উপনির্বাচনের ভোট গণনা শেষ হওয়ার আগেই কালীগঞ্জে বোমাবাজিতে মৃত্যু হল এক নাবালিকার। ছবি: সংগৃহীত।
বিধানসভার উপনির্বাচনের ভোটগণনার দিনই কালীগঞ্জে মর্মান্তিক ঘটনা। বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হল এক নাবালিকার। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, তৃণমূলের বিজয়মিছিল থেকে বোমা ছোড়া হয় সিপিএম কর্মীদের বাড়ি লক্ষ্য করে। সেই বোমা ফেটেই মৃত্যু হয় ওই নাবালিকার। ঘটনায় উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম, আফতাব শেখ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, উপনির্বাচনে জয় নিশ্চিত হতেই বিজয়মিছিল বার করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। অভিযোগ, সেই মিছিল থেকে বোমা ছোড়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে কালীগঞ্জের মেলেন্দি এলাকায়। বাড়ি ফেরার পথে ওই বোমার আঘাতে আহত হয় ওই নাবালিকা। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় নাবালিকার। জানা গিয়েছে, মৃতের নাম তামান্না খাতুন। সে চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া। মৃতার মা সাবিনা ইয়াসমিন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমি দেখেছি কারা বোমা ছুড়েছে। আমরা সিপিএম করি। ওদের নাম না জানলেও সকলের মুখ চেনা, সবাই তৃণমূল করে।’’
কালীগঞ্জে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিরোধীরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে বোমাবাজির অভিযোগ তুলেছে। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয় ঘটনার নিন্দা করেছেন। তাঁর দাবি, তৃণমূল রক্তপাত ছাড়া ভোটে জিততে পারে না! তাঁর প্রশ্ন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালে এটাই জয়ের মূল্য? যদিও তৃণমূল বোমা ছোড়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনায় উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। রাজ্য পুলিশও জানিয়েছে, এই ঘটনার নেপথ্যে থাকা দোষীদের গ্রেফতার করতে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। জেলা পুলিশ সুপার অমরনাথ কে জানিয়েছেন, এই এলাকায় ২০২৩ সাল থেকে দুই গোষ্ঠী মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। সেই দ্বন্দ্ব থেকে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, বোমার স্প্রিন্টারের আঘাতে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্ত ও ফরেন্সিক রিপোর্ট এলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।
ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন কালীগঞ্জে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী আলিফা আহমেদ। তিনিও দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কালীগঞ্জে জয়ী হয়েছিলেন নাসিরুদ্দিন (লাল) আহমেদ। তাঁর মৃত্যুতে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এই কেন্দ্রে। সেই উপনির্বাচনে ৪৯,৭৫৫ ভোটে জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থী তথা নাসিরুদ্দিনের কন্যা আলিফা। আর ভোটগণনার দিনেই কালীগঞ্জে শোকের ছায়া।