অসমের মা-মেয়ে ডায়মন্ড হারবারে

তরুণী জানিয়েছেন, তাঁর নাম রেশমিয়া। বাড়ি, অসমের বরপেটার হাউলিয়া। সেখানকার পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁর বাড়ি খুঁজে বের করা যায়নি। বরপেটা থেকে কী করে তিনি ডায়মন্ড হারবারে পৌঁছলেন, তা জানাতে পারছেন না ওই তরুণী।

Advertisement

সুপ্রকাশ মণ্ডল

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৮ ০৪:১০
Share:

হাসপাতালে রেশমিয়া।

সদ্য মা হয়েছেন তিনি। তখন মাথায় ছাদ ছিল না। পুলিশের দৌলতে ঠাঁই মিলেছে ডায়মন্ড হারবার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। হাসপাতালের শয্যায় অনিশ্চিত সময় কাটছে তাঁর। কিছুটা সুস্থ হতে নিজের নাম ঠিকানাও জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁকে বাড়ি ফেরানোর উদ্যোগ থমকে গিয়েছে।

Advertisement

তরুণী জানিয়েছেন, তাঁর নাম রেশমিয়া। বাড়ি, অসমের বরপেটার হাউলিয়া। সেখানকার পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁর বাড়ি খুঁজে বের করা যায়নি। বরপেটা থেকে কী করে তিনি ডায়মন্ড হারবারে পৌঁছলেন, তা জানাতে পারছেন না ওই তরুণী। তবে সদ্যোজাত মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে চান।

রেশমিয়াকে বাড়ি ফেরাতে চেষ্টা করছে একটি হ্যাম রেডিয়ো ক্লাব। ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অসমের বর্তমান পরিস্থিতিতে রেশমিয়ার বাড়ি ফেরার কাজ থমকে রয়েছে।

Advertisement

ডায়মন্ড হারবার থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন দশেক আগে কুলতলিতে রাস্তার ধারে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে ছিলেন রেশমিয়া। রাস্তাতেই তিনি একটি কন্যাসন্তান প্রসব করেন। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে। ডায়মন্ড হারবার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সহকারী সুপার সুপ্রিম সাহা জানান, খুব অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। দিন কয়েকের চিকিৎসায় ওই তরুণী সুস্থ হন। তাঁর কিছুটা মানসিক সমস্যা রয়েছে। তাঁর সন্তান হাসপাতালে সদ্যোজাতদের বিভাগে ভর্তি। সুপার বলেন, ‘‘ওঁর ভাষা আমরা বুঝতে পারছিলাম না। হ্যাম রেডিয়ো ক্লাবের একজন এসে তাঁর সঙ্গে অহমিয়া ভাষায় কথা বলেন।’’

ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিয়ো ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ক্লাবের সদস্য অসিত দাস তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, তাঁর বাড়ি বরপেটা জেলার হাউলিয়া থানা এলাকায় তাঁর বাড়ি। আমরা সেখানকার রেডিয়ো ক্লাবের সদস্যদের জানিয়েছি, কিন্তু নাগরিক পঞ্জি নিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি একটু অন্য রকম বলে তাঁরা কাজ শুরু করতে পারছেন না।’’

খবর গিয়েছে হাউলিয়া থানাতেও। ওই থানার ওসি পঙ্কজ দাস বলেন, ‘‘আমরা ওই তরুণীর সঙ্গে কথোপকথনের ভিডিও পেয়েছি। ওঁর বাড়ি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।’’

কী করে ডায়মন্ড হারবার এসে পৌঁছলেন, তা মনে করতে পারছেন না রেশমিয়া। নুর ইসলাম, জয়নাল, মনজুনুন খাতুন-সহ কয়েকটি নাম তিনি লিখতে পারছেন। একটি ফোন নম্বরও লিখেছেন। সেই নম্বর এবং নামগুলি হাউলিয়া থানায় জানানো‌ হয়েছে। পঙ্কজবাবু জানান, ওই নাম এবং ফোন নম্বরের সূত্র ধরে খোঁজ চালানো হবে।

মেয়েকে নিয়ে বা়ড়ির পথ চেয়ে আকুল তরুণী। কেউ কথা বলতে এলেই তাঁর কাছে টাকা চাইছেন তিনি রেশমিয়া। বলছেন, ‘‘বাড়ি ফিরতে গেলে টাকা লাগবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন