প্রায় ২৫০ বছরের পুরোনো কালীপুজোকে ঘিরে উৎসববের মেজাজে ভাসছে শক্তিপুরের তালডাঙা গ্রাম। দেবী এখানে ‘ডাকাতিয়া কালী’ নামে পরিচিত। জেলা ছাড়িয়ে বর্ধমান ও বীরভূমেও এই পুজোর খ্যাতি ছড়িয়েছে। সারা বছরই শনি ও মঙ্গলবারে পুজো হয়। জেলা ও জেলার বাইরের ভক্তেরা পুজো দিতে মন্দিরে উপস্থিত হন। কালীপুজোর দিন তালডাঙার মন্দির প্রাঙ্গণে পুজো ঘিরে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। বসে বড় মেলাও। লোকমুখে শোনা যায়, আনুমানিক প্রায় ২৫০ বছর আগে তালডাঙার হাজরা বাগদি জনগোষ্ঠীর এই পুজো শুরু করেন। ভয়ংকর দর্শনা এই কালী প্রতিমাকে ঘিরে নানা কাহিনি রয়েছে।
জনশ্রুতি, হাজরাদের পূর্বপুরুষদের কেউ কেউ এক কালে ডাকাত ছিলেন। এক অমাবস্যার রাতে তালডাঙার বিল পেরিয়ে জঙ্গলের ভেতর দিয়ে ডাকাতি করতে যাওয়ার সময় পথে একটি কালীর অসম্পূর্ণ মূর্তি দেখেন। পরে তাঁরা স্বপ্নাদেশে মূর্তিপুজোর নির্দেশ পান। সেই থেকে চলছে এই পুজো। কথিত আছে তারপর থেকে ওই দেবীর আরাধনা করেই মশাল জ্বালিয়ে ডাকাতি করতে বেরোতেন ডাকাতেরা। তার থেকেই এই নামকরণ।
শক্তিপুর কেএমসি ইন্সটিটিউট এর প্রবীণ শিক্ষক প্রদীপ নারায়ন রায় জানান, আনুমানিক ২৫০ বছর ধরে এই কালী প্রতিমা এলাকায় ‘ডাকাত কালী’ হিসাবে প্রসিদ্ধ। এই পুজো শুরু হয়েছিল বর্তমান কাটোয়া-আজিমগঞ্জ রেল লাইনের পশ্চিমে এক বিলের পাশে। পরে পুজো অন্যত্র সরে যায়। প্রথমে মাটির মন্দিরে পুজো হত। এখন পাকা মন্দির গড়ে উঠেছে। পরেও বিভিন্ন এলাকার ডাকাতেরা ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে এখানে পুজো দিয়ে ডাকাতি করতে যেত বলে জানা যায়। এছাড়াও নানা কাহিনী লোকমুখে প্রচলিত। তার পর থেকেই এই কালী ‘ডাকাতকালী’ নামে খ্যাত হয়েছে। কালী পুজোর দিন ভয়ংকর দর্শনা এই কালীমূর্তি এখানে পূজিত হয়। পুজো উদ্যোক্তা কানাই হাজরা জানান, মানুষের মানসিক আসে এই পুজোয়। গ্রামের বড় মন্দিরে দেবীর আরাধনা হয়।