দুর্ব্যবহার, অসহযোগিতা, সরকারি নিয়মের বাইরে গিয়ে পড়ুয়াদের থেকে স্কুলের মাইনে বাবদ বেশি টাকা নেওয়া-সহ বেশ কিছু অভিযোগ তুলে নবদ্বীপ বকুলতলা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষিকাকে ঘেরাও করলেন অভিভাবকেরা। অন্য দিকে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মেয়েদের স্কুল চলাকালীন একদল বহিরাগতের স্কুলে চড়াও হয়ে প্রধানশিক্ষিকা-সহ অনান্য শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীদের হেনস্থার অভিযোগ জানিয়ে নবদ্বীপ থানায় ডায়েরি করলেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার সকাল সাড়ে দশটা-এগারোটা নাগাদ। এ দিন নবদ্বীপ বকুলতলা বালিকা বিদ্যালয় খোলার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে শতাধিক পুরুষ-মহিলা সোজা চলে যান দোতলায় স্কুলের প্রধানশিক্ষিকার ঘরে। তাঁরা বিভিন্ন অভিযোগ বিষয়ে প্রধানশিক্ষিকার কাছে কৈফিয়ত দাবি করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। কিন্তু প্রতিটি অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন এবং বিশেষ উদ্দেশ্যপ্রনোদিত’ হওয়ায় কোনও জবাব দেবেন না বলে অনড় অবস্থান নেন স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা মানসী দে। এই নিয়ে তাঁদের সঙ্গে প্রধানশিক্ষিকার তীব্র বাদানুবাদ শুরু হয়। অভিযোগ, এই সময় স্কুলের কয়েকজন শিক্ষিকা এবং কর্মী প্রধানশিক্ষিকার সমর্থনে এগিয়ে এলে বিক্ষোভকারীরা তাঁদেরও হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। শিকেয় ওঠে পঠনপাঠন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
অভিভাবকেরা স্কুলের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগের তালিকা তুলে ধরেন। তাঁদের প্রধান অভিযোগ স্কুল কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে সরকারি নিয়মের বাইরে গিয়ে ছাত্রীদের কাছ থেকে স্কুলের মাইনে বাবদ বেশি টাকা নিচ্ছেন। কিন্তু সেই অতিরিক্ত টাকা কেন নেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে কিছুতেই খোলসা করে জানাতে চাইছে না স্কুল। তাঁরা আরও বলেন, কোন বিষয়ে কিছু জানতে বুঝতে না পেরে অভিভাবকেরা স্কুলে এলে তাঁদের সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করা হয়। কন্যাশ্রী প্রকল্প বা অনান্য কোন প্রয়োজনে কোন সইসাবুদের দরকার হলে মেয়েদের বারবার ঘুরতে হয়। স্কুলের ছুটি, দিদিমণিদের আসা যাওয়া নিয়েও একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দেন বিক্ষোভে সামিল হওয়া মহিলা পুরুষেরা। এক অভিভাবক বলেন, “অন্য সব স্কুলে যেখানে ২৪০ টাকা মাইনে নেয়,এখানে সেটা ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকা। কেন বেশি টাকা নেওয়া হয় আজ আমরা জানতে চাইতেই প্রধানশিক্ষিকা বলেন, ‘যা বলার এসআইকে বলব। সেখান থেকে জেনে নেবেন।’
যদিও তাঁর বা স্কুলের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছেন প্রধানশিক্ষিকা মানসী দে। তিনি সাফ জানিয়েছেন, তাঁকে এবং স্কুলের অনান্যদের হেনস্থা করার জন্য এটি একটি সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ। কিছু মানুষ এ দিন স্কুলে এসে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করতে চেয়েছিলেন।