কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ফিরুক নবান্ন, চান আমলারা 

ওই আমলাদের দাবি, নরেন্দ্র মোদীর বিরোধিতা করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিরও বিরোধিতা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ধাঁচে একার খরচে প্রকল্প চালাতে বহু কোটি টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৯ ০৩:৩৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

আয়ুষ্মান ভারত, পিএম কিষাণ প্রকল্পের মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্পের শরিক না হয়ে স্বাস্থ্য-শিক্ষা, বিমা-পেনশন ইত্যাদি ক্ষেত্রে নিজস্ব প্রকল্প ঘোষণা করেছিল নবান্ন। তাতে রাজ্যের ঘাড়ে চেপেছে বাড়তি আর্থিক বোঝা। রাজ্যের বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ আমলার দাবি, লোকসভা ভোটের ফলাফলে ইঙ্গিত, মুখ্যমন্ত্রীর সেই সিদ্ধান্তে লাভ হয়নি রাজ্যের শাসক দলের। তাঁদের মত, কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে এবং খরচ বাঁচাতে দ্রুত কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিতে যোগ দিক রাজ্য।

Advertisement

ওই আমলাদের দাবি, নরেন্দ্র মোদীর বিরোধিতা করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিরও বিরোধিতা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ধাঁচে একার খরচে প্রকল্প চালাতে বহু কোটি টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে রাজ্য কর্মচারীদের বেতন কমিশন চালু করার চাপ বাড়বে। সেখানে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকার বাড়তি বোঝা আসবে। তাই কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিতে যোগ দিলে খরচ অনেকটা কমানো যাবে। তাই আমলাদের একাংশ দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক সহজ করার পক্ষে। এমনকি, অতিরিক্ত মুখ্যসচিব পদের এক আইএএস অফিসার বলেন, ‘‘প্রয়োজনে এ নিয়ে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলব।’’

এ প্রসঙ্গে ওড়িশার সঙ্গে এ রাজ্যের তুলনাও চর্চায় এসেছে।। আমলাদের একাংশের মতে, বিজেপি-বিজেডি সংঘাত থাকলেও নবীন পট্টনায়কের সরকার উন্নয়ন ও সামাজিক সুরক্ষা ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে শামিল হয়েছে। এক আমলা বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় প্রকল্পে যোগ দিয়ে তিক্ততা কমানোই শুধু নয়, প্রয়োজনে দিল্লিতে এ বিষয়ে দরবার করতে রাজ্য থেকে অফিসার পাঠানো যেতে পারে।’’

Advertisement

নবান্নের খবর, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে যোগ দিলে এ রাজ্যের ১১ কোটি মানুষ বছরে ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমার সুবিধা পেতেন। প্রিমিয়াম বাবদ প্রায় ১২০০ কোটি টাকার ৬০ ভাগ পাওয়া যেত কেন্দ্র থেকে। রাজ্য প্রকল্পে যোগ না দেওয়ায় কেন্দ্র এই প্রকল্পে দেওয়া ২০০ কোটি টাকা রাজ্যের থেকে ফেরত চেয়েছে। এছাড়া, নিজস্ব স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পের খরচ পুরোটাই দিতে হচ্ছে রাজ্যকে। চাষের খরচ বাবদ কৃষককে বছরে ৬ হাজার টাকা দেওয়ার পিএম-কিষাণ প্রকল্পেও যোগ দেয়নি রাজ্য। রাজ্যের ৭২ লক্ষ চাষির এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার কথা ছিল। অথচ রাজ্য নিজস্ব কৃষক বন্ধু প্রকল্প চালু করে টাকা দেওয়া শুরু করেছে। অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের জন্য এ বারের বাজেটে ঘোষিত পেনশন প্রকল্পেও যোগ দেয়নি রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে রাজ্যের নিজস্ব প্রকল্পই যথেষ্ট। কিন্তু ওই আমলাদের মতে, দিল্লির সমান্তরাল প্রকল্প চালিয়ে বাড়তি আর্থিক বোঝা টানা অপ্রয়োজনীয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement