প্রার্থী বাছাই নিয়ে চাপা অসন্তোষ বিজেপিতে

পুরসভায় বিজেপির প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে কলকাতায় রীতিমতো লাঠালাঠির ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে আসতে হয়েছে পুলিশকে। মুর্শিদাবাদেও ওই একই কারণে প্রকাশ্যে এসেছে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল। সেখানে নদিয়ায় বিজেপি প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিলেন কোনও বড় গোলমাল ছাড়াই। তা নিয়ে রীতিমতো খুশি দলের জেলা সভাপতি কল্যাণ নন্দী। তিনি বলেন, “আমাদের জেলায় প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে কোনও সমস্যা হয়নি। আমাদের লক্ষ্য যত বেশি সম্ভব আসনে জয়ী হওয়া।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৫ ০২:৩২
Share:

পুরসভায় বিজেপির প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে কলকাতায় রীতিমতো লাঠালাঠির ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে আসতে হয়েছে পুলিশকে। মুর্শিদাবাদেও ওই একই কারণে প্রকাশ্যে এসেছে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল। সেখানে নদিয়ায় বিজেপি প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিলেন কোনও বড় গোলমাল ছাড়াই। তা নিয়ে রীতিমতো খুশি দলের জেলা সভাপতি কল্যাণ নন্দী। তিনি বলেন, “আমাদের জেলায় প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে কোনও সমস্যা হয়নি। আমাদের লক্ষ্য যত বেশি সম্ভব আসনে জয়ী হওয়া।”

Advertisement

কিন্তু কী বলছেন দলের নিচুতলার কর্মীরা? সেখানে কিন্তু অসন্তোষের গুঞ্জন থামছে না। তাঁদের একাংশের দাবি, “জেলা নেতাদের অঙ্গুলিহেলনে তাঁদের অনুগামীদের বেছে বেছে প্রার্থী করা হয়েছে। যাঁরা প্রকৃত অর্থে দলটা দীর্ঘদিন ধরে করে আসছেন তাঁদের বঞ্চিত করা হয়েছে।” তাঁদের বক্তব্য, প্রকৃত কর্মীদের অবহেলা করায় এর আগেও দল ঘা খেয়েছে। সম্প্রতি কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রবল ঢাকঢোল পিটিয়ে, একাধিক গায়ক-অভিনেত্রীকে নিয়ে এসে প্রচার চালায় বিজেপি। নির্বাচনী এলাকা প্রায় চষে ফেলেছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। কিন্তু যাঁকে প্রার্থী করা হয়েছিল, তাঁর সঙ্গে রাজনীতির যোগ প্রায় ছিল না বললেই চলে। কর্মীদের ক্ষোভ, বিজেপির হতাশাজনক ফলাফল হওয়ার সেটাও একটা বড় কারণ।

এ বার দলীয় কর্মীদের ক্ষোভ শান্ত করতে প্রার্থী বাছাইয়ে সংশ্লিষ্ট পুরসভার মণ্ডলের উপরেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। দলের নেতাদের দাবি, সেখানে প্রার্থী হওয়ার জন্য যে আবেদন জমা পড়েছিল, তারই ভিতর থেকে বুথ কমিটির সভাপতিদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রার্থী নির্বাচন করা হয়েছে। তাঁরাই তালিকা তৈরি করে জেলায় পাঠিয়েছেন। যদিও এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন দলের অনেকেই। তাঁদের ক্ষোভ, বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে যাঁদের বিজেপি প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে, তাঁদের সঙ্গে আসলে রাজনীতির যোগ অতি সামান্য। অথচ সেই সব এলাকায় দল করছেন দীর্ঘ দিন, এমন লোক কম নেই।

Advertisement

দলীয় সংগঠন নিয়ে যতই প্রত্যয়ী দেখাক নেতাদের, ঘটনা হল যে বেশ কয়েকটি আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি বিজেপি। অবশ্য গত নির্বাচনে সাতটি পুরসভায় মাত্র ৩৮টি আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছিল বিজেপি। এবার সেই সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে ১৩৯টি। তবু তাঁরা শান্তিপুরে সাতটি, হরিণঘাটায় একটি, গয়েশপুরে একটি, বীরনগরে দু’টি ও রানাঘাটে একটি আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি। বিজেপির জেলা নেতাদের অবশ্য দাবি, ওই সব আসনে প্রার্থী ঠিক হয়ে গেলেও, তৃণমূলের হুমকির ভয়ে অনেকেই শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে এসেছেন। বিজেপির জেলা কমিটির মুখপাত্র সৈকত সরকার বলেন, “আমরা সবকটি আসনেই প্রার্থী ঠিক করে ফেলেছিলাম। কিন্তু এই সামান্য কয়েকজন তৃণমূলের হুমকির ভয়ে শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে গিয়েছেন।” সিংহভাগ আসনেই প্রার্থী দিতে পারাকেই অনেক বিজেপি নেতা বড় সাফল্য বলে মনে করতে শুরু করেছেন। তাঁদের দাবি, এত দিন প্রার্থী খুঁজে পাওয়াই কঠিন হয়ে পড়ত। প্রতিটি পুর এলাকায় কয়েকটি আসনে তাঁরা প্রার্থী দিতে পারতেন। এ বার প্রায় সব আসনেই বিজেপি প্রার্থী দিতে পেরেছে।

কিন্তু প্রার্থী দেওয়া এক কথা, ভোট পাওয়া আর এক। শেষ অবধি কতটা ভরবে বিজেপির ঝুলি, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন