ছবি: সংগৃহীত
বিমানবন্দর থেকে মুরলীধর সেন লেন হয়ে নিজাম প্যালেস। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে প্রথম বার দিল্লি থেকে কলকাতায় ফেরা মুকুল রায়কে ঘিরে সোমবার দিনভরই ভি়ড়ের বৃত্ত। আর এ দিনই সন্ধ্যায় বাবাকে চ্যালেঞ্জ করে মুকুল-পুত্র ও বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়ের দাবি, ‘‘আমি চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে আমি যে মার্জিন পেয়েছিলাম, ২০১৯-এ তার থেকেও বেশি মার্জিন দিতে পারব তৃণমূলকে।’’
ভিড়ের উন্মাদনায় কলকাতা বিমানবন্দরে তুমুল ধাক্কাধাক্কি, টানা হ্যাঁচড়া করে নিরাপত্তাকর্মীরা বার করে নিয়ে যান মুকুলকে। ওয়াই ক্যাটাগরির সিআইএসএফ নিরাপত্তায় মুকুল বিমানবন্দর থেকে বিজেপির সদর দফতরে পৌঁছতেই ‘মুকুল রায় জিন্দাবাদ’ ধ্বনি। ভিড় থইথই বিজেপির দফতরের সামনের রাস্তাটা।
আরও পড়ুন: দিলীপই ক্যাপ্টেন মানলেন মুকুল
বাইরে যাঁরা জড়ো হয়েছিলেন, তাঁদের বেশিরভাগই এতদিন তৃণমূলের বৃত্তে মুকুলের ধারেকাছে ঘোরাফেরা করা মুখ। পদাধিকারী তেমন কেউ ছিলেন না। বিজেপি দফতরে নিরাপত্তার কড়াকড়িতে দেখা করতে না পারা এই কর্মীদের অনেকেই সন্ধ্যার মুখে নিজাম প্যালেসে চলে যান তাঁদের ‘নেতা’র সঙ্গে দেখা করতে। অনেক জেলা থেকেই কর্মীরা আসেন গোলাপের মালা, পুষ্পস্তবক নিয়ে। তাঁর নিজের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচরাপাড়া, ছেলে শুভ্রাংশুর বিধানসভা কেন্দ্র বীজপুর থেকেও প্রচুর সমর্থক এসেছিলেন বিজেপি দফতরে, নিজাম প্যালেসে। তা হলে কি বিভিন্ন জেলায় তৃণমূল স্তরের তৃণমূল কর্মীদের কাছে টানার লক্ষ্য এ বার মুকুলের?
বাবার সেই লক্ষ্যকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে শুভ্রাংশু বললেন, ‘‘বাবা আমার এলাকা ভাঙার চেষ্টা করলে, আমিও বাবার এলাকা ভাঙব।’’ তাঁর এলাকা থেকেও অনেক লোক মুকুলের সঙ্গে বিজেপিতে কেন চলে গেলেন, এ প্রশ্ন শুনে শুভ্রাংশু বললেন, ‘‘কেউ কোথাও গেলে তাঁর সঙ্গে কিছু লোক তো যাবেই। বস্তুত, এ দিন রাতে কলকাতা থেকে বাড়ি ফেরার পথে কাঁচরাপাড়ায় একাধিক জায়গায় মঞ্চ বেঁধে তাঁর সর্থকরা মুকুলকে সংবর্ধনা জানায়।
বীজপুর, কাঁচরাপাড়ায় এখন বিজেপির দু’জন কাউন্সিলর রয়েছেন। কিন্তু ২০২০ সালের আগামী পুরভোটে ওই এলাকায় বিজেপি জিততে পারবে না বলে আশাবাদী শুভ্রাংশু। তাঁর দাবি, ‘‘কোনও মানুষকে দেখে কিছু লোক অন্য কোনও দলে যেতেই পারেন। কিন্তু মানুষ ভোট কাকে দিচ্ছে, তা দেখলেই বোঝা যাবে লোক কার সঙ্গে রয়েছে।’’ মুকুলের লক্ষ্য আপাতত ১০ নভেম্বর ধর্মতলায় বিজেপির সমাবেশ। সমর্থকদের কাছে তাঁর নির্দেশ, ‘‘যত বেশি পারবে লোক আনবে। তার জন্য যে সাহায্য দরকার, আমি দেব।’’