Municipal Election

সংরক্ষণের চূড়ান্ত তালিকা, আসন নিয়ে অঙ্ক কষা শুরু

কোথাও বর্তমান পুরপ্রধান নিজের পুরনো ওয়ার্ডে দাঁড়াতে পারছেন না, কোথাও দলের স্থানীয় নেতাকে খুঁজতে হচ্ছে অন্য ওয়ার্ড।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:১৫
Share:

প্রতীকী ছবি

পুরভোটে কবে হবে তার দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয়নি। কিন্তু আসন নিয়ে অঙ্ক কষা শুরু হয়ে গিয়েছিল জেলার সব পুরসভাতেই। আসন সংরক্ষণের যে খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল, তাই চূড়ান্ত হয়েছে। সেই তালিকা মতো কোথাও বর্তমান পুরপ্রধান নিজের পুরনো ওয়ার্ডে দাঁড়াতে পারছেন না, কোথাও দলের স্থানীয় নেতাকে খুঁজতে হচ্ছে অন্য ওয়ার্ড। কিন্তু নতুন ওয়ার্ডে দাঁড়াতে গেলে, নিজের দলেরই কোনও না কোনও প্রতিনিধি সেখানে লড়ার জন্য প্রস্তুত। তাই কোন দলের কে কোন ওয়ার্ডে দাঁড়াবেন, তা চূড়ান্ত করতে রীতিমতো নাজেহাল সব দলই।

Advertisement

জঙ্গিপুর বর্তমান পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলাম যেমন নিজের ৩ নম্বর ও উপ-পুরপ্রধান সমীর পণ্ডিত নিজের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে দাঁড়াতে পারছেন না। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডটিও মহিলা সাধারণের জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় সেখানে প্রার্থী হতে পারছেন না তৃণমূলের মহকুমা সভাপতি বিকাশ নন্দ। ধুলিয়ানে পুরপ্রধানের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে রক্ষা পেলেও সংরক্ষণে বাদ সেধেছে উপ পুরপ্রধানের ৩ নম্বর ওয়ার্ড। এই দুই পুরসভায় সংরক্ষণের খসড়া তালিকায় যে রদবদলের দাবি উঠেছিল, তা নাকচ হয়ে গিয়েছে। সোমবার সন্ধের পরে সংরক্ষণের চূড়ান্ত তালিকা হাতে পান স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলি। তালিকা অপরিবর্তিত থাকার ফলে ধুলিয়ান পুরসভায় ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে তফসিলি জাতির জন্য ১৯ নম্বর ওয়ার্ড, তফসিলি মহিলাদের জন্য ৫ নম্বর এবং সাধারণ মহিলাদের জন্য ৩, ৭, ১০, ১৩, ১৬, ২০ নম্বর ওয়ার্ডগুলি সংরক্ষিত রইল। জঙ্গিপুরে ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে তফসিলি জাতির জন্য ৮ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ড, তফসিলি মহিলাদের জন্য ১৬ নম্বর এবং সাধারণ মহিলাদের জন্য ৩, ৬, ১০, ১৪, ১৮, ২১ নম্বর ওয়ার্ডগুলি সংরক্ষিত রইল।

বহরমপুরে সংরক্ষমের তালিকা অনেক আগেই প্রকাশিত হয়েছে। সব দলই সেই মতো প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে এ বার সংরক্ষণের যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তার গেরোয় জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার পুরপ্রধান ও উপপুরপ্রধান এবং মুর্শিদাবাদ পুরসভার পুরপ্রধান ও উপপুরপ্রধান নিজেদের ওয়ার্ড থেকে লড়তে পারছেন না। গত পুরভোটে জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জের ১১ নম্বর ওয়ার্ড সাধারণের জন্য সংরক্ষিত ছিল। এ বছরের খসড়া তালিকায় ১১ নম্বর ওয়ার্ডটি মহিলা তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষণ করা হয়। এর পরে শাসকদল ওই আসনটি সাধারণের জন্য করার আবেদন জানায় জেলা নির্বাচন দফতরে। তবে সেই আবেদন নাকচ করেছে নির্বাচন দফতর। যদিও এদিন জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার পুরপ্রধান তৃণমূলের প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা নই, সাধারণ ভোটাররা কমিশনে আবেদন করেছিলেন।’’ এ দিন মুর্শিদাবাদ পুরসভার পুরপ্রধান তৃণমূলের বিপ্লব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আসন সংরক্ষণ নিয়ে কেউ কোনও আপত্তি জানায়নি। খসড়া তালিকা অপরিবর্তিত থাকল।’’

Advertisement

বেলডাঙা পুরসভায় মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে ২, ৩, ৬, ১০, ১৩। তফসিলি জাতির জন্য ছাড়া হয়েছে ৮ নম্বর ওয়ার্ড। বাকি আসনগুলি সাধারণের জন্য। সংরক্ষণের জেরে তিন নম্বর ওয়ার্ড থেকে এবারে লড়তে পারবেন না তৃণমূল কাউন্সিলর স্বপন চক্রবর্তী। ওই ওয়ার্ডটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুবীর হাজরার ওয়ার্ডটিও মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের কাউন্সিলর সুস্মিতা দে ঘোষ নিজের ওয়ার্ডে দাঁড়াতে পারছেন না। ওই আসনটি তফশিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত। ১০ নম্বর ওয়ার্ড মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। ফলে বিরোধী দলের নেতা বিজেপির সুমিত ঘোষ এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন না।

কান্দিতে ৩ ও ১১ নম্বর ওয়ার্ড তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত। ৪, ৭, ১০, ১৫ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ড সাধারণ (মহিলা) সংরক্ষিত। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডটি তফসিলি জাতিভুক্ত মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। বাকি ১০টি ওয়ার্ড সাধারণের জন্য বরাদ্দ। সিপিএমের কান্দি এরিয়া কমিটির সম্পাদক স্বরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আসন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে প্রশাসন শাসক দলের সুবিধা করে দিয়েছে।’’ প্রতিবাদ করেননি কেন? তাঁর জবাব, ‘‘প্রতিবাদে কাজ হয় না” কান্দি মহকুমা তৃণমূলের সভাপতি গৌতম রায় অবশ্য বলেন, “দলের কোনও নেতা বা কর্মী সংরক্ষণ নিয়ে চিন্তিত বলে মনে হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন