Extramarital Affair Case

শিশুকে খুন করে ছুড়ে দেন মালগাড়িতে! হাওড়ায় মেলে দেহ, জখম মা উদ্ধার বর্ধমানে, নেপথ্যে পরকীয়া

প্রেমিকাকে শ্বশুরবাড়ি ফিরে যেতে চাপ দেন। কিন্তু তিনি রাজি না হওয়ায় তাঁর পুত্রসন্তানকে রেললাইনে পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করার অভিযোগ উঠল যুবকের বিরুদ্ধে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন

চাপড়া শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৩ ০১:৪২
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

প্রেমিকা বিবাহিতা। তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিন দিন ধরে রাজ্যের একাধিক হোটেলে কাটিয়েছেন যুবক। শেষমেশ সেই সম্পর্ক অস্বীকার করেন অভিযুক্ত। প্রেমিকাকে তিনি শ্বশুরবাড়ি ফিরে যেতে চাপ দেন। কিন্তু ওই যুবতী তাতে রাজি না হওয়ায় তাঁর পুত্রসন্তানকে রেললাইনে পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করার অভিযোগ উঠল যুবকের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, খুনের প্রমাণ লোপাট করতে একটি মালগাড়ির উপর তিনি শিশুটির দেহ ছুড়ে দেন বলে অভিযোগ। প্রাণ বাঁচাতে ওই মালগাড়িতেই উঠেছিলেন প্রেমিকা। শেষে হাওড়া স্টেশন থেকে রেল পুলিশ (জিআরপি) শিশুটির দেহ উদ্ধার করেছে। বর্ধমান স্টেশনে জখম অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে যুবতীকে। অভিযুক্ত অবশ্য পলাতক। তাঁর খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, জখম ওই মহিলার বাড়ি নদিয়ার চাপড়ায়। ১০ বছর আগে সম্বন্ধ করে বিয়ে হয় তাঁর। দম্পতির পুত্রসন্তান মাসখানেক আগে স্থানীয় একটি বেসরকারি মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। সেই সূত্রেই মাদ্রাসার শিক্ষক জিবায়তুল্লাহ শেখের সঙ্গে যুবতীর পরিচয়। সেখান থেকে দু’জনের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। পরকীয়ার কারণে স্বামীর সঙ্গে যুবতীর সম্পর্কের অবনতি হয়। এর পর ওই শিক্ষকের সঙ্গে ঘর ছেড়েছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিল সন্তান।

পুলিশকে ওই যুবতী জানিয়েছেন, প্রেমিক আদতে ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। বাড়ি থেকে বেরিয়ে কৃষ্ণনগরের এক মুসলিম রেজিস্টারের কাছে দু’জনে বিয়েও করেন। তার পর সন্তানকে নিয়ে শান্তিনিকেতনের একটি হোটেলে ওঠেন তিন জন। এর পর একের পর এক হোটেল বদল করেন তাঁরা। যুবতীর দাবি, শনিবার রাতে জিবায়তুল্লাহ তাঁকে বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য চাপ দেন। কিন্তু তিনি রাজি হননি। কথা কাটাকাটির পর শনিবার গভীর রাতে ট্রেন ধরার জন্য পূর্ব বর্ধমানের থানা জংশন উপস্থিত তিন জন। কিন্তু রাতে কোনও লোকাল ট্রেন না পাওয়ায় রেললাইন ধরে হাঁটছিলেন তাঁরা। সে সময়ই এই কীর্তি করেন অভিযুক্ত।

Advertisement

যুবতীর অভিযোগ, তাঁর ছেলেকে খুনের পাশাপাশি তাঁকে মারধর করে নগদ ৭০ হাজার টাকা এবং সোনার গয়না নিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন তাঁর ‘প্রেমিক’।

যুবতী আরও জানান, মালগাড়িতে উঠে ফোনে তাঁর ভাই রফিকুলকে সমস্ত কথা খুলে বলেন। তার পর তাঁকে বর্ধমান থেকে উদ্ধার করে পরিবার। রফিকুলের তৎপরতায় শিশুটির দেহ উদ্ধার হয় হাওড়ায়। রবিবারই ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় শিশুটির দেহ। চাপড়ায় তার শেষকৃত্য হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইনকে ওই যুবতী বলেন,“আমার ভুলের জন্য সন্তানটা খুন হয়ে গেল।” তাঁর পরিবার সূত্রে খবর, এই ঘটনার পর তিনি শারীরিক এবং মানসিক ভাবে অসুস্থ। তাঁকে গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। যুবতীর বোন রাবেয়া বিবি বলেন, “বোনকে প্রলোভন দেখিয়ে ওর স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করেছে ওই যুবক। বিয়ের অভিনয় করে বোনকে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিল ও।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন