Nabanna

BGBS: আগের বিনিয়োগ প্রস্তাব বাস্তবায়নে জোর নবান্নের

মুখ্যসচিবের নির্দেশ, ইতিমধ্যেই আসা বিনিয়োগ-প্রস্তাবের বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনে চালু নীতি সংশোধন-পরিমার্জনের কাজ করতে হবে দ্রুত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২২ ০৬:২৯
Share:

ফাইল ছবি

এখন থেকেই আগামী বছরের বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলনের (বিজিবিএস) কথা মাথায় রেখে এত দিন পর্যন্ত হওয়া সম্মেলনগুলিতে আসা লগ্নি-প্রস্তাবের বাস্তবায়নে জোর দিতে চাইছে রাজ্য।

Advertisement

শনিবার এই উদ্দেশে সংশ্লিষ্ট মূল দফতরগুলির কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। বৈঠকে তাঁর নির্দেশ, ইতিমধ্যেই আসা বিনিয়োগ-প্রস্তাবের বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনে চালু নীতি সংশোধন-পরিমার্জনের কাজ করতে হবে দ্রুত। এ দিন নতুন আরও দু’টি সেক্টোরাল কমিটি তৈরিরও সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে খবর। তা হবে সামাজিক পরিষেবা ক্ষেত্রে। নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতরকে নিয়ে। অন্যটি চলচ্চিত্রের।

বিরোধীদের বরাবরের অভিযোগ, প্রতিবারই বিপুল অঙ্কের লগ্নি প্রস্তাবের কথা ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু আখেরে তার সামান্য অংশই বাস্তবায়িত হয়। তাই সে দিক থেকে রাজ্যের লগ্নি বাস্তবায়নের উদ্যোগ তাৎপর্যপূর্ণ।

Advertisement

এ দিন মূলত দু’টি ভাগে বৈঠক পরিচালনা করেন মুখ্যসচিব। প্রথমটি ছিল রফতানি এবং বাণিজ্য সংক্রান্ত। দ্বিতীয়টি বিজিবিএস টাস্ক ফোর্সের বৈঠক। প্রথম বৈঠকে বিভিন্ন শিল্প মহলের প্রতিনিধি এবং বণিকসভার সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা হয়। সূত্রের খবর, রাজ্যের বিদ্যুৎ মাসুল যথেষ্ট বেশি বলে জানিয়েছিলেন মৎস্য এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রে রফতানিকারী সংস্থার প্রতিনিধিদের একাংশ। সেই মাসুল কিছুটা কমালে, রফতানিতে আরও গতি আসবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। মুখ্যসচিব বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

রাস্তার বেহাল অবস্থা নিয়েও বণিকসভার প্রতিনিধিদের কেউ কেউ এ দিন মুখ খুলেছিলেন। বিশেষ করে ঘোজাডাঙা এবং পেট্রাপোলের দিকের রাস্তার পরিস্থিতি নিয়ে। তবে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, সড়ক পরিকাঠামো উন্নয়নের জোরদার চেষ্টা চলছে। পেট্রাপোলে পরিকাঠামো তৈরির কাজ চলছে। সেখানকার পার্কিং এলাকার অধিগ্রহণ করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের দিকেও কিছু পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রয়োজন। এক কর্তার কথায়, “রফতানি মানচিত্রে এ রাজ্যের অবস্থান মজবুত করতে বদ্ধপরিকর সরকার। সেই দিক থেকে যা করণীয়, সবই করা হবে।”

সূত্রের দাবি, এ দিনের বৈঠকে স্থির হয়েছে, প্রতিটি সেক্টর কমিটির বৈঠক হবে মাসে এক বার। বিনিয়োগ প্রস্তাব দ্রুত কার্যকর করার চেষ্টা হবে। তাতে কোনও জট সামনে এলে, তা খোলার চেষ্টা হবে। শিল্পমহলের চাহিদা অনুযায়ী কোথাও কোনও নীতি বদলাতে বা সংশোধন করতে হলে, সেই কাজও করা হবে।

গত বিজিবিএস-এর মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, আগামী বছর ১, ২ এবং ৩ ফেব্রুয়ারি ফের হবে শিল্প সম্মেলন। ফলে তার আগে সেক্টর ভিত্তিক কমিটিগুলির নিয়মিত বৈঠকের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। প্রসঙ্গত, গত বিজিবিএস-এর আগে পরিকাঠামো, পরিষেবা, পর্যটন, শিল্প, কৃষি ও সহযোগী এবং রফতানি সংক্রান্ত সেক্টর-কমিটি তৈরি করেছিল রাজ্য সরকার। সেখানে শিল্পমহলের প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট দফতরগুলির সচিবদের রাখা হয়েছিল।

সূত্রের খবর, নতুন দু’টি সেক্টর কমটির মধ্যে রয়েছে চলচ্চিত্র (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগের ঘোষণা অনুযায়ী) এবং সামাজিক পরিষেবা। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই জানাচ্ছেন, সামাজিক ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের বড় অঙ্কের বরাদ্দ রয়েছে। একসঙ্গে অনেকগুলি কল্যাণ প্রকল্পের (লক্ষ্মীর ভান্ডার, পড়ুয়া ঋণ কার্ড ইত্যাদি) কাজ চালাচ্ছে রাজ্য। পরিধি বেড়েছে স্বাস্থ্যসাথীরও। এই অবস্থায় শিল্প মানচিত্রে এই ক্ষেত্রটির অন্তর্ভুক্তিকে তাই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন