কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার। —নিজস্ব চিত্র।
এক বছর আগে ইন্দিরা গাঁধী জাতীয় মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইগনু) বিভিন্ন কোর্সে ভর্তি হয়েছিলেন বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের ৬৮ জন আবাসিক। সম্প্রতি তাঁদের পরীক্ষার ফল বেরিয়েছে। দেখা গিয়েছে, ৪৭ জন আবাসিক সফল হয়েছেন।
বিচারাধীন এবং সাজাপ্রাপ্তদের মূলস্রোতে ফেরানোর লক্ষ্যে তাঁদের পড়াশোনা এবং বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষায় উৎসাহিত করার বিষয়টি নতুন নয়। গত বছর বহরমপুর সংশোধনাগারে স্টাডি সেন্টার খুলেছিল ইগনু। ওই বছরের জুলাইয়ে সংশোধনাগারের ৬৪ জন আবাসিক ইগনুর বিপিপি (ব্যাচেলর প্রিপারেটরি প্রোগ্রাম) কোর্সে ভর্তি হন। প্রসঙ্গত, দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় পাশ করেননি এমন কেউ স্নাতক স্তরে ভর্তি হতে চাইলে তাঁকে আগে ছ’মাসের বিপিপি কোর্স পাশ করতে হবে। বাকি চার আবাসিক ভর্তি হয়েছিলেন স্নাতক স্তরে। গত ৯ অগস্ট স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের পরীক্ষা এবং বিপিপির ফল প্রকাশিত হয়েছে। ইগনুর রঘুনাথগঞ্জ আঞ্চলিক (মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূম জেলা নিয়ে গঠিত) শাখার অধিকর্তা শান্তনু মুখোপাধ্যায় জানান, বিপিপিতে ৫৩ জন পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৪৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। ৪৩ জনের মধ্যে ২৯ জন সাজাপ্রাপ্ত এবং বাকিদের এখনও বিচার চলছে।
অন্যদিকে, স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় চারজন পরীক্ষা দিয়ে চারজনই উত্তীর্ণ হয়েছেন। বিপিপি কোর্স উত্তীর্ণরা ইতিমধ্যে স্নাতক কোর্সে ভর্তি হতে শুরুও করে দিয়েছেন। আবাসিকদের এই সাফল্যে উজ্জীবিত বোধ করছেন সংশোধনাগারের অন্য আবাসিকরা। জিয়াগঞ্জের আর ডি কে কলেজে ইগনুর স্টাডি সেন্টারের কো অর্ডিনেটর গিরিধারী সাহা জানিয়েছেন, চলতি বছর বিপিপি কোর্সে ১০০ জনের বেশি আবাসিক ভর্তি হয়েছেন। সংশোধনাগারের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ইগনুর কোর্সে লেখাপড়া করায় আবাসিকদের মানসিকতার বদল ঘটছে। আগে ওরা সারাদিন শুয়ে বসে কাটাত। এখন ওরা কাজকর্মে উৎসাহিত বোধ করছে। সারাদিন কিছু না কিছু কাজের মধ্যে নিজেদের তারা যুক্ত রাখছে।’’ সংশোধনাগারের সুপার টি আর ভুটিয়া বলেন, ‘‘ইগনুর স্টাডি সেন্টারে আবাসিক পড়ুয়ারা নিখরচায় লেখাপড়া শিখতে পারবেন। তাঁদের বই-খাতা এবং লেখাপড়ার অন্য উপকরণ ইগনু কর্তৃপক্ষ বিনামূল্যে সরবরাহ করবেন।’’