শিক্ষকদের খরচে মাংস, মিডডে’তেই পিকনিক

জলঙ্গির পিছিয়ে পড়া এলাকা বলে পরিচিত খয়রামারি। ওই গ্রামের মাধ্যমিক স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা হাজারখানেক। অন্যদিকে, পার্শ্বশিক্ষকদের নিয়ে শিক্ষকের সংখ্যা ১৯। দরিদ্র এলাকার এই স্কুলে প্রধানত দুঃস্থ পরিবারের ছেলেমেয়েরাই পড়াশোনা করে। ফলে শীতের মরসুমে অন্যেরা পিকনিকে মাতলেও ওদের সেই সুযোগ হয় না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খয়রামারি শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০৭:৩০
Share:

চলছে খাওয়া-দাওয়া। নিজস্ব চিত্র

প্রধানত কৃষিপ্রধান এলাকা। স্কুলের পড়ুয়াদের অধিকাংশের পরিবারই গরিব। ফলে শীতের পিকনিেক মেতে ওঠার ইচ্ছে থাকলেও সামর্থ্যে কুলোয় না ওদের। এ বার স্কুলেই তাদের পিকনিকের আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করলেন জলঙ্গির খয়রামারি স্কুলের একদল শিক্ষক। নিজেদের টাকায় মিষ্টি-মাংসের ব্যবস্থা করলেন তাঁরা। তারপর মিডডে মিল এবং ওই খাবার দিয়েই পিকনিকের মেজাজে খাওয়াদাওয়া হল বুধবার।

Advertisement

জলঙ্গির পিছিয়ে পড়া এলাকা বলে পরিচিত খয়রামারি। ওই গ্রামের মাধ্যমিক স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা হাজারখানেক। অন্যদিকে, পার্শ্বশিক্ষকদের নিয়ে শিক্ষকের সংখ্যা ১৯। দরিদ্র এলাকার এই স্কুলে প্রধানত দুঃস্থ পরিবারের ছেলেমেয়েরাই পড়াশোনা করে। ফলে শীতের মরসুমে অন্যেরা পিকনিকে মাতলেও ওদের সেই সুযোগ হয় না। স্কুলের এক পড়ুয়া এদিন বলছিল, ‘‘কিছুদিন আগে বন্ধুরা পিকনিক করল। আমাকেও ওরা যেতে বলছিল। মা’কে গিয়ে টাকার কথা বলতেই মা আঁচলে চোখ মুছছিল। বুঝে গেলাম, মা কী বলতে চাইছে। দ্বিতীয়বার আর পিকনিকের নাম করিনি। সেদিনের দুঃখ স্যরেরা ঘুচিয়ে দিলেন।’’ এদিন দুপুরে মাঘের রোদ গায়ে মেখে সকলে মেতে গিয়েছিল পিকনিকে। খাবারের তালিকায় ছিল— খিচুড়ি আর মাংস। শেষ পাতে চাটনি আর রসগোল্লা। মিডডে মিলের খাওয়াদাওয়া রোজই হয় স্কুলে। কিন্তু সেই খাওয়াদাওয়াই যে পিকনিকের মেজাজ এনে দেবে, ভাবতে পারেনি পড়ুয়ারা। মাঠে পাত পড়ল ৯০০ জনের। দশম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া খাতুনের কথায়, ‘‘বন্ধুদের সঙ্গে এখন আর পিকনিক করা হয় না। শীত এলেই মন খারাপ হয়ে যেত। অনেকদিন পর পিকনিকের আনন্দ হল।’’ স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুনীল কুমার সরকার বললেন, ‘‘মিডডে মিলে ডাল-ভাত বা খিচুড়ি প্রতিদিনই রান্না হয়। শিক্ষকরা এমন একটা খাওয়াদাওয়ার কথা বললেন। ওঁরাই নিজেদের খরচে খিচুড়ির সঙ্গে মাংস, রসগোল্লার ব্যবস্থা করলেন। ভালই কাটল দিনটা’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন