ডুয়ার্সে বন্‌ধের ডাক, রোখার প্রস্তুতিও তুঙ্গে

১২ ঘণ্টার ডুয়ার্স বন্‌ধের ডাক দিল মোর্চার ডুয়ার্স কমিটি। আর বন্‌ধ ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাস্তায় নেমে বিরোধিতার কথা জানিয়ে দিল শাসক দল তৃণমূল সহ বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৭ ০৩:৪০
Share:

—ফাইল চিত্র

মাত্র চব্বিশ ঘণ্টা আগে ডুয়ার্সে মিছিলের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিল মোর্চা। এ বার ১২ ঘণ্টার ডুয়ার্স বন্‌ধের ডাক দিল মোর্চার ডুয়ার্স কমিটি। আর বন্‌ধ ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাস্তায় নেমে বিরোধিতার কথা জানিয়ে দিল শাসক দল তৃণমূল সহ বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন।

Advertisement

মোর্চা ডুয়ার্সে সক্রিয়তা বাড়ানোর চেষ্টা করতেই, রণকৌশল ঠিক করতে আজ রবিবার মালবাজারে বৈঠকে বসবেন সঙ্কোশ থেকে নকশালবাড়ি পর্যন্ত আদিবাসী বিকাশ পরিষদের সব নেতা। সংগঠনের বক্তব্য, ডুয়ার্সে অশান্তি রুখতেই হবে। আজ, জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত সংখ্যায় সরকারি বাস চলাচল করবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। দোকান বাজার সব খোলা রাখা হবে।

আরও পড়ুন: মোর্চার সঙ্গে জঙ্গি যোগের প্রমাণ রয়েছে: মুখ্যমন্ত্রী

Advertisement

শুক্রবার বীরপাড়া, জয়গাঁ, কালচিনিতে মোর্চা মিছিলের প্রস্তুতি নিতেই পুলিশ রুখে দিয়েছিল। অতীতে মোর্চার ডাকা বনধ বা সভায় বিশেষ প্রভাব ডুয়ার্সে দেখা যায়নি। যদিও সমতলের নেতাদের একাংশের দাবি, প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়াতে বরাবরই ডুয়ার্সকেও আন্দোলনে জুড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে পাহাড়ের নেতারা। আশির দশকে জিএনএলএফের আন্দোলনের সময়ে জয়ন্তীর বাংলো পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। মোর্চার উত্থানের পর থেকে চামুর্চি, বানারহাট, জলঢাকা, কালচিনি এমনকী মালবাজার-নাগরাকাটার মতো এলাকাগুলিতেও অশান্তির চেষ্টা হয়েছে।

‘ক্ষতি’য়ান

• শুক্রবার গভীর রাতে বিজনবাড়িতে পূর্ত দফতরের অফিসে আগুন

• কুমাই গ্রাম পঞ্চায়েতে আগুন

• শনিবার ভোরে লেবংয়ে তৃণমূল নেতা দেওরাজ গুরুঙ্গের বাড়িতে পেট্রোল বোমা

• দুপুরে পাতলেবাসে পুলিশের তিনটি ভ্যানে আগুন

• সিংমারিতে জ্বালানো হল ৬টি গাড়ি

• ঘুমে একটি সরকারি দফতরে ভাঙচুর

• ঘুমভঞ্জনে বন বিভাগের চেকপোস্ট ভাঙচুর

• বিকেলে ডুয়ার্সের গরুবাথানে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার গাড়িতে আগুন

• বিকেলে জলঢাকা থানায় ভাঙচুর, জ্বালানো হল থানার গাড়ি।

এ দিন দুপুরে কালচিনিতে মোর্চার ডুয়ার্স কমিটির বন্‌ধের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। পূর্ব ডুয়ার্সের গোর্খা জনমুক্তির মোর্চার সম্পাদক বিশাল লামা বলেন, ‘‘পাহাড়ে পুলিশ মোর্চা সমর্থকদের উপর গুলি চালিয়েছে। তার প্রতিবাদেই ১২ ঘণ্টার বন্‌ধ ডাকা হয়েছে।’’ এরপরেই আলিপুরদুয়ারের তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোহন শর্মা জানান, পথে নেমে বন্‌ধের বিরোধিতা করবেন তাঁরা। জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা এসজেডিএ-এর চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীও জানান, জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে রাস্তায় বাড়তি যানবাহন থাকবে। হ্যামিল্টনগঞ্জ, হাসিমারা, জয়গাঁ ও কালচিনির ব্যবসায়ী সংগঠনের তরফেও জানানো হয়েছে, দোকান বাজার সবই স্বাভাবিক থাকবে।

ডুয়ার্সের চা বলয় মূলতঃ বন্‌ধের আওতায় থাকছে। গত মঙ্গলবার চা শ্রমিকদের যৌথ মঞ্চের ডাকা সাধারণ ধর্মঘটকে সমর্থন করে পাহাড়ের জনজীবন বিপর্যস্ত করেছিল মোর্চা। যদিও চা শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চকে পাশে পাচ্ছে না মোর্চা। মঞ্চের আহ্বায়ক জিয়াউল আলম বলেন, ‘‘রবিবারের বন্‌ধকে আমরা সমর্থনও করছি না, আবার বিরোধিতাও করছি না৷’’ অখিল ভারতীয় আদিবাসী বিকাশ পরিষদের রাজ্য সভাপতি বিরসা তীরকে বলেন, ‘‘পথে নেমে কর্মী সমর্থকরা বন্‌ধের বিরোধিতা করবে। ডুয়ার্সের কোথাও সামান্যতম অশান্তির চেষ্টাও রোখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন