কল্যাণী

রেল অবরোধ, গ্রেফতার ৩০

বন্ধ কারখানা খোলা, শ্রমিক ভাতা মাসে তিন হাজার টাকা করা-সহ একগুচ্ছ দাবিতে মঙ্গলবার কল্যাণী স্টেশনে রেল অবরোধ করলেন অসংঘটিত শ্রমিক ও তাঁদের পরিজনেরা। সকাল ন’টা দশে শিয়ালদহ-লালগোলাগামী আপ লালগোলা প্যাসেঞ্জারকে আটকে শুরু হয় অবরোধ। তার পনেরো মিনিটের মধ্যেই অবরোধকারীদের হঠিয়ে দেয় রেল পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানাঘাট শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৫ ০১:৫৯
Share:

কল্যাণীতে রেল অবরোধ। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

বন্ধ কারখানা খোলা, শ্রমিক ভাতা মাসে তিন হাজার টাকা করা-সহ একগুচ্ছ দাবিতে মঙ্গলবার কল্যাণী স্টেশনে রেল অবরোধ করলেন অসংঘটিত শ্রমিক ও তাঁদের পরিজনেরা। সকাল ন’টা দশে শিয়ালদহ-লালগোলাগামী আপ লালগোলা প্যাসেঞ্জারকে আটকে শুরু হয় অবরোধ। তার পনেরো মিনিটের মধ্যেই অবরোধকারীদের হঠিয়ে দেয় রেল পুলিশ। বেআইনি জমায়েত ও অবরোধ করার অভিযোগে ৩০ জন অবরোধকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটক করা হয় ব্যানার, প্ল্যাকার্ড।
এ দিন সকাল সাড়ে আটটায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা কল্যাণী স্টেশন থেকে কিছু দূরে ডিসি বিল্ডিংয়ের কাছে জড়ো হন। পরে তাঁরা একাধিক দাবির সমর্থনে লেখা প্লাকার্ড হাতে মিছিল করে স্টেশনে পৌঁছন। শুরু হয় অবরোধ। লালগোলা প্যাসেঞ্জার এক নম্বর প্লাটফর্মে ঢোকার আগেই ট্রেনটিকে দাঁড় করিয়ে দেন অবরোধকারীরা। কয়েক মিনিটের মধ্যে তিন নম্বর প্লাটফর্মে আটকানো হয় লালগোলা-শিয়ালদহগামী ডাউন ভাগীরথী এক্সপ্রেসকে। মিনিট দশেকের মধ্যেই বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন আরপিএফের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ড্যান্ট উজ্জলকুমার পাত্র এবং জিআরপি রানাঘাটের আইসি সুভাষ রায়। তাঁরা বুঝিয়ে-সুঝিয়ে অবরোধ তুলতে ব্যর্থ হয়ে শেষমেষ ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন।

Advertisement

অবরোধকারীদের অভিযোগ, ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল দলীয় ইস্তেহারে কারখানা খোলা, বন্ধ কারখানার শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু, গত ৪ বছরে বন্ধ হয়ে থাকা কারখানা খোলেনি। উল্টে বন্ধ হয়েছে। একই ছবি কল্যাণী শিল্পাঞ্চলেও। এখানেও বন্ধ কারখানার শ্রমিকেরা অসহায় অবস্থায় রয়েছেন। একের পর এক জুটমিল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ দিকে, অসংঘটিত শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি, পরিচয় পত্র, পিএফ, ইএসআই-এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। এ নিয়ে রাজ্য সরকারের কোনও হেলদোলও নেই।

প্রাপ্য আদায়ে দলমত নির্বিশেষে বন্ধ কারখানা ও অসংঘটিত শিল্পের শ্রমিকেরা ‘সংযুক্ত সংগ্রাম কমিটি’ গড়ে আন্দোলনে নেমেছেন। সংগঠনের দাবি, দ্রুত বন্ধ কারখানা খুলতে হবে, শ্রমিক ভাতা মাসে তিন হাজার টাকা করতে হবে, ভাতা দেওয়ার ৫৮ বছরের ঊর্ধ্বসীমা বাতিল করতে হবে, বিপিএল কার্ড দিতে হবে ইত্যাদি। কমিটির এক সদস্য জানান, দাবি-দাওয়ার কথা বহুবার শ্রমমন্ত্রী ও সচিবদের জানানো হয়েছিল। কিন্তু, ফল হয়নি। ‘‘তাই বাধ্য হয়ে অবরোধ’’—বলছেন তিনি।

Advertisement

২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল কল্যাণী স্টেশন। লাঠিচার্জ থেকে ইট-বৃষ্টি, বাদ যায়নি কিছুই। সম্ভবত সেই কারণেই আগে থেকে প্রস্তুত ছিল রেল প্রশাসন। সকাল আটটা থেকেই ভিড় জমতে শুরু করে আরপিএফ এবং জিআরপি কর্মীদের। বন্দুক, লাঠিধারী পুলিশ ছাড়াও কাঁদানে গ্যাসের ব্যবস্থা ছিল। ধৃতদের এ দিন রানাঘাট মহকুমার আদালতে হাজির করা হয়েছিল ।

অবরোধ কর্মসূচিতে ভোগান্তি পোহাতে হয় রেলযাত্রীদের। বাধ্য হয়ে অনেকেই বাসে গন্তব্যস্থলে গিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন