West Bengal News

সেনা সরার পরে পাহাড়ে আরও জঙ্গি আন্দোলন মোর্চার

মঙ্গলবার জিটিএ চুক্তি পুড়িয়ে, গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পিঠে টিউবলাইট ভেঙে রক্ত ঝরিয়েছিলেন মোর্চা সমর্থকেরা। এ দিন আগুনে ভস্মীভূত করা হল বিজনবাড়ি ব্লকের ধোবিততলা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস-সহ শৈলাবাসের লালকুঠিতে জিটিএ-র ইঞ্জিনিয়ারিং অফিস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৭ ১৮:৫৭
Share:

পাহাড়ে অশান্তি বহাল, ক্রমশ হিংসাত্মক হচ্ছে মোর্চা। —ফাইল চিত্র।

পাহাড়ে আন্দোলন আরও আক্রমণাত্মক করল মোর্চা। বুধবার জিটিএ-র দফতর সমেত দার্জিলিঙের দু’টি জায়গায় আগুন লাগাল তারা। ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ ছাড়াও বুধবার শিশুদের গলায় চেন পরিয়ে অভিনব প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হল মোর্চা। পাশাপাশি, মোর্চার প্রাক্তন সদস্যদের আটক করার প্রতিবাদে চলল বিক্ষোভ। এরই পাশাপাশি, সেনা সূত্রে বুধবার জানানো হয়েছে, পাহাড় থেকে বাহিনী প্রত্যাহার করা হয়েছে। নবান্ন সূত্রে খবর, গত ২৪ জুনই চিঠি লিখে সেনা সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। কারণ, বর্তমান পরিস্থিতিতে পাহাড়ে আর সেনার প্রয়োজন নেই বলে মনে করে রাজ্য প্রশাসন।

Advertisement

মঙ্গলবার জিটিএ চুক্তি পুড়িয়ে, গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পিঠে টিউবলাইট ভেঙে রক্ত ঝরিয়েছিলেন মোর্চা সমর্থকেরা। এ দিন আগুনে ভস্মীভূত করা হল বিজনবাড়ি ব্লকের ধোবিততলা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস-সহ শৈলাবাসের লালকুঠিতে জিটিএ-র ইঞ্জিনিয়ারিং অফিস। দু’টি ঘটনার পিছনেই মোর্চার দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। লালকুঠির অফিস থেকেই বিভিন্ন নির্মাণকাজের টেন্ডার ডাকা হয়। আগুনে ওই অফিসের বহু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। অন্য দিকে, ধোবিততলা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসও সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার পাশের লাইব্রেরিটিও। কালিম্পঙের সেরিকালচারাল অফিস ও তিস্তা ভ্যালির সিআরপিএফ কমিউনিটি হলে ভাঙচুর চালায় মোর্চা সমর্থকেরা। অগ্নিসংযোগের চেষ্টাও করা হয়। যদিও এ সব অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছেন মোর্চা নেতৃত্ব।

মঙ্গলবার জিটিএ-র চুক্তিপত্র পুড়িয়েছিল মোর্চা, বুধবার আগুন দিয়েছে জিটিএ দফতরেই। ছবি: এএফপি।

Advertisement

এ দিন মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির দুই প্রাক্তন সদস্য স্যামুয়েল গুরুঙ্গ এবং আর ডি ভুজেলকে পাতলেবাসে যাওয়ার পথে আটক করে পুলিশ। দার্জিলিং সদর থানার সামনে তা নিয়ে বিক্ষোভ দেখান শ’পাঁচেক মোর্চা সমর্থক। পরে অবশ্য তাঁদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই তাঁদের আটক করা হয়েছিল। থানার সামনে ছাড়াও এ দিন চকবাজারে এক জমায়েতে শিশুদের গলায় চেন পরিয়ে প্রতীকী বিক্ষোভ দেখায় মোর্চা।

আরও পড়ুন: শান্তি ফেরানোর ডাক অমিতের

লালকুঠির অফিসে আগুন লাগানোর ঘটনা নিয়ে মোর্চাকে আক্রমণ করেছেন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। কেন্দ্র-রাজ্য মিলিত ভাবে জিটিএ-কে বারোশো কোটি টাকার অনুদান দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি জিটিএ অডিটের প্রথম ভাগ শুরু হয়েছে। অভিযোগ, ওই অডিটে বিভিন্ন নথিতে গরমিল পাওয়া গিয়েছে। পর্যটনমন্ত্রীর দাবি, “জিটিএ নিয়ে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতিতে জড়িত মোর্চা নেতারা। তা থেকে সাধারণ মানুষের নজর ঘোরাতেই জিটিএ চুক্তি পুড়িয়ে আন্দোলন করছেন তাঁরা।” তবে পর্যটনমন্ত্রীর এই দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছেন মোর্চার সহকারী সাধারণ সম্পাদক বিনয় তামাঙ্গ। তিনি বলেন, “জিটিএ এখন অতীত হয়ে গিয়েছে। গত কালই ওই চুক্তি আগুনে পুড়িয়ে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়েছে। রাজ্য সরকার এ নিয়ে নানা ধরনের কথা বলছে। জিটিএ-তে হস্তক্ষেপ করছে। এ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন