মা-ছেলেকে মিলিয়ে দিল শীতের জামা

গঙ্গাসাগর মেলার ২ নম্বর রাস্তার পাশেই রয়েছে বজরঙ্গ পরিষদের প্রধান ক্যাম্প অফিস। শুক্রবার রাত ১০টা নাগাদ ওই অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে ঠান্ডায় কাঁপছিল শিবা।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

গঙ্গাসাগর শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:০৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

পড়াশোনায় মন নেই। একদিন বারবার বলার পরেও পড়তে না বসায় বছর দশের ছেলেকে মেরেছিলেন মা। সেই রাগে ছেলে মালদহ থেকে পালিয়ে সোজা চলে এসেছে গঙ্গাসাগর মেলায়। বাড়ি থেকে বার হওয়ার সময়ে টাকা নিলেও গরম জামাকাপড় নিতে পারেনি মালদহ পাশকুড়ার শিবা কুমার। বলতে গেলে, সেই গরম জামাগুলোই আবার মায়ের কাছে পৌঁছে দিতে চলেছে তাকে।

Advertisement

গঙ্গাসাগর মেলার ২ নম্বর রাস্তার পাশেই রয়েছে বজরঙ্গ পরিষদের প্রধান ক্যাম্প অফিস। শুক্রবার রাত ১০টা নাগাদ ওই অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে ঠান্ডায় কাঁপছিল শিবা। তাকে লক্ষ্য করেন পরিষদের সম্পাদক সবরমল গয়াল। ছেলেটির গায়ে শীতের কোনও পোশাক না দেখে সন্দেহ হয় তাঁর। হারিয়ে গিয়েছে মনে করে তার নাম-ধাম জিজ্ঞাসা করেন সবরমলবাবু। প্রথমে মুখ না খুললেও পরে শিবা তাঁকে জানায়, পড়াশোনা না করায় মা তাকে মেরেছেন। তাই গত মঙ্গলবার বেলায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে ট্রেন ধরেছিল সে। পৌঁছয় হাওড়া স্টেশনে। সেখান থেকে বাবুঘাট। তার পর লোককে জিজ্ঞাসা করে করে সোজা গঙ্গাসাগর।

কিন্ত গঙ্গাসাগর কেন? সবরমলের প্রশ্নের জবাবে শিবা জানায়, অনেকের মুখে সে এই জায়গার নাম শুনেছে। তবে প্রথমে এত না ভেবেই হাওড়ার ট্রেনে উঠেছিল সে। ভেবেছিল, যেখানে ট্রেন থামবে সেখানেই নেমে পড়বে। কিন্তু ট্রেনেই অনেকের মুখে গঙ্গাসাগরের নাম শোনে। তখন ঠিক করে, সেখানেই যাবে। তবে তাড়াহুড়োয় গরম জামা নিতে ভুলে গিয়েছিল। বজরঙ্গ পরিষদ এর পরে পুলিশকে সব জানায়।

Advertisement

আরও পড়ুন: নিরাপত্তায় আকাশ থেকেও সাগরে চোখ

শনিবার শিবা বলে, সে স্কুলে পড়ে না। বাড়িতেই পড়াশোনা করে। কিন্তু একটু ভুল হলেই মা তাকে মারধর করেন। তাই বাবা, দাদা আর মাকে ছেড়ে পালিয়ে এসেছিল সে। সবরমলবাবু বলেন, ‘‘শিবার মায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। ১৬ জানুয়ারি বাবুঘাটে মায়ের হাতে তুলে দেব ছেলেকে।’’ শিবাও বলেছে, ‘‘মায়ের ওপর রাগ করে এখানে চলে আসি। এখন বাড়ি ফিরতে চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন