বাজার থেকে টাকা আসবে পরিকাঠামোর

এসপিভি কী? অর্থ দফতরের ব্যাখ্যা, কোনও নির্দিষ্ট কাজ বা লক্ষ্য পুরণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করতে এসপিভি তৈরি করা হয়। সরকারের কোনও সংস্থা এসপিভি হিসাবে কাজ করতে পারে। আবার, নতুন কোনও সংস্থা গঠন করে তাকেও এসপিভি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। নবান্নের এক শীর্ষকর্তা জানান, পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য সরকারের হয়ে এই সংস্থাই (এসপিভি) বাজার থেকে টাকা তুলবে।

Advertisement

অত্রি মিত্র

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:২৫
Share:

কোষাগারের টাকা নয়। রাজ্যের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ১২ হাজার কোটি টাকা তোলা হবে বাজার থেকে। কিছু দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, রাস্তা-সেতু-উড়ালপুল, বিদ্যুৎ-জলপ্রকল্প, ফসল রাখার গুদামের মতো পরিকাঠামো তৈরির জন্য আগামী তিন বছরে ১২ হাজার ১৮০ কোটি টাকা খরচ করা হবে। বাজেটের বাইরে এই অতিরিক্ত খরচ করবে সরকার। এর মূল লক্ষ্য যে রাজ্যে লগ্নি টানা, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা। বলেছেন, ‘‘পরিকাঠামো বাড়লে লগ্নিও বাড়বে।’’

Advertisement

কিন্তু মাথার উপর যাদের বিপুল ঋণের বোঝা, যে সরকারের কোষাগারের দশা বেহাল, তারা এত টাকা পাবে কোথা থেকে? নবান্নের খবর, অনেক চিন্তা-ভাবনা করে প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা ঠিক করেছেন, ‘স্পেশাল পারপাস ভেহিকেলস’ (এসপিভি) তৈরি করে বাজার থেকে ওই তোলার চেষ্টা হবে।

এসপিভি কী? অর্থ দফতরের ব্যাখ্যা, কোনও নির্দিষ্ট কাজ বা লক্ষ্য পুরণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করতে এসপিভি তৈরি করা হয়। সরকারের কোনও সংস্থা এসপিভি হিসাবে কাজ করতে পারে। আবার, নতুন কোনও সংস্থা গঠন করে তাকেও এসপিভি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। নবান্নের এক শীর্ষকর্তা জানান, পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য সরকারের হয়ে এই সংস্থাই (এসপিভি) বাজার থেকে টাকা তুলবে। সেটা হতে পারে বন্ড বা শেয়ার বিক্রি করে, অথবা কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নিয়ে।

Advertisement

এতে সরকারের কী সুবিধা? অর্থকর্তারা মোটামুটি তিনটি সুবিধার কথা জানাচ্ছেন। প্রথমত, তিন বছরে ১২ হাজার কোটি টাকা খরচ করতে গেলে প্রতি বছর বাজেটে অন্তত ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করতে হবে। তার বদলে ঋণ নিয়ে কিংবা বন্ডের মাধ্যমে টাকা তুললে সুদ-আসল মেটানো বাবদ বার্ষিক খরচ হবে অনেকটাই কম। দ্বিতীয়ত, এই পদ্ধতি হবে দীর্ঘমেয়াদি। ফলে সুদ-আসল মিলিয়ে অনেক বেশি টাকা খরচ করতে হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে টাকার দামও কমবে। তাতে সরকারের উপরে চাপও কম পড়বে। তৃতীয়ত, যে হেতু বাজার থেকে টাকা তুলবে এসপিভি, তাই প্রকল্প ব্যর্থ হলেও সরাসরি সরকারের উপর তার দায় চাপবে না।

নবান্নের এক কর্তা বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় পূর্ত ও সড়ক মন্ত্রী থাকাকালীন নীতিন গডকড়ী মুম্বই শহরের রাস্তা ও উড়ালপুল তৈরি করতে এসপিভি তৈরি করে বাজার থেকে টাকা তুলেছিলেন। এ রাজ্যে এসপিভি হিসেবে আপাতত পশ্চিমবঙ্গ পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগম অথবা অর্থ নিগম-এর নাম উঠে এসেছে। আবার, নতুন সংস্থাও গঠন হতে পারে।’’

পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রকল্পগুলি দেখভাল করতে ইতিমধ্যেই মুখ্যসচিব মলয় দে-র নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নের খবর, ওই কমিটিই ঠিক করবে, এসপিভি তৈরি করে কোন আর্থিক বছরে, কত টাকা তোলা হবে। তার পরেই কাজে হাত পড়বে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement