—প্রতীকী চিত্র।
পুলিশের ‘স্পেশ্যাল অ্যান্টি বম্ব ডাইভ’ অভিযান চলছে মুর্শিদাবাদ জুড়ে। এই আবহে এক বধূর বাড়িতে লুকিয়ে বোমা রেখে ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠল। আরও অভিযোগ, ওই ‘চক্রান্তের’ জেরেই ‘আতঙ্কিত’ মহিলা শিরিনা বিবির মৃত্যু হয়েছে।
রানিনগরের চাকরানপাড়ায় বাসিন্দা শিরিনার (৪৯) অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় এলাকা জুড়ে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, রাজনৈতিক শত্রুতার জেরে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য রোজিনা বিবির ভাসুর মইদুল ইসলাম ও তাঁর অনুগামীরা শিরিনার বাড়িতে বোমা রেখে তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিলেন। সেই আতঙ্কের ফলেই রবিবার সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
পরিবারের অভিযোগ, রবিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে হানা দিয়ে তল্লাশি চালিয়েছিল পুলিশ। তখন কিছু পাওয়া যায়নি। কিছুক্ষণ পরে এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যায়। সেই সময় অন্ধকারে কয়েক জনের সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ করা যায়। পরিবারের দাবি, তার পরে পুলিশ আবার বাড়িতে এলে দেখা যায় বাড়ির পিছনের ফাঁকা জায়গায় একটি বালতিতে বোম রাখা আছে। অভিযোগ, মইদুল ও তাঁর লোকেরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশে নিজেরাই এই কাজ করে পুলিশকে খবর দিয়েছেন। আরও অভিযোগ, শিরিনার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই অভিযুক্তেরা বোমাগুলিকে সেই স্থান থেকে সরিয়ে ফেলেন। শিরিনার পরিবারের দাবি, ‘রহস্যজনক’ভাবে বোম লোপাটের পরে পুলিশ নিজেদের অবস্থান বদলে দাবি করে যে, ঘটনাস্থল থেকে আদৌ কোনও বোমা উদ্ধার হয়নি।
মৃতার ছেলে ইব্রাহিম শেখ এবং মেয়ে ডলি খাতুন উভয়েই উযুক্ত বিচার চেয়েছেন। ইব্রাহিম বলেন, ‘‘আগে পুলিশ এসে কিছুই পায়নি। পরে ওরা এসে বোমা রেখে যায়। মা মারা যাওয়ার পরে ওরা বোমা নিয়ে পালিয়ে যায়। ওদের এই চাপ সৃষ্টি ও হুমকির কারণেই আমার মা মারা গিয়েছে।’’ ডলির অভিযোগ, ‘‘একজন সিভিক ভলান্টিয়র তাঁকে ধমক দিয়ে বলেছেন বড়বাবু আসছে। কত কেস খেতে পারিস দেখব।’’
মৃতার পরিবার ঘটনার সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়ে ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত সদস্যার ভাসুর-সহ বেশ কয়েক জনের নামে রানিনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযুক্ত মইদুলের স্ত্রী দিলরুবা বিবি এই অভিযোগ অস্বীকার করে পল্টা বলেছেন, ‘‘তৃণমূল করলেও ওরা অন্য গোষ্ঠী। রাজনৈতিক ভাবে ফাঁসানোর জন্যই আমাদের নাম জড়ানো হচ্ছে।’’
এই প্রসঙ্গে ডোমকলের এসডিপিও শুভম বাজাজ বলেন, ‘‘মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তদের কেউ গ্রেফতার হয়নি। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ পুলিশ আধিকারিকের দাবি, “ওই জায়গা থেকে কোনও বোমা উদ্ধার হয়নি।’’