বিডিওকে মারধরে ধৃত চার কংগ্রেস সমর্থক

লালগোলার বিডিও স্বপ্নজিৎ সাহা-কে মারধরের ঘটনায় চার কংগ্রেস কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতেরা হলেন কালমেঘা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জালালউদ্দিন শেখ, মানিকচক পঞ্চায়েতের সদস্য আতাউর রহমান ও আরও দুই কংগ্রেস সমর্থক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৫ ০১:১০
Share:

লালগোলার বিডিও স্বপ্নজিৎ সাহা-কে মারধরের ঘটনায় চার কংগ্রেস কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতেরা হলেন কালমেঘা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জালালউদ্দিন শেখ, মানিকচক পঞ্চায়েতের সদস্য আতাউর রহমান ও আরও দুই কংগ্রেস সমর্থক। ধৃতদের শুক্রবার লালবাগ মহকুমা আদালতে হাজির করানো হলে জালালউদ্দিন শেখ ও আতাউর রহমানকে তিন দিনের পুলিশ হেফাজত ও বাকি দু’জনের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। বিডিও-কে মারধরে অভিযুক্ত লালগোলা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা কংগ্রেসের লালবাগ মহকুমা সভাপতি সুজাউদ্দিন, লালগোলা পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান অজয় ঘোষ, রামচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের প্রধান জেসমিনারা খাতুন ও লালগোলা ব্লক কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কবিরুল ইসলাম-সহ অভিযুক্তরা পলাতক। মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, ‘‘পলাতকদের গ্রেফতারের জন্যে পুলিশি অভিযান চলছে।’’

Advertisement

বৃহস্পতিবার ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেওয়া এক দল কর্মী-সমর্থকের হাতে ব্লক অফিসে প্রহৃত হয়েছিলেন বিডিও। ওই হামলায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ ওঠে লালবাগ মহকুমা কংগ্রেস সভাপতি তথা লালগোলা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সুজাউদ্দিনের বিরুদ্ধে। ওই একই ঘটনায় এক বৃদ্ধাকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিডিও-র বিরুদ্ধে। বিডিও-র কাছে ত্রাণের তারপলিন চাইতে যাওয়া ষাটোর্ধ্ব ওই বিধবার নাম ডলি বিশ্বাস। প্রহৃত বিডিও এবং জখম বৃদ্ধা দু’ জনকেই স্থানীয় কৃষ্ণপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বৃহস্পতিবার রাতেই বিডিও-কে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ডলিদেবী রয়েছেন কৃষ্ণপুর গ্রামীণ হাসপাতালেই। হাসপাতালে শুয়ে বিডিও বলেন, ‘‘সারা শরীরের ব্যাথা রয়েছে। হাত তুলতে পারছি না। কানেও যন্ত্রণা রয়েছে।’’

ডলিদেবীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বিডিও বলেন, ‘‘আমি কখন ওই মহিলাকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিলাম? আসলে রাজনৈতিক দলের স্বার্থে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজানো হচ্ছে।’’ বিক্ষোভ সমাবেশ চলার সময় কংগ্রেসের সমর্থক ওই বৃদ্ধা-সহ কয়েকজন দুঃস্থ মহিলা বিডিও-র কাছে ত্রাণের তারপলিন চাইতে গেলে মারপিট হয়। বিডিও প্রহৃত হন, মাথা ফাটে বৃদ্ধা বিধবা ডলিদেবীর। মাথা ফাটানোর জন্য তিনি অবশ্য পুলিশের কাছে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করেননি। ওই বিষয়ে তিনি কথা বলতে না চাইলেই তাঁর প্রতিবেশি তথা বাহাদুরপুর গ্রাম পঞ্চয়েত প্রধান কংগ্রেসের দয়ারানি হালদার বলেন, ‘‘তৃণমূলের পক্ষ থেকে দলের সমর্থক ডলিদেবীর বাড়ি চড়াও হয়ে এফআইআর না করার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ভয়ে তিনি পুলিশের কাছে নালিশ করতে পারেননি।’’

Advertisement

লালগোলা ব্লক তৃণমূল সভাপতি আবুল কাশেমের দাবি, ‘‘বিডিও-কে মারধর করে কংগ্রেস আসলে বিষয়টিকে বিপথে চালাতে চাইছে। আমাদের দলের কেউ কাউকে হুমকি দেয়নি।’’ বিডিও-কে মারধরে অভিযুক্ত লালগোলা পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান অজয় ঘোষের দাবি তিনি তখন ঘটনাস্থলে ছিলেন না। তাঁর দাবি ‘‘আসলে বিডিও-র তুঘলকি আচরণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ করেছি। তিনি তার বদলা নিতে মিথ্যা মামলা সাজিয়েছেন। বন্যা দুর্গতদের তারপলিন না দিয়ে দিনের পর দিন হয়রান করে তিনি পরিস্থিতি তাতিয়ে রেখেছিলেন। বৃহস্পতিবারের ঘটনা তারই পরিণতি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন