টাকা পড়ে আছে তহবিলে

খুদে পড়ুয়ার পাত পড়ছে শালপাতায়

এ বার সে দিকে নজর পড়েছে বটে, বরাদ্দ হয়েছে সেই খাতে টাকাও। কিন্তু রাজ্যের অধিকাংশ স্কুলেই সে সব কেনার বালাই নেই। প্রয়োজনই মনে করছেন না অনেকে।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৭ ০০:৪৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

স্কুলের শেষে নিতান্তই পাত পেড়ে ভাত-ডাল-তরকারির আহারের টানে পড়ুয়াদের টেনে আনার মিড-ডে মিল এখন কোথাও কেমন স্বাদ বদলাচ্ছে, ডিম, হপ্তায় এক দিন মাংসও।

Advertisement

কিন্তু, পুরনো এই নিয়মে নজর দেওয়ার প্রয়োজনই মনে হয়নি পড়ুয়াদের পাতের দিকে। বাড়ি থেকে আনা তোবড়ানো থালা-গেলাস বদলে কোথাও শালপাতার প্রচলন হলেও পরিচ্ছন্ন থালা-বাটি যে খাবারের মতোই অপরিহার্য, সে ব্যাপারে তেমন ভাবনাই ছিল না সরকারের।

এ বার সে দিকে নজর পড়েছে বটে, বরাদ্দ হয়েছে সেই খাতে টাকাও। কিন্তু রাজ্যের অধিকাংশ স্কুলেই সে সব কেনার বালাই নেই। প্রয়োজনই মনে করছেন না অনেকে।

Advertisement

বছর দেড়েক আগের সেই নির্দেশ বাধ্যতামূলক করতে এ বার তাই স্কুল শিক্ষা দফতরের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, ওই অর্থে ছেলেমেয়েদের থালাবাটি কেনা না হলে টাকাই ফিরিয়ে নেওয়া হবে।

আর, সে ‘হুমকি’তে কিঞ্চিৎ কাজ হয়েছে, জেলায় ফরমান জারি হয়েছে, পড়ুয়ার জন্য থালা-গেলাস কেনা না হলে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে, এ ব্যাপারে বেশ পিছিয়ে নদিয়া জেলা। বরং তুলনায় ছবিটা কিঞ্চিৎ ভাল পড়শি মুশির্দাবাদে।

মিড-ডে মিল দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ জেলা গুলিতে এই নির্দেশিকা পাঠানো হলেও অধিকাংশ জেলাই সে ব্যাপারে বেশ পিছিয়ে ছিল। রাজ্যের মিডডে মিল-এর প্রকল্প আধিকারিক তপন অধিকারী বলছেন, “বেশ কিছু জেলা এখনও থালা-গেলাস কিনে উঠতে পারেনি। অর্থ দফতর তাই টাকা ফিরিয়ে নেওয়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে।”

নির্দিষ্ট মাপ ও ওজনের থালা-গেলাস কিনতে ছাত্র পিছু সরকারি বরাদ্দ ৬৫ টাকা। রাজ্যে এক কোটি ২২ লক্ষ ৪৫ হাজার পড়ুয়ার জন্য বরাদ্দের অঙ্ক ৭০ কোটি ৫ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকা। নদিয়ায় পড়ুয়ার সংখ্যা ৬ লক্ষ ৯৩ হাজার সেখানে থালা-বাটি কেনার জন্য দেওয়া হয়েছে ৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা, মুর্শিদাবাদে ১১ লক্ষ পড়ুয়ার জন্য দেওয়া হয়েছে ৭ কোটি ১৬লক্ষ টাকা।

গত বছরই মুর্শিদাবাদ জেলায় পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলেও পড়শি নদিয়া ব্যর্থ। মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক উল্গানাথন বলেন, “আমাদের জেলায় প্রায় সব স্কুল বাসন কিনছে।” কিন্তু এখনও নদিয়া জেলা কেন পড়ুয়াদের হাতে সরকারি থালা গেলাস তুলে দিতে পারল না?

এই প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসনের দাবি, এই থালা-গেলাস কেনার জন্য তিন বার ই-টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। প্রথম দু’বার তিনটের কম সংস্থা অংশ গ্রহণ করায় সেই টেন্ডার পক্রিয়া বাতিল হয়ে যায়। চলতি মাসে আবার নতুন করে টেন্ডার ডাকা হয়েছে। সেই মতো একটি সংস্থাকে বরাতও দেওয়া হয়েছে। নদিয়ার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই চেষ্টা করে গিয়েছি। কিন্তু একাধিক বার সেই টেন্ডার ‘ম্যাচিওর’ না করার কারণে দেরি হয়ে গেল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন