Dengue

থেকেও নেই রক্ত ভাঙার যন্ত্র, হয়রানি

প্লেটলেটের এই আকালের দিনে ভূতুড়ে বাড়ির মতো পড়ে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের ‘ব্লাড কম্পোনেন্ট সেপারেশন ইউনিট’টি। প্রায় একই হাল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে পরিকাঠামো তৈরি হয়ে পড়ে থাকলেও, রক্তের উপাদান পৃথকীকরণ ইউনিট এখনও চালু করা যায়নি।

Advertisement

শুভাশিস সৈয়দ ও সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৭ ০১:২৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

কয়েক বছর আগেই তৈরি হয়ে পড়ে আছে বাড়ি। হাজির লক্ষ লক্ষ টাকার যন্ত্রপাতিও। নিয়োগ করা হয়েছে টেকনিশিয়ানও। কিন্তু হলে কী হয়, মূল ইউনিটটিই যে এখনও চালু হয়নি।

Advertisement

প্লেটলেটের এই আকালের দিনে ভূতুড়ে বাড়ির মতো পড়ে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের ‘ব্লাড কম্পোনেন্ট সেপারেশন ইউনিট’টি। প্রায় একই হাল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে পরিকাঠামো তৈরি হয়ে পড়ে থাকলেও, রক্তের উপাদান পৃথকীকরণ ইউনিট এখনও চালু করা যায়নি। কেন যায়নি, তারও সদুত্তর মেলেনি কর্তৃপক্ষের কাছে।

শুধুমাত্র প্লেটলেট কমছে বলে প্রতিদিন রোগীদের পাঠাতে হচ্ছে কলকাতার হাসপাতালে। তবে এই ইউনিট দু’টি চালু হলে জেলাতেই ডেঙ্গির মোকাবিলা করা অনেক সহজ হত বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। যদিও নদিয়ার কল্যাণীর জেএনএম মেডিক্যাল কলেজে মাস দু’য়েক আগে চালু হয়েছে রক্তের পৃথকীকরণ ইউনিট। তার ফলে নদিয়া এবং উত্তর ২৪ পরগনার প্রচুর জ্বরের রোগীকে এই হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে।

Advertisement

নদিয়ায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত রোগী এরই মধ্যে দু’হাজার ছাড়িয়েছে। হাসপাতাল উপচে পড়ছে জ্বরের রোগীতে। প্লেটলেট কমলেই রোগীকে কলকাতা বা কল্যাণীর হাসপাতালে রেফার করতে হচ্ছে। অথচ শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের উপরে নির্ভর করে আছে তেহট্ট, কৃষ্ণনগর সদর ও রানাঘাট মহকুমার একটি বড় এলাকার বাসিন্দারা। চিকিৎসকরা প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও প্রতিদিন নতুন নতুন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলছে। রক্তের উপাদান এখানেই পৃথক করার ব্যবস্থা থাকলে প্লেটলেট দেওয়াটা অনেক সহজ হত।

কিন্তু কেন এখনও চালু করা গেল না এই ইউনিট? জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলেন, “আমাদের পরিকাঠামো পুরোপুরি তৈরি। রাজ্য ও কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা এসে পরিদর্শন করে গিয়েছেন। এখন শুধু লাইসেন্স পাওয়ার অপেক্ষা।”

শক্তিনগর হাসপাতালের মতো হাল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জ্বরের রোগীর ভিড়ে হাসপাতালে ঠাঁই নাই রব। প্লেটলেটও কমছে দেদার। কিন্তু সেই রোগীদের কলকাতায় পাঠানো ছাড়া কোনও উপায় থাকছে না। কারণ এখানেও পরিকাঠামো গড়ে চালু করা যায়নি ‘ব্লাড কম্পোনেন্ট সেপারেশন ইউনিট’। তার ফল ভুগতে হচ্ছে জ্বরের রোগীদের। জেলার নানা হাসপাতাল থেকে যেমন এলাইজা পদ্ধতিতে রক্ত পরীক্ষার পরে ডেঙ্গি রোগীদের চিহ্নিত করার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এই হাসপাতালে প্রতি দিন জ্বর নিয়ে গড়ে প্রায় ৬০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লাড কম্পোনেন্ট সেপারেশন ইউনিট তৈরি করতে হলে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল অথরিটির কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। ওই দুই সংস্থার সদস্যরা সম্প্রতি ইউনিটটি দেখে গিয়েছেন। সব দিক খতিয়ে দেখে তারা জেলা ব্লাড ব্যাঙ্কের আধুনিকিকরণ ও পরিকাঠামো উন্নয়নের পরামর্শ দিয়েছেন। কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরে তাঁরা সরজমিনে তদন্ত করে লাইসেন্স দেবেন। বর্তমানে পিজি হাসপাতালের সুপার ও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘আমি সুপার থাকার সময়েই ব্লাড কম্পোনেন্ট সেপারেশন ইউনিট তৈরির প্রস্তাব স্বাস্থ্যভবনে পাঠানো হয়। ওই ইউনিট তৈরি হলে হয়রানি ঠেকানো যাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement