত্র এবং এবিভিপি-তে দেবশ্রীর সহযোগী সুকান্ত মজুমদারও এ বারে বিজেপির টিকিটে প্রার্থী হয়েছিলেন। বালুরঘাট থেকে জিতে তিনি এখন সাংসদ। বালুরঘাট কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজ কুণ্ডু তাই বলেন, ‘‘এক প্রাক্তনী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, অন্য জন সাংসদ। আমাদের আনন্দ তো দ্বিগুণ!’’

Advertisement

স্থানীয় লোকজন বলছেন, গত বছর দাড়িভিটের ঘটনাই এই এলাকার রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিল। যে কানাইয়ালাল আগরওয়ালকে সাড়ে ৬০ হাজার ভোটে দেবশ্রী হারিয়েছেন, তিনিও এই এলাকারই লোক। দাড়িভিট কাণ্ডের পরে তাঁকেই তৃণমূল দায়িত্ব দিয়েছিল সঙ্কট সামাল দিতে। কিন্তু শেষরক্ষা যে হয়নি, সেটা বলে দিচ্ছে লোকসভা ভোটের ফল।

বাবা-মা দিল্লি গেলেও দাড়িভিটে নিজের বাড়িতে রয়েছেন তাপসের বোন ডলি। তাঁর আশা, দেবশ্রী মন্ত্রী হওয়ার পরে এ বারে রাজেশ-তাপসের মৃত্যুর ‘ঠিকঠাক’ তদন্ত হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন