দু’হাজারের বেশি ভুয়ো শংসাপত্র!

মঙ্গলবার সিআইডি এমন একটি সংস্থার কর্ণধারকে গ্রেফতার করেছে, যারা একাই তিন দশক ধরে প্রায় দু’হাজার জাল সার্টিফিকেট দিয়েছে! মেডিক্যাল কাউন্সিলের তরফেও আরও ছ’জন ভুয়ো ডাক্তারের নামে পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছে।

Advertisement
শিবাজী দে সরকার শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৭ ০৩:৫৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি তৃণমূল নেতা নির্মল মাজি সোমবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, রাজ্যে সাড়ে ৫০০–র বেশি ভুয়ো চিকিৎসক রয়েছেন।

Advertisement

মঙ্গলবার সিআইডি এমন একটি সংস্থার কর্ণধারকে গ্রেফতার করেছে, যারা একাই তিন দশক ধরে প্রায় দু’হাজার জাল সার্টিফিকেট দিয়েছে! মেডিক্যাল কাউন্সিলের তরফেও আরও ছ’জন ভুয়ো ডাক্তারের নামে পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছে।

সিআইডি-র এক অফিসার মঙ্গলবার বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়ে যে কত ভুয়ো চিকিৎসক রয়েছেন গুনে শেষ করা যাবে না। আমরা অল্টারনেটিভ মেডিক্যাল কাউন্সিল নামে একটি প্রতিষ্ঠানের খোঁজ পেয়েছি যারা একাই প্রায় দু’হাজার জনকে ভুয়ো শংসাপত্র দিয়েছে।’’ সিআইডির দাবি, এ রকম ৭-৮টি সংস্থাকে তারা চিহ্নিত করেছে।

Advertisement

মঙ্গলবার গ্রেফতার হয়েছেন অল্টারনেটিভ মেডিক্যাল কাউন্সিল-এর কর্তা রমেশ বৈদ্য। তাঁর কাছে শ্রীলঙ্কার এক মেডিক্যাল প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন রয়েছে বলে রমেশ দাবি করেছেন বলে সিআইডি সূত্রে খবর। বাকি সংস্থাগুলি কেউ নেপাল, কেউ তাইল্যান্ড থেকে অনুমোদন পেয়েছে গোয়েন্দারা জেনেছেন। এগুলোয় অল্টারনেটিভ মেডিসিন বা প্যারামেডিক্যাল কোর্সে পড়লে শংসাপত্র পাওয়া যায় ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকাতেই। শিক্ষাগত যোগ্যতা কম হলে শংসাপত্রের জন্য ৫ লক্ষ টাকাও দিতে হয়। বাকি সংস্থাগুলিকে কেন ধরা যাচ্ছে না? সিআইডি সূত্রের দাবি, ‘‘অনেকে দফতর গুটিয়ে পালিয়েছে। কেউ গা ঢাকা দিয়েছে। ভুয়ো ডাক্তাররাও চাকরি ছাড়তে শুরু করেছেন। সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে গিয়ে আমরা অনেককেই পাচ্ছি না।’’

আরও পড়ুন: সত্যবান ডাক্তার সত্য বলছেন কি

সিআইডি-র হাতে ধরা পড়া তিন সরকারি ডাক্তারের কাছেও রয়েছে এমবিবিএস পাশের সার্টিফিকেট আর রেজিস্ট্রেশন নম্বর। অথচ চোপড়া দলুয়া ব্লক প্রাথমিক হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার কাইজার আলম মাধ্যমিক পাশ। মাদারিহাটের রাঙালীবাজনা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার কুশীনাথ হালদার অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। আর নাগরাকাটা ধূমপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার স্নেহাশিস চক্রবর্তীর বিদ্যা দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত। চাকরি পাওয়ার সময়ে ওই তিনজনের শংসাপত্র কেন খতিয়ে দেখা হল না সেই প্রশ্ন তুলেছে সিআইডি। তারা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

কলকাতার কোঠারি হাসপাতালে গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজির চিকিৎসক হিসেবে এক দশকেরও বেশি রোগী দেখতেন অজয় তিওয়ারি। তবে তিনি তাঁর ডিগ্রি কখনও লিখতেন না প্রেসক্রিপশনে। হাসপাতালের বোর্ডে তাঁর নাম থাকলেও ছিল না ডিগ্রির উল্লেখ। কীসের ভিত্তিতে অজয়বাবু রোগী দেখছিলেন তা নিয়ে হাসপাতাল কর্ত়ৃপক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন